বুধবার ১৫ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১লা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কড়া নজরদারিতে কওমি মাদরাসা

  |   শনিবার, ২৬ এপ্রিল ২০১৪ | প্রিন্ট

download (1)

সরকারের কড়া নজরদারিতে রয়েছে দেশের কওমি মাদরাসাগুলো। জঙ্গিবাদ এড়াতে এবং জঙ্গি গোষ্ঠীগুলোর উত্থান রোধে শুধু কওমি মাদরাসাই নয়, আলিয়া মাদরাসা এবং মসজিদের ইমামদের প্রচারিত বক্তব্যের দিকেও নজর দিচ্ছে সরকার। এই লক্ষ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট অন্যান্য মন্ত্রণালয় এবং সরকারি বিভিন্ন দফতরেও বিভিন্ন বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

মাদরাসার পাঠ্যপুস্তক রচয়িতাদের ব্যাপারে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কাছে তথ্য চেয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

কওমি মাদরাসার পাঠ্যপুস্তকের লেখক ও প্রকাশকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, তারা তাদের বইগুলোর মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের কাছে দেশের ইতিহাস এবং ধর্ম সম্পর্কে ক্রমাগত ভুল তথ্যের যোগান দিয়ে যাচ্ছেন। এই কারণে লেখক ও প্রকাশকদের ওপর কড়া নজর রেখেছেন বেশ কয়েকটি গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তারা। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশেই তাদের ওপর নজরদারি করা হচ্ছে বলে জানা গেছে। এই লেখক ও প্রকাশকদের বিরুদ্ধে সরকার যেন প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারে সেজন্য তাদের বিষয়ে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কাছে তথ্য চেয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

একটি গোয়েন্দা সংস্থার এক শীর্ষ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, একই ধরনের নির্দেশনা গত ২০ এপ্রিল আরো বেশ কয়েকটি মন্ত্রণালয় এবং সরকারি দফতরে পাঠানো হয়েছে।

এছাড়াও জঙ্গি গোষ্ঠীগুলো অর্থের উৎস শনাক্তকরণের উদ্দেশ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

জঙ্গি দমনের লক্ষ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের গঠিত একটি বিশেষ কমিটি খুব শিগগিরই  দ্বিতীয় বৈঠকে বসছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ ব্যাংকের অর্থ বিষয়ক তদন্ত ইউনিটের ডেপুটি গভর্নর এবং বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন বিটিআরসি’র চেয়ারপারসনকে বৈঠকে উপস্থিত থাকার নির্দেশ দিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান জানিয়েছেন, কওমি এবং আলিয়া মাদরাসার কর্মকাণ্ড গভীরভাবে পর্যবেক্ষণের জন্য গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, “ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক আমাকে কওমি এবং আলিয়া মাদরাসার বেশ কিছু পাঠ্যপুস্তক দিয়েছেন, যেগুলোতে জিহাদসংক্রান্ত তথ্য রয়েছে।”

কওমি ও আলিয়া মাদরাসার ওপর সরকারের এই নজরদারির পদক্ষেপটি হঠাৎ করে গ্রহণ করা হয়নি জানিয়ে তিনি বলেন, “ধারাবাহিকভাবেই পর্যবেক্ষণ কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে আসছে।”

গত ২০ এপ্রিল ইস্যুকৃত নির্দেশনায় জঙ্গিবাদ সম্পর্কে দেশের সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ জানানো হয়েছে। ইসলামি জঙ্গিবাদের নেতিবাচক প্রভাব নিয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনার উদ্যোগ গ্রহণ করার জন্যও শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ জানায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

এছাড়াও সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী কওমি ও আলিয়া মাদরাসায় নিয়মিত জাতীয় সংগীত গাওয়া হয় কি না এবং জঙ্গিবাদবিরোধী বক্তব্য দেয়া হয় কি না তা পর্যবেক্ষণ করার পর প্রতি মাসে পর্যবেক্ষণ কমিটির প্রতিবেদনটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে জমা দেয়ার জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিবকেও নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

১৯৭১ সালে সংঘটিত বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস তুলে ধরার মাধ্যমে মাদরাসা শিক্ষার আধুনিকায়নের জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে পরামর্শও দেয়া হয়েছে।

এছাড়াও ধর্ম মন্ত্রণালয়ের কাছেও একটি পৃথক নির্দেশনা পাঠানো হয়েছে। এই নির্দেশনায় গুরুত্ব দেয়া হয়েছে মসজিদের ইমামদের যথাযথ প্রশিক্ষণের ওপর। মসজিদগুলোতে প্রতি শুক্রবার জুমা’র নামাজের খুতবায় জঙ্গিবাদবিরোধী বক্তব্য এবং জঙ্গিবাদের নেতিবাচক দিকগুলো তুলে ধরে এ সম্পর্কে ধর্মীয় সদুপদেশ দেয়ার বিষয়ে ইমামদের উদ্বুদ্ধ করার ওপরও জোর দেয়া হয়েছে।

স্কুল-কলেজ-মাদরাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং মসজিদের ইমামদের মধ্যে সমন্বয়ের মাধ্যমে প্রত্যেক জেলায় জঙ্গিবাদবিরোধী র্যা লির আয়োজনের জন্যও ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালককে পরামর্শ দেয়া হয়েছে।

সারা দেশের জেলা প্রশাসক এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারাও (ইউএনও) নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করবেন। তাদের দায়িত্বাধীন এলাকাগুলোর মসজিদে জঙ্গিবাদবিরোধী ধর্মীয় বক্তব্য নিয়মিত প্রচার হচ্ছে কি না তা খতিয়ে দেখবেন। এই পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে তারা প্রতি মাসে নিয়মিত একটি প্রতিবেদন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠাবেন।

জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে জনসাধারণের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে প্রাসঙ্গিক তথ্যচিত্র, শর্টফিল্ম, বিজ্ঞাপন এবং ভিডিও চিত্র নির্মাণ করে সেগুলো প্রচারের জন্য বিভিন্ন ইলেকট্রনিক গণমাধ্যমে সরবরাহের জন্য তথ্য মন্ত্রণালয়কেও নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সূত্র: ঢাকা ট্রিবিউন।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ১১:৩৫ | শনিবার, ২৬ এপ্রিল ২০১৪

Swadhindesh -স্বাধীনদেশ |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement
Advisory Editor
Professor Abdul Quadir Saleh
Editor
Advocate Md Obaydul Kabir
যোগাযোগ

Bangladesh : Moghbazar, Ramna, Dhaka -1217

ফোন : Europe Office: 560 Coventry Road, Small Heath, Birmingham, B10 0UN,

E-mail: news@swadhindesh.com, swadhindesh24@gmail.com