নিজস্ব প্রতিবেদক | বুধবার, ২৪ মে ২০২৩ | প্রিন্ট
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে কাল বৃহস্পতিবার (২৫মে) গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন বড় পরীক্ষা দিতে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন ইসি।এ সিটি নির্বাচনে প্রতিটি পদক্ষেপেই সুতীক্ষ্ণ নজর রাখবে ইসি।এছাড়া ভোটের দিনও সরাসরি সিসি ক্যামেরায় এ নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করবে ভোট আয়োজনকারী সাংবিধানিক এ প্রতিষ্ঠান।
নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ আহসান হাবিব খান (অবঃ) বলেছেন,প্রতিটি নির্বাচনই আমাদের কাছে সমান গুরুত্বপূর্ণ। গাজীপুর সিটি নির্বাচনও এর ব্যতিক্রম নয়, রাজশাহী খুলনা সিলেট ও বরিশাল সিটি নির্বাচনের প্রতিটি পদক্ষেপেই সুতীক্ষ্ণ নজর রাখছি আমরা।বৃহস্পতিবারের গাজীপুর সিটি নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে সব ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। ভোটের দিনও আমরা সরাসরি সিসি ক্যামেরায় এ নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করবো।
সূত্র জানায়, ভোট উপলক্ষে সব ধরণের প্রস্তুতি শেষ করছে ইসি। কোনো অনিয়ম দেখলে আইনে যেভাবে অ্যাকশন নেওয়ার কথা সেভাবেই নেওয়া হবে। গাইবান্ধায় তো কেবল নির্বাচন বন্ধ করা হয়েছে। এখানে তার চাইতেও কঠিন অ্যাকশন হবে বলে ইসি জানিয়েছে। ভোটের দিন সব কন্দ্রে লাইভ ক্যামেরা দেখে পর্যবেক্ষন করবে কমিশন। কোথাও কোন অনিয়ম হলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিবে।
এর আগে নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর বলেছেন, নির্বাচনে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করলে সে দলের বা যেই হোক না কেন তাকে সাথে সাথে আইনের আওতায় আনার জন্য বলা হয়েছে। অনিয়মের মাত্রার ওপর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা কী নেওয়া হবে, তা নির্ভর করবে। ব্যক্তির সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই, অনিয়মের মাত্রার ওপর শাস্তি নির্ভর করবে।
ভোটে গুরুত্বপৃর্ণ কেন্দ্র আছে কিনা এমন প্রশ্নে তিনি বলেছেন, সবগুলোই (৪৮০টি) গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র আমাদের কাছে। তবে এর মধ্যে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হলো ৩৫১টি কেন্দ্র। আর ১২৯টিকে সাধারণ কেন্দ্র হিসেবে চিহ্নত করা হয়েছে।
নির্বাচন পরিচলানা শাখা জানায়, গাজীপুর সিটিতে ৫৭টি ওয়ার্ডে এক্সিকিউটি ম্যাজিস্ট্রেট থাকবে ৭৬ জন। ১৯ জন জুড়িশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটও থাকবে। সেখানে র্যা বের ৩০টি টিম থাকবে। বিজিবি থাকবে ২০ প্লাটুন। এছাড়া স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে ১৯টি ও মোবাইল টিম হিসেবে পুলিশের ৫৭টি টিম থাকবে। গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে ১৭ ও সাধারণ কেন্দ্রে ১৬ জনের ফোর্স থাকবে। অর্থাৎ প্রচুর আইন-শৃঙখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মোতায়েন থাকবে। যাতে কোনো রকম বিশঙ্খলা না হয়।
এই সিটি নির্বাচনে মেয়র পদে আট জন, সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৭৯জন এবং সাধারণ কাউন্সিলর পদে ২৪৬জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। মেয়র পদের প্রার্থীরা হলেন-মাছ প্রতীকে গণফ্রন্টের প্রার্থী আতিকুল ইসলাম, নৌকা প্রতীকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রার্থী অ্যাডভোকেট মো. আজমত উল্লা খান, লাঙ্গল প্রতীকে জাতীয় পার্টির প্রার্থী এমএম নিয়াজ উদ্দিন, হাতপাখা প্রতীকে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের গাজী আতাউর রহমান, গোলাপ ফুল প্রতীকে জাকের পার্টির মো. রাজু আহাম্মেদ। এছাড়া স্বতন্ত্র থেকে মেয়র পদে টেবিল ঘড়ি প্রতীকে জায়েদা খাতুন (সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের মা), ঘোড়া প্রতীকে মো. হারুন-অর-রশীদ ও হাতি প্রতীকে সরকার শাহনূর ইসলাম প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
আগামীকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ইভিএমে এই নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।৮ হাজার ১০০ ইভিএমের মাধ্যমে ১১ লাখ ৭৯ হাজার ৪৭৬জন ভোটার তাদের ভোটধিকার প্রয়োগের সুযোগ পাবেন। এদের মধ্যে ৫ লাখ ৯২ হাজার ৭৬২ জন পুরুষ ও ৫ লাখ ৮৬ হাজার ৬৯৬ জন নারী এবং ১৮ জন রয়েছে হিজড়া ভোটার। ৪ হাজার ৪৩৫টি সিসি টিভির মাধ্যমে ঢাকার আগারগাঁও থেকে প্রতিটি ভোটকক্ষ পর্যবেক্ষণ করবে কমিশন। এক্ষেত্রে আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে টিভি স্ক্রিনে ভোটের পরিস্থিতি দেখবেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালসহ অন্য নির্বাচন কমিশনারসহ ইসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
গাজীপুর সিটি করপোরেশনে সর্বশেষ ২০১৮ সালের ২৬ জুন ভোট হয়েছে। নির্বাচিত করপোরেশনের প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে ২০১৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর। পরবর্তী সাধারণ নির্বাচনের সময়গণনা শুরু হয় গত ১১ মার্চ। আগামী ১০ সেপ্টেম্বর বর্তমানে যারা নির্বাচিত রয়েছেন তাদের মেয়াদ শেষ হবে।
Posted ১৭:০৫ | বুধবার, ২৪ মে ২০২৩
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | Athar Hossain