| শুক্রবার, ০৩ জানুয়ারি ২০২০ | প্রিন্ট
সম্প্রতি ভারত জুড়ে জাতীয় নাগরিক তালিকা (এনআরসি) ঘোষণা ও সদ্য সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের (সিএএ) প্রেক্ষাপটে যখন উত্তাল গোটা দেশ। তখনই আসাম রাজ্যের গোয়ালপাড়া জেলার নির্মিত হচ্ছে ভারতের সর্ববৃহৎ আটককেন্দ্র। এই আটককেন্দ্রকে ঘিরে মুসলিমদের মধ্যে তীব্র আতঙ্কের জন্ম দিয়েছে। কেননা আসামের এনআরসি থেকে বাদ পড়াদের সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ মুসলিম। সিএএ-তেও উপেক্ষিত তাদের প্রশ্ন।
গত বছর আসামে প্রকাশ হওয়া জাতীয় নাগরিক তালিকায় (এনআরসি) অন্তর্ভুক্ত হতে পারেননি আলীর বোন জামাই। ওই তালিকা থেকে বাদ পড়েছে ১৯ লাখ বাসিন্দা। আপাতত ‘অবৈধ অভিবাসী’ হয়ে পড়া এসব বাসিন্দাদের গন্তব্য হবে গোয়লপাড়ার মতো আটককেন্দ্রগুলো। নয়তো তাদের প্রত্যর্পণ করা হবে।
আসামের নির্মাণাধীন আটককেন্দ্রে কাজ করছেন রাজ্যের ২৫ বছর বয়সী ইলেক্ট্রিশিয়ান আলী। কাজের ফাঁকে সেখানকার হাসপাতাল ব্লকের সামনে বিশ্রাম নিতে বসে তার মাথায় ঘুরছে অন্য চিন্তা। আজ আমি এখানে কাজ করছি। কাল হয়তো এখানেই বন্দি হবে আমার বোন জামাই। বোনের পরিবারটা শেষ হয়ে যাবে, বলেন তিনি।
হাসপাতাল ছাড়াও সেন্টারটিতে থাকবে খাবার জায়গা, স্কুল, বিনোদন কেন্দ্র এবং পুরুষ ও নারী বন্দিদের জন্য আলাদা থাকার জায়গা। এটি নির্মাণকাজ তদারকির দায়িত্ব রয়েছেন আসাম পুলিশের আবাসন বোর্ডের প্রকৌশলী রবীন্দ্র দাস।
তিনি জানান, ছয় ফুট উঁচু লাল রঙের দেওয়াল দিয়ে আলাদা করা পৃথক জায়গায় থাকবে নারী ও পুরুষ বন্দিরা। পুরো কম্পাউন্ডটি দুটি দেওয়াল দিয়ে ঘেরা থাকবে। একটি ২০ ফুট উঁচু আর অপরটি ছয় ফুট। নিরাপত্তা ব্যবস্থা হিসেবে ছয়টি টাওয়ার থেকে সেন্টারটি সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করা হবে। তাতে সহায়তা দেবে একশো মিটার উঁচু বিম লাইট।
নির্মাণস্থলের কর্মকর্তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী সেন্টারটি নির্মাণে গত বছরের জুনে বরাদ্দ দেয় ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ডিসেম্বরে কাজ শেষ হয়ে যাওয়ার কথা থাকলেও চলতি বছরের এপ্রিল পর্যন্ত সময়সীমা বাড়ানো হয়েছে। রবীন্দ্র দাস বলেন, এটা কেন্দ্রীয় সরকারের প্রকল্প। এপ্রিলের মধ্যে আমাদরে পুরো কাজ শেষ করতে হবে।
বিজেপির মুখপাত্র সামবিত পত্র আল জাজিরাকে বলেছেন, আটককেন্দ্র স্থাপন আর এনআরসি’র মধ্যে কোনও সম্পর্ক নেই। তিনি বলেন, মুসলমানদের সঙ্গে এটাকে মেলাবেন না। আটককেন্দ্র অবৈধভাবে ভারতে থাকা বিদেশিদের জন্য। তবে তার কথায় আশ্বাস্ত নন জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের শিক্ষক তানভির ফজল। তিনি বলেন, খুব সহজেই বোঝা যাচ্ছে যে, অমুসলিমেরা যদি এনআরসি থেকে বাদ পড়ে তাহলে সিএএ তাদের রক্ষা করবে। ফলে আটককেন্দ্রে যাওয়ার বাকি থাকবে শুধুমাত্র মুসলমানেরা।
Posted ১৪:৪৭ | শুক্রবার, ০৩ জানুয়ারি ২০২০
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | Athar Hossain