| শুক্রবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮ | প্রিন্ট
এহসানুল হক মোজাদ্দেদী : আশরাফুল মাখলুকাত বা সৃষ্টির সেরা জীব মানুষ হিসেবে আমাদের প্রথম ও প্রধান কর্তব্য হলো আল্লাহর ইবাদত করা, তার সঙ্গে কাউকে শরিক না করা এবং প্রিয় নবী (সা.)কে ভালোবাসা ও আনুগত্য করা। তার পরপরই আমাদের করণীয় হলো বাবা-মায়ের প্রতি সুন্দর ব্যবহার করা, তাদের অনুগত থাকা, কোনোভাবেই তাদের মনে কষ্ট না দেওয়া। এ প্রসঙ্গে আল্লাহতায়ালা ইরশাদ করেন, তোমরা আল্লাহর ইবাদত কর, তার সঙ্গে শরিক কর না এবং পিতা-মাতার সঙ্গে সদ্ব্যবহার কর। (সুরা নিসা, আয়াত : ৩৬)। অন্য আয়াতে বলা হয়েছে, ‘আর আমি নির্দেশ দিয়েছি মানুষকে, তার পিতা-মাতার সঙ্গে ভালো ব্যবহার করার জন্য।’ (সুরা আহকাফ, আয়াত : ১৫)। আরো ইরশাদ হয়েছে, ‘আমি মানুষকে নির্দেশ দিয়েছি যে, তুমি আমার এবং তোমার পিতা-মাতার প্রতি কৃতজ্ঞ হও। অবশেষে আমার কাছেই তো ফিরে আসতে হবে।’ (সুরা লুকমান, আয়াত : ১৪)। আল্লাহর রসুল (সা.)-এর পবিত্র হাদিস শরিফেও পিতা-মাতার খেদমত করা এবং তাদের প্রতি গভীর আনুগত্য প্রকাশ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। হজরত আবু উমামা (রা.) থেকে বর্ণিত, রসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, পিতা-মাতা হলো তোমার জান্নাত এবং জাহান্নাম। অর্থাৎ তুমি ইচ্ছা করলে তাদের খেদমত করে উত্তম আচরণের মাধ্যমে জান্নাত অর্জন করতে পার; আবার ইচ্ছা করলে তাদের অবাধ্য হয়ে জাহান্নামে প্রবেশ করতে পার।’ (ইবনে মাজা)। মাতা-পিতার খেদমত না করার কারণে যারা জান্নাত থেকে বঞ্চিত হলো, জাহান্নামের বেড়ি গলে পড়ল, প্রিয়নবী (সা.) তাদের লানত করেছেন। হাদিস শরিফে এসেছে, ‘একদা জুমার দিনে রসুলুল্লাহ (সা.) মিম্বরের প্রথম ধাপে পা রাখলেন এবং বললেন, আমিন! অতঃপর দ্বিতীয় ধাপে পা রাখলেন এবং বললেন, আমিন! তারপর তৃতীয় ধাপে পা রাখলেন এবং বললেন, আমিন! এরপর খুতবা দিলেন ও নামাজ আদায় করলেন। নামাজ শেষে সাহাবায়ে কেরাম প্রশ্ন করলেন, ইয়া রসুলুল্লাহ (সা.)! আজ যা দেখলাম তা ইতিপূর্বে কখনো দেখিনি। আপনি একেক ধাপে পা রেখে, আমিন! আমিন! আমিন! বললেন; এর রহস্য কী? রসুল (সা.) বললেন, হজরত জিবরাইল (আ.) আমাকে বলেছেন, নবী (সা.)! আমি তিনটি দোয়া করব আপনি আমিন বলুন। তাই আমি তার দোয়ার উত্তরে আমিন বলেছি। এ তিনটি দোয়ার মধ্যে একটি হলো, যে পিতা-মাতা একজনকে বা উভয়কে পেল, কিন্তু জাহান্নাম থেকে মুক্তি নিয়ে জান্নাত নিশ্চিত করতে পারল না তার জন্য ধ্বংস! (মুসলিম শরিফ)।
পিতা-মাতার অবাধ্যতার জন্য যেমন রয়েছে অভিসম্পাত, তেমনি তাদের আনুগত্যের জন্য রয়েছে পুরস্কারের ঘোষণা। হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, যখন কোনো অনুগত সন্তান স্বীয় পিতা-মাতার প্রতি অনুগ্রহের নজরে দৃষ্টিপাত করে, আল্লাহতায়ালা তার প্রতিটি দৃষ্টির বিনিময়ে একটি করে কবুল হজের সওয়াব দান করেন। (বায়হাকি শরিফ)। পিতা-মাতার জীবদ্দশায় যেমনিভাবে তাদের সেবা করা জরুরি, তেমনিভাবে তাদের ইন্তেকালের পরও তাদের জন্য দোয়া করা দরকার।
Posted ১৫:৩৩ | শুক্রবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | Athar Hossain