সোমবার ৬ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৩শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

 নওগাঁয় শিক্ষকের করা অভিযোগ সত্য প্রমাণিত হওয়ায় অধ্যক্ষের বেতন বন্ধ

এম এম হারুন আল রশীদ হীরা   |   বুধবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৪ | প্রিন্ট

 নওগাঁয় শিক্ষকের করা অভিযোগ সত্য প্রমাণিত হওয়ায় অধ্যক্ষের বেতন বন্ধ

নওগাঁ প্রতিনিধি : নওগাঁর নিয়ামতপুরের বালাতৈড় সিদ্দিক হোসেন ডিগ্রি কলেজের শিক্ষক এরশাদ আলীর করা অভিযোগ সত্য প্রমাণিত হওয়ায় ওই কলেজের অধ্যক্ষ ড. আমজাদ হোসেনের বেতন বন্ধ করেছে শিক্ষা অধিদপ্তর। এর আগে ২০২২ সালের ৩ মার্চ অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে রেজুলেশন টেম্পারিং করে ৫ জনকে ভূয়া নিয়োগ দেওয়া ও তার বেতন-ভাতা চালুর জন্য এ অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। এ ঘটনায় কয়েক দফা তদন্ত শেষে অভিযোগ সত্য প্রমাণিত হওয়ায় গত ১ এপ্রিল সহকারী পরিচালক তপন কুমার দাস স্বাক্ষরিত চিঠিতে তার বেতন-ভাতা সাময়িকভাবে বন্ধের নির্দেশ দেন।

চিঠির সূত্রে জানা যায়, বালাতৈড় সিদ্দিক হোসেন ডিগ্রি কলেজের অর্থনীতি বিষয়ের প্রভাষক মো. এরশাদ আলী দুইটি ভিন্ন বিষয় উল্লেখ পূর্বক বেতন সংক্রান্ত সৃষ্ট জটিলতা নিরসন করে এমপিওভুক্তির জন্য আবেদন করেন। সে মোতাবেক সরেজমিন তদন্তপূর্বক সুস্পষ্ট মতামত মাউশিতে দাখিল করা হয়েছে। তদন্তের আলোকে তাদের ব্যাখ্যা, জবাব এবং মতামতের আলোকে বালাতৈড় সিদ্দিক হোসেন ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক মো. এরশাদ আলীর অভিযোগের বিষয়ে অধিকতর তথ্যের জন্য কলেজ অধ্যক্ষ এবং এরশাদ আলীসহ সংশ্লিষ্টদেরকে নিয়ে মাউশি অধিদপ্তরের শুনানী অনুষ্ঠিত হয়।
প্রতিবেদনে আরও জানা যায়, অর্থনীতি বিষয়ের শিক্ষক মো. এরশাদ আলীর নিয়োগ জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা-২০১৮ অনুসারে প্যাটার্ন বহির্ভূত। তিনি ডিগ্রি (পাস) স্তরে ১টি শূন্য পদে সমন্বয়ের জন্য আবেদন করেছেন। কিন্তু তাকে কলেজ কর্তৃপক্ষ ২য় পদে নিয়োগ দেয়া ও যোগদান করানো যথাযথ হয়নি এবং এরশাদ আলীর আবেদনের সময় কাম্য শিক্ষার্থী থাকলেও বর্তমানে স্নাতক (পাস) স্তরে ২০১৮-২০১৯ শিক্ষা বর্ষ থেকে ২০২১-২০২২ শিক্ষা বর্ষ পর্যন্ত জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা- ২০২১ এর ধারা ৬.৩ (খ) (V) মোতাবেক মো. এরশাদ আলীর এমপিও ভুক্তির জন্য ন্যূনতম শিক্ষার্থী সংখ্যা (৬০ জন) এর শর্ত পূরণ ছিল না বলে বিষয়টি প্রমাণিত হয়েছে। এবং কলেজের অধ্যক্ষ ড. মো. আমজাদ হোসেন মো. এরশাদ আলীর এমপিওভুক্তি সংক্রান্ত আবেদনে যে কাগজপত্র ও গভর্নিংবডির রেজুলেশন টেম্পারিং করা ও অন্যান্য বিধি মোতাবেক কার্যক্রমে ব্যত্যয় করার বিষয়টি প্রমাণিত।
তিনি মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরে শুনানীকালে কলেজ গভর্নিংবডির ২০১৫ সালের আগষ্ট মাস থেকে চলমান যে রেজুলেশন রেজিস্ট্রার উপস্থাপন করেছেন তাতে লেখা টেম্পারিং, পৃষ্ঠা পরিবর্তনসহ অন্যান্য অনিয়ম হয়েছে বলে প্রতীয়মান হয়েছে এবং গভর্নিংবডির সদস্য সচিব থাকায় তিনি উক্ত অনিয়মের সাথে জড়িত বলে প্রমাণিত। এরপর অধ্যক্ষ, গভর্ণিং বডির সভাপতি এবং মো. এরশাদ আলীর ব্যাখ্যা ও মতামত চাওয়া হয়। তারা ব্যাখ্যা ও মতামত দাখিল করেন। কিন্তু তাদের প্রদত্ত মতামত ও ব্যাখ্যা সন্তোষজনক না হওয়ায় এবং মাউশি অধিদপ্তরের শুনানী অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা-২০২১ এই ধারা ১৭.৯, ১৮.১ (গ এবং ৬) অনুযায়ী অধ্যক্ষ ড. মোঃ আমজাদ হোসেনের এমপিও সাময়িকভাবে স্টপ প্রেমেন্ট করার জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করেন।
এবিষয়ে জানতে চাইলে ভুক্তভোগী শিক্ষক এরশাদ আলী বলেন, মাউসির চিঠি আমি গতকাল পেয়েছি। সেখানে আমার করা অভিযোগ সত্য প্রমাণিত হওয়ায় কর্তৃপক্ষ অধ্যক্ষের বেতন বন্ধ করে দিয়েছে। কিন্তু অধ্যক্ষ নিজের অপরাধ লুকানোর জন্য আমার অর্থনীতি বিষয়ের ২০১৮-২০১৯ শিক্ষা বর্ষ থেকে ২০২১-২০২২ শিক্ষা বর্ষ পর্যন্ত যে শিক্ষার্থী কম দেখিয়েছেন তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ষড়যন্ত্র। কলেজ সভাপতি ও অধ্যক্ষের স্বাক্ষরিত অগ্রায়ন পত্রে কাম্য শিক্ষার্থীর পূর্ণ তথ্য প্রমাণ রয়েছে এবং আমার শিক্ষার্থী ও  আমার সহকর্মী শিক্ষকগণ পূর্ণ শিক্ষার্থীর বিষয়ে অবগত আছেন। অধ্যক্ষের দেওয়া এমন মিথ্যা তথ্য মাউশি অধিদপ্তরকে আমলে না নেওয়ার জন্য আমি বিনীত অনুরোধ করছি।
এবিষয়ে জানতে অধ্যক্ষ ড. মো. আমজাদ হোসেনের মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলেও সেটি বন্ধ থাকায় তার কোন বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
Facebook Comments Box
advertisement

Posted ১৭:৫৬ | বুধবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৪

Swadhindesh -স্বাধীনদেশ |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement
Advisory Editor
Professor Abdul Quadir Saleh
Editor
Advocate Md Obaydul Kabir
যোগাযোগ

Bangladesh : Moghbazar, Ramna, Dhaka -1217

ফোন : Europe Office: 560 Coventry Road, Small Heath, Birmingham, B10 0UN,

E-mail: news@swadhindesh.com, swadhindesh24@gmail.com