| বুধবার, ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ | প্রিন্ট
ন্যায়বিচার পাবেন না- এই আশঙ্কা থেকে দুর্নীতির দুই মামলায় বিশেষ আদালতের বিচারক আবু আহমেদ জমাদ্দারের প্রতি অনাস্থা জানিয়ে উচ্চ আদালতে আবেদন করেছেন বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। তার এই আবেদনের ওপর আগামী সোমবার শুনানি হবে।
খালেদা জিয়ার আইনবীজী মাহবুব উদ্দীন খোকন এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, সকালে বিচারপতি রুহুল কুদ্দুস ও ভীষ্মদেবের হাইকোর্ট বেঞ্চে এই আবেদন করা হয়। খালেদা জিয়ার আইনজীবী জাকির হোসেন ভুঁইয়া আবেদনটি জমা দেন।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলা বিচারের জন্য স্থাপিত বিশেষ আদালতের বিচারক বাসুদেব রায়ের প্রতিও এর আগে অনাস্থা জানিয়েছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসন। ২০১৪ সালের মার্চে বিচার শুরুর পর তার প্রতি অনাস্থা জানান খালেদা জিয়া। এরপর পরে ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে বাসুদেবকে পটুয়াখালী বদলি করে আবু আহমেদ জমাদ্দারকে বিচারক হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়।
গত ২ ফেব্রুয়ারি বকশীবাজারের আলিয়া মাদরাসা মাঠে স্থাপিত তৃতীয় বিশেষ জজ আদালতে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়ার আত্মপক্ষের বক্তব্য দেয়ার কথা ছিল। সেদিনই মামলাটির পুনঃতদন্ত চেয়ে গত ৩০ জানুয়ারি করা আবেদনের কথা বলে বক্তব্য দিতে চাননি খালেদা জিয়া। কিন্তু বিএনপি নেত্রীর অবস্থানকে আমলে না নিয়ে শুনানি চালিয়ে যান বিচারক। এরপর বিচারকের প্রতি অনাস্থা জানান খালেদা জিয়া। তার এই অনাস্থাকেও অবশ্য আমলে নেননি বিচারক।
সেই দিনের শুনানিতে এই মামলায় পুনরায় শুনানির দিন ঠিক করা হয় ৯ ফেব্রুয়ারি। শুনানির আগের দিন হাইকোর্টে আবেদন নিয়ে গেলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের আইনজীবীরা।
জাকির হোসেন ভুঁইয়া বলেন, ‘জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের টাকা আত্মসাতের অভিযোগে যে মামলা চলছে তাতে বলা হয়েছে, ট্রাস্টের নামে দুই কোটি ১০ লাখ টাকা এসেছে সৌদি আরব থেকে। তবে আমাদের দাবি হচ্ছে এই টাকাটা এসেছে কুয়েত থেকে। তিনি দিয়েছিলেন মোট চার কোটি ২৫ লাখ টাকা। এর একটি অংশ বাগেরহাটে পাঠানো হয়, আর বাকি টাকা আসে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টে। টাকাটা কোত্থেকে এসেছে-সেটি তদন্তের জন্য বিএনপি চেয়ারপারসন বিচারক আবু আহমেদ জমাদ্দারের কাছে আবেদন করেছিলেন। কিন্তু তিনি সে আবেদন খারিজ করে সাফাই সাক্ষ নেয়ার আদেশ দেন। এ জন্য খালেদা জিয়া মনে করছেন এই আদালতে তিনি ন্যয়বিচার পাবেন না। এ কারণেই আমরা এই আবেদন করেছি।’
দুই কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৪৩ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ এনে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় মামলা করে দুদক। ২০১০ সালের ৫ আগস্ট খালেদা জিয়া ও তার ছেলে তারেক রহমানসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন দুদকের উপ-পরিচালক হারুন আর রশীদ। ২০১৪ সালের ১৯ মার্চ খালেদা জিয়াসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক বাসুদেব রায়।
এই মামলাটি নিয়ে খালেদা জিয়ারে আইনজীবীরা অসংখ্যবার উচ্চ আদালতে গিয়েছেন। তবে প্রতিবারই তাদের আবেদন নাকচ হয়েছে। দুদকের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল গণমাধ্যমকে বলেছেন, মামলাটির কার্যক্রম বাধাগ্রস্থ করতে বিএনপি নেত্রী বারবার উচ্চ আদালতে ছুটে যাচ্ছেন।
Posted ০৫:৫৩ | বুধবার, ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৭
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | Athar Hossain