শুক্রবার ৩রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২০শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ভারতের সঙ্গে বিরোধের মধ্যে প্রতিরক্ষা চুক্তি করল চীন-মালদ্বীপ

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   মঙ্গলবার, ০৫ মার্চ ২০২৪ | প্রিন্ট

ভারতের সঙ্গে বিরোধের মধ্যে প্রতিরক্ষা চুক্তি করল চীন-মালদ্বীপ

সাম্প্রতিক মাসগুলোতে ভারতের সঙ্গে মালদ্বীপের দ্বিপাক্ষিক কূটনৈতিক সম্পর্কের টানাপোড়েন বেশ প্রকট আকার ধারণ করেছে। মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুইজ্জু ভারত-বিরোধী অবস্থানে অটল রয়েছেন এবং এতে করে মালদ্বীপ ছাড়তে হচ্ছে ভারতীয় সেনাদের।

এমন অবস্থায় চীনের সঙ্গে সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ করছে মালদ্বীপ। এমনকি এশীয় পরাশক্তি এই দেশটির সঙ্গে একটি প্রতিরক্ষা সহযোগিতা চুক্তিও স্বাক্ষর করেছে মালে। এতে করে চীন থেকে বিনামূল্যে সামরিক সহায়তা পাবে মালদ্বীপ।

ভারতীয় বার্তাসংস্থা পিটিআইয়ের বরাত দিয়ে সোমবার (৪ মার্চ) রাতে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘শক্তিশালী’ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক গড়ে তুলতে বিনামূল্যে সামরিক সহায়তা প্রদানের জন্য চীন সোমবার মালদ্বীপের সাথে একটি প্রতিরক্ষা সহযোগিতা চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুইজ্জু তার দেশ থেকে ভারতীয় সেনাদের প্রথম দলকে প্রত্যাহারের সময়সীমা নির্ধারণ করার কয়েক সপ্তাহ পরে এই চুক্তি স্বাক্ষর করা হলো।

এনডিটিভি বলছে, মালদ্বীপের প্রতিরক্ষামন্ত্রী মোহাম্মদ ঘাসান মাউমুন দুই দেশের মধ্যে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা বাড়ানোর বিষয়ে আলোচনা করতে চীনের আন্তর্জাতিক সামরিক সহযোগিতা অফিসের ডেপুটি ডিরেক্টর মেজর জেনারেল ঝাং বাওকুনের সাথে দেখা করেন।

মালদ্বীপের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় তার এক্স হ্যান্ডেলে জানিয়েছে, পরে মাউমুন এবং মেজর জেনারেল বাওকুন মালদ্বীপে চীনের সামরিক সহায়তা প্রদানের বিষয়ে একটি চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। এটি উভয় দেশের শক্তিশালী দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে আরও সামনে এগিয়ে নিয়ে যাবে।’

অবশ্য চীন ও মালদ্বীপের মধ্যে স্বাক্ষরিত প্রতিরক্ষা সহযোগিতা চুক্তির বিশদ বিবরণ দেওয়া হয়নি।

এদিকে চীন মালদ্বীপকে ১২টি পরিবেশ-বান্ধব অ্যাম্বুলেন্স উপহার দিয়েছে বলে এডিশন.এমভি নিউজ পোর্টাল সোমবার জানিয়েছে। রোববার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে মালদ্বীপে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ওয়াং লিক্সিন মালদ্বীপকে অ্যাম্বুলেন্স উপহার দেওয়ার চিঠিটি উপস্থাপন করেন।

এর আগে মালদ্বীপ থেকে ভারতীয় সৈন্যদের প্রত্যাহারে আগামী ১৫ মার্চ পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছিলেন ভারত মহাসাগরের এই দ্বীপ রাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুইজ্জু। গত মাসের শুরুতে রাজধানী মালেতে ভারতের কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠকে সৈন্য প্রত্যাহারের এই সময়সীমা বেঁধে দেন তিনি।

মূলত প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর চীনে পাঁচদিনের প্রথম রাষ্ট্রীয় সফর শেষে দেশে ফেরার পরপরই ভারতীয় সৈন্যদের প্রত্যাহারে ওই আল্টিমেটাম দেন তিনি। পরে এই আল্টিমেটাম অবশ্য মে মাসের ১০ তারিখ পর্যন্ত বাড়ানো হয়।

মূলত ঐতিহ্যগতভাবে মালদ্বীপের সাথে দৃঢ় সম্পর্ক রয়েছে ভারতের। মালদ্বীপের মোট জনসংখ্যা ৫ লাখের কিছু বেশি; যারা চাল, শাকসবজি, ওষুধ এবং মানবিক সহায়তাসহ নিত্য-প্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রীর জন্য নয়াদিল্লির ওপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল।

১৯৯৮ সালে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট আবদুল গাইয়ুমের বিরুদ্ধে মালদ্বীপে অভ্যুত্থান চেষ্টা হয়। এ সময় অভ্যুত্থানকারীদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সহায়তা করার জন্য সেনা পাঠায় ভারত। পরে কিছু দিনের মধ্যে সেই সেনাদের প্রত্যাহার করে নেয় নয়াদিল্লি।

কিন্তু ভারতের ওপর নির্ভরশীলতা এবং মালদ্বীপের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে নয়াদিল্লির হস্তক্ষেপ দেশটিতে উদ্বেগ তৈরি করে। গত বছরের নভেম্বরে অনুষ্ঠিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয় পান মোহাম্মদ মুইজ্জু। তার নির্বাচনী প্রচারণার অন্যতম অঙ্গীকার ছিল ‘‘ভারত হটাও’’। যদিও তার আগের বেশিরভাগ প্রেসিডেন্টই ছিলেন ভারতপন্থি।

মোহাম্মদ মুইজ্জু নয়াদিল্লির ক্রমবর্ধমান প্রভাবকে দেশের সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি বলে অভিহিত করেছেন এবং মালদ্বীপের মাটি থেকে ভারতীয় সৈন্যদের তাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

আর এর মধ্যেই চীনের সঙ্গে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা চুক্তি স্বাক্ষর করল মালদ্বীপ।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ০৬:১৩ | মঙ্গলবার, ০৫ মার্চ ২০২৪

Swadhindesh -স্বাধীনদেশ |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement
Advisory Editor
Professor Abdul Quadir Saleh
Editor
Advocate Md Obaydul Kabir
যোগাযোগ

Bangladesh : Moghbazar, Ramna, Dhaka -1217

ফোন : Europe Office: 560 Coventry Road, Small Heath, Birmingham, B10 0UN,

E-mail: news@swadhindesh.com, swadhindesh24@gmail.com