| রবিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২১ | প্রিন্ট
শাহরিয়ার মিল্টন, শেরপুর : ‘দেড় বছরের বেশি সময় বন্ধ থাকার আবারও খুলেছে শেরপুরের খান বাহাদুর ফজলুর রহমান জেলা সরকারি গণগ্রন্থাগার। করোনার
কারণে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকা পর গত ৫ অক্টোবর থেকে খুলে দেওয়া হয় গণগ্রন্থাগারটি। দেড় বছর পর খুলে দেওয়ায় গ্রন্থাগারটি যেন আবারও প্রাণ ফিরে পেয়েছে। বন্ধ থাকায় দীর্ঘদিন শেরপুরের এই গণগ্রন্থাগারে বই ও পত্রিকা পড়তে পারেননি সাধারণ মানুষ। বর্তমানে করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসায় কেন্দ্রীয় নির্দেশনা মোতাবেক আবারও সীমিত পরিসরে পাঠ শুরু হয়েছে।
গণগ্রন্থাগার সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে শেরপুরের প্রাচীন এই গণগ্রন্থাগারে বইয়ের সংখ্যা প্রায় ৪৩ হাজার। এখানে বিভিন্ন স্তরের একাডেমিক বই ছাড়াও গল্প, উপন্যাস, ইতিহাস, কবিতা, জীবন কাহিনি, ভ্রমণ কাহিনি, বিজ্ঞানভিত্তিক ও জ্ঞানমূলক নানা বইয়ের সমাহার রয়েছে। এখানে গ্রন্থাগার সেবা, রেফারেন্স সেবা, সম্প্রসারণ সেবা, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সেবা, প্রাতিষ্ঠানিক সেবা, শিশুদের গেম, উদ্ভাবনী গ্রুপের
সেবাসহ প্রায় ২১টি সেবা গ্রহণ করতে পারে সাধারণ মানুষ। এখানে প্রতিদিন দুই শতাধিক মানুষ পাঠ সেবাসহ নানা সেবা গ্রহণ করে থাকেন। তবে করোনার পর
প্রাথমিকভাবে পাঠ সেবা চালু হওয়ায় বিষয়টি সাধারণ পাঠকেরা পুরোপুরি অবগত না হওয়ায় ভিড় এখনো কম। তাছাড়া এখনো পুরোপুরি সকল বিভাগের সেবা চালু হয়নি।
জেলা সরকারি গণগ্রন্থাগারে বর্তমানে নিবন্ধিত সদস্য রয়েছেন ৭৩৬ জন। তারা নিয়মিত পাঠাগারের পাঠকক্ষে না বসলেও বাসায় বই নিয়ে পড়াশোনা করছেন। এ ছাড়া
২০১৯ সালে শেরপুর সরকারি গণগ্রন্থাগারের ভ্রাম্যমাণ লাইব্রেরি চালু করা হয়। যার বর্তমান নিবন্ধিত সদস্য রয়েছে ৮৪৪ জন।
শেরপুর সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী জুলফিকার হোসাইন নিয়মিত এ সরকারি পাঠাগারে আসতেন পত্রিকা পড়তে। দীর্ঘদিন পর আবারও গ্রন্থাগারটি খোলায় তিনি স্বস্তি প্রকাশ করে বলেন, বন্ধের সময় বিভিন্ন দোকানপাটে পত্রিকা পড়তে হতো। এখন এখানে আরাম করে পত্রিকা পড়া যাবে। স্থানীয় বেকার যুবক গোলাম মোস্তফা জানান, মাস্টার্স পাশ করে বিভিন্ন চাকরির লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য পড়াশোনা এবং নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেখার জন্য নিয়মিত পাঠাগারে যাই। কিন্তু করোনাকালে তা বন্ধ থাকায় অনেক সমস্যায় পড়েছি। কারণ এখানে
একসঙ্গে বেশ কয়েকটি পত্রিকা পড়া যায়। সেই সঙ্গে বিভিন্ন বইও পড়া যায়। এখন পাঠাগারটি খুলে দেওয়ায় আবারও ভালোভাবে প্রস্তুতি নিতে পারবেন বলে জানান
তিনি। আরেক শিক্ষার্থী উমর ফারুক জানান, চাকরিপ্রত্যাশীদের জন্য পৃথক একটি জায়গা করে দিলে আমরা আরও ভালোভাবে প্রস্তুতি নিতে পারতাম।
এ ব্যাপারে শেরপুর জেলা গণগ্রন্থাগারের গ্রন্থাগারিক মো. সাজ্জাদুল করিম বলেন, করোনা পরিস্থিতির আরও উন্নতি হলে গ্রন্থাগারের সকল সেবা দ্রুতই চালু হবে। তিনি বলেন, সরকার গ্রন্থাগারকে শুধু বই পড়ার মধ্যে সীমিত না
রেখে নানা ধরনের সেবা চালু করেছে। সেসব সেবা গ্রহণ করে বেকার যুবক থেকে শুরু করে শিক্ষকেরাও উপকৃত হচ্ছেন। তবে আমাদের লোকবল সংকটের কারণে একটু
সমস্যা হচ্ছে। তাই চাকরি প্রার্থীদের জন্য আলাদা কক্ষের ব্যবস্থা থাকলেও এই মুহূর্তে সেই কক্ষ ব্যবহার করার জন্য উন্মুক্ত করা যাচ্ছে না। তবে লোকবল সংকটের সমাধান হলে দ্রুতই সকল সেবা পাবেন শেরপুরবাসী।
Posted ১২:২৫ | রবিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২১
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | admin