সোমবার ৬ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৩শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চাপে চুপ মোদি-শাহ

  |   বুধবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০১৯ | প্রিন্ট

চাপে চুপ মোদি-শাহ

ভারতের নাগরিকত্ব সংশোধন আইন (সিএএ) নিয়ে আক্রমণাত্মক হলেও চাপের মুখে জাতীয় নাগরিক নিবন্ধন (এনআরসি) নিয়ে আপাতত ধীরে চলো নীতি অবলম্বন করেছে কেন্দ্রের শাসক দল বিজেপি। নাগরিকত্ব আইন ঘিরে দেশের নানা প্রান্তে বিক্ষোভে ফেটে পড়েছে মানুষ। নাগরিকত্বের এই নতুন আইন ধর্মের ভিত্তিতে তৈরি বলে সরব বিরোধী শিবিরগুলো। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বলছে, এরপরও এই আইন নিয়ে আপসে রাজি নয় বিজেপি। উল্টো নাগরিকত্ব আইনকে পুঁজি করেই ভোটবাক্সে ফায়দা তুলতে চান মোদি-শাহ জুটি।

নাগরিকত্ব আইন ও এনআরসির প্রতিবাদ করছে কংগ্রেস। আইন প্রত্যাহারের দাবিতে সরব তারা। সোচ্চার তৃণমূল কংগ্রেস। পশ্চিমবঙ্গে নতুন আইন ও এনআরসি কার্যকর হবে না বলে ইতিমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। একই ঘোষণা করেছে দেশের কংগ্রেস ও বিজেপি বিরোধী দল পরিচালিত বেশিরভাগ রাজ্য সরকারগুলো। এই পরিস্থিতিতে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের গুরুত্ব বোঝাতে মাঠে নেমেছেন মোদি-শাহরা।

ঝাড়খণ্ডের প্রচারে একাধিকবার সিএএ নিয়ে মুখ খুলেছেন বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ। বিরোধিরা দেশবাসীকে নয়া বিল নিয়ে ভুল বোঝাচ্ছে বলেও দাবি করেন তিনি। কিন্তু, এনআরসি নিয়ে আপাতত বিশেষ মুখ খুলছেন না কোনও বিজেপি নেতৃত্বই। সিএএ ও এনআরসিকে পৃথক দু’টি বিষয় হিসেবেই এখন তুলে ধরছে কেন্দ্রের শসক দলটি। দেশজুড়ে প্রবল বিতর্ক প্রশমন করতে আপাতত এই কৌশলই অবলম্বন করছে তারা।

এনআরসি কবে হবে? জবাবে গত নভেম্বরেও এই প্রশ্নে সুর চড়িয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেছিলেন, সিএএ সম্পন্ন হলেই দেশে এনআরসি কার্যকর হবে। অনুপ্রবেশকারীদের এই দেশ থেকে তাড়ানো হবেই। লোকসভাতেও তা জানিয়েছিলেন অমিত শাহ। চলতি মাসের শুরুতেও কংগ্রেসকে খোঁচা দিয়ে ঝাড়খণ্ডের প্রচার বিজেপি সভাপতি বলেছিলেন, ‘ওরা বলছে এনআরসি কার্যকর না করতে। কিন্তু ২০২৪ সালের মধ্যে গোটা দেশে এনআরসি হবে। অনুপ্রবেশকারীদের থাকতে দেওয়া যাবে না। তবে, এতে সংখ্যালঘুদের ভয় পাওয়ার কিছু নেই।’ তবে, সময় এগোতেই এনআরসি নিয়ে কড়া সুর কমেছে। গিরিডি, দেওঘর, মহাগামা, পাকুরের জনসভায় নাগরিকত্ব আইন নিয়ে সরব হলেও অমিত শাহ এনআরসি নিয়ে টু-শব্দটি করেননি। উল্টো মেরুকরণ প্রক্রিয়ায় ভোট টানতে ফের রামের দ্বারস্থ হয়েছেন তিনি। গত সোমবারই তার ঘোষণা ছিল ‘আগামী ৪ মাসের মধ্যেই অয়োধ্যায় সুবিশাল রাম মন্দির গড়ে উঠবে।’

নাগরিক পঞ্জীকরণ নিয়ে কেন এমন কৌশল বিজেপির?
কেন্দ্রীয় সরকারের দাবি, নাগরিকত্ব আইনের দ্বারা প্রতিবেশী বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে ভারতে আসা সেদেশের ছয় ধর্মের সংখ্যালঘুদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। তাদের এই দাবি মেনে নিয়েছে বেশিরভাগ এনডিএ শরিক। জেডিউই থেকে অকালি দল নিজেদের রাজ্যে তা প্রয়োগ করবে বলেও জানিয়েছে। এমনকী শিবসেনা, বিজেডি-র মত দলেরাও লোকসভায় বিলের পক্ষে ভোট দিয়েছে। কিন্তু, বিরোধীদের সঙ্গে এনআরসি মানতে রাজি নয় বিজেপির বন্ধু বেশ কয়েকটি দল। আসামে বিক্ষোভ শুরু হতেই এনআরসি নিয়ে অবস্থান বদল করেছে এনডিএ শরিক অগপ। নীতিশ কুমার জানিয়েছেন, বিহারে এনআরসি কার্যকর করবেন না। আর এতেই বেকায়দায় বিজেপি শিবির। এছাড়া, এনআরসি নিয়ে প্রচার করে মহারাষ্ট্র, পাঞ্জাব, পশ্চিমবঙ্গসহ দেশের বাকি উপ-নির্বাচনগুলোতে ফল ভালো হয়নি দলের। আপাতত তাই এনআরসি প্রসঙ্গে মুখে কুলুপ এঁটেছেন বিজেপি ও মোদি সরকারের।

দলের কার্যকরী সভাপতি জেপি নাড্ডা সব দলের সাংসদের চিঠি লিখে এলাকার শরণার্থীদের নাম তালিকাভুক্ত করতে অনুরোধ করেছেন। এদেরই নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। কৌশলে এই চিঠিতেও এনআরসি প্রসঙ্গে এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে।

কিন্তু, এই অবস্থা বেশিদিন বজায় থাকবে না বলে মনে করছেন বিজেপির সহ সম্পাদক পি মুরলীধর রাও। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে তিনি বলেন, ‘ভারতীয় মুসলমানরা কখনোই চাইবে না এদেশে পাকিস্তান থেকে মুসলিমরা আসুক। বিরোধী শিবির আপাতত এই নিয়ে জলঘোলা করে বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করলেও তা কাজে লাগবে না।’ তাদের আশা, কয়েক দিনের মধ্যেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে। তখন ফের এনআরসির পক্ষে সরব হবে বিজেপি নেতৃত্ব।

বিডি-প্রতিদিন

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ১৪:০৩ | বুধবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০১৯

Swadhindesh -স্বাধীনদেশ |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement
Advisory Editor
Professor Abdul Quadir Saleh
Editor
Advocate Md Obaydul Kabir
যোগাযোগ

Bangladesh : Moghbazar, Ramna, Dhaka -1217

ফোন : Europe Office: 560 Coventry Road, Small Heath, Birmingham, B10 0UN,

E-mail: news@swadhindesh.com, swadhindesh24@gmail.com