রবিবার ৫ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২২শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

প্লাস্টিকের পাত্রে খাবার খেলে কী হয়?

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   মঙ্গলবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৩ | প্রিন্ট

প্লাস্টিকের পাত্রে খাবার খেলে কী হয়?

প্লাস্টিক আমাদের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছে! যদিও এটি মোটেও ভালো কিছু নয়। কিন্তু উপায় কী! যা-ই কিনতে যান না কেন, সবশেষে একটি পলিথিনে মুড়িয়ে তবেই তা আপনার হাতে তুলে দেওয়া হবে। আবার বাড়িতেও মসলা থেকে শুরু করে রান্না করা খাবার, সবকিছু সংরক্ষণে আমাদের অগ্রাধিকার থাকে প্লাস্টিকের বয়াম বা বক্সের প্রতিই। প্লাস্টিকের ব্যবহারের ক্ষতিকর প্রভাব বেড়েই চলেছে। গবেষণায় বলা হয়েছে, একটি শিশু তার জন্মের পরের লগ্ন থেকেই পুরুষত্বহীন হওয়ার দিকে ঝুঁকছে প্লাস্টিকের অতি ব্যবহারের কারণে। সম্প্রতি ব্রিটেনের পোর্টসমাউথ ইউনিভার্সিটির করা গবেষণায় খাবারে মাইক্রোপ্লাস্টিক শনাক্ত করার জন্য দুই ধরনের খাবার সংগ্রহ করা হয়। এর মধ্যে একটি ছিল প্লাস্টিকে মোড়া এবং অপরটিতে কোনো প্লাস্টিকের আবরণ ছিল না।

প্লাস্টিকে প্যাক খাবারে প্রায় ২.৩০ লাখ মাইক্রোপ্লাস্টিক পাওয়া গিয়েছে। অপরদিকে প্লাস্টিকের আবরণ ছাড়া খাবারে ৫০,০০০ মাইক্রোপ্লাস্টিক কণা ছিল। গবেষকরা দাবি করছেন, এই পরিমাণ মাইক্রোপ্লাস্টিক শুধু প্যাক করা খাবার থেকেই পাওয়া গেলে প্রত্যেক মানুষের পেটে প্রতিদিন ১০ গ্রাম মাইক্রোপ্লাস্টিক প্রবেশ করছে। ইন্ডিয়ান কাউন্সিল ফর মেডিক্যাল রিসার্চ (ICMR) এবং ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ নিউট্রিশন (NIN) এর গবেষণা অনুসারে, প্লাস্টিকের পাত্রে সঞ্চিত খাবার খাওয়ার পরে গর্ভবতী মহিলারা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকেন। কারণ এই প্লাস্টিকের বিষ তাদের শিশুর শরীরেও পৌঁছে যেতে পারে।

মাইক্রোপ্লাস্টিক কেন অসুস্থ করে তুলছে?

খাবার বা পানি রাখার জন্য আমরা যে প্লাস্টিকের পাত্র বা বোতল ব্যবহার করি, সেগুলো পলিকার্বোনেট প্লাস্টিক দিয়ে তৈরি হয়। এই প্লাস্টিককে নমনীয় করার জন্য তাতে যোগ করা হয় বিসফেনল এ বা বিপিএ। এটি একটি রাসায়নিক। দিল্লির আইসিএমআর এবং হায়দরাবাদের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ নিউট্রিশন (এনআইএন) এর গবেষকরা বলছেন, গর্ভাবস্থায় বিপিএ রাসায়নিকগুলো অনাগত শিশুর ফার্টিলিটি সিস্টেমের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

ইঁদুরের ওপর এই গবেষণা করা হয়। সেজন্য গর্ভবতী ইঁদুরদের দু’টি দলে ভাগ করা হয়েছিল। একটি গ্রুপ গর্ভাবস্থায় চার থেকে ২১ দিনের জন্য বিপিএ রাসায়নিকের সংস্পর্শে এসেছিল এবং অন্য গ্রুপকে এর থেকে দূরে রাখা হয়েছিল। ফ্যাটি অ্যাসিড বিপিএ-র কাছাকাছি বসবাসকারী ইঁদুরগুলিতে জমা হতে শুরু করে। এই ফ্যাটি অ্যাসিডকে শুক্রাণু বৃদ্ধির জন্য মেমব্রেন বা পর্দার চারপাশে ক্ষতি করতে দেখা গেছে। গবেষণাটি ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অব মলিকুলার সায়েন্সে প্রকাশিত হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, বিপিএ রাসায়নিক হরমোনকে প্রভাবিত করে এবং ক্যান্সার ও বন্ধ্যাত্বের কারণ হতে পারে। কিন্তু এখন প্লাস্টিক জন্মের আগেই শিশুর স্বাস্থ্যকে ভয়ানক ঝুঁকির দিকে ঠেলে দিচ্ছে।

এনআইএন-এর গবেষণা অনুসারে, প্রত্যেকের বিশেষ করে গর্ভবতী নারীদের প্লাস্টিকের পাত্র ব্যবহার করা এড়িয়ে চলা উচিত। এই ধরনের পাত্রে জায়গা অনেক বেশি থাকে ঠিকই, তবে সেই পাত্র মাইক্রোওয়েভে ঢুকিয়ে গরম করলে তখন প্লাস্টিক থেকে খাবারে বিপিএ রাসায়নিকের প্রবেশের ঝুঁকি বেড়ে যায়।

 

রান্নাঘরে দুই ধরনের প্লাস্টিক থাকে। এর মধ্যে একটি হলো ডিসপোজেবল পানির বোতল বা প্যাকেজিং প্লাস্টিক এবং অন্যটি প্লাস্টিকের পাত্র যার উপর ফুড গ্রেড বা বিপিএ উল্লেখ করা হয়। সংস্থাগুলো দাবি করে যে, বিপিএমুক্ত ফুডগ্রেড প্লাস্টিক শরীরের কোনো ক্ষতি করে না। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা এর সঙ্গে একদমই একমত নন।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ০৭:৪১ | মঙ্গলবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৩

Swadhindesh -স্বাধীনদেশ |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement
Advisory Editor
Professor Abdul Quadir Saleh
Editor
Advocate Md Obaydul Kabir
যোগাযোগ

Bangladesh : Moghbazar, Ramna, Dhaka -1217

ফোন : Europe Office: 560 Coventry Road, Small Heath, Birmingham, B10 0UN,

E-mail: news@swadhindesh.com, swadhindesh24@gmail.com