শনিবার ২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৪ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম >>
শিরোনাম >>

‘ওবায়দুল কাদের এনআরসির কার্যক্রমকে আগাম বৈধতা দিয়েছেন’

  |   বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০১৯ | প্রিন্ট

‘ওবায়দুল কাদের এনআরসির কার্যক্রমকে আগাম বৈধতা দিয়েছেন’

ওবায়দুল কাদের অমিত শাহের বক্তব্যকে সমর্থন করে ভারতের বিতর্কিত ‘নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন ও এনআরসি’র’ কার্যক্রমকে আগাম বৈধতা দিয়ে দিয়েছেন বলে মন্তব্য করেছে বিএনপি।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ মন্তব্য করেন।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘ওবায়দুল কাদের সাহেব অমিত শাহের বক্তব্যকে সর্থন করে যে মন্তব্য করেছেন তা সর্ম্পুণরূপেই আওয়ামী লীগের ঘৃণ্য প্রতিহিংসার রাজনীতির ধারাবাহিকতামাত্র। যা ভারতের বিতর্কিত ‘নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন ও এনআরসির’ কার্যক্রমকে আগাম বৈধতা দেয়। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানাই। আমরা আশা করি, ভবিষ্যতে আওয়ামী লীগের পক্ষে দেশের সার্থবিরোধী যেকোন বক্তব্য প্রদান থেকে তিনি সর্ম্পূণরূপে বিরত থাকবেন।’

তিনি আরো বলেন, ‘ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সম্প্রতি ‘দিল্লীর রামলীলা ময়দানে’ প্রকাশ্য জনসভায় নাগরিক সংশোধনী আইন (সিএএ) ও এনআরসি ইস্যুতে ভারতের জনগণের ক্ষোভ ও উৎকন্ঠা দূরীভুত করতে নমনীয় মনোভাব প্রকাশ করছেন। ঠিক এরকম পরস্থিতিতে বর্তমান অবৈধ সরকারেরর শীর্ষ স্থানীয় মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ‘বাংলাদেশ ও বিএনপি’ সর্ম্পকে ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও বিজিপি সভাপতি অমিত শাহের পার্লামেন্টে দেয়া মিথ্যা, উদ্দেশ্যমূলক, ভিত্তিহীন ও ধর্মীয় বিভিক্তি সৃষ্টিকারী বক্তব্যের পক্ষে অত্যন্ত নির্লজ্জভাবে অবস্থান গ্রহণ করেছেন। গত ২৩ ডিসেম্বর ওবায়দুল কাদের এক সংবাদ সম্মেলনে প্রকাশ্য বাংলাদেশেন স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব অখন্ডতা, শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য সুস্পষ্ট হুমকিস্বরূপ রাখা অমিত শাহের বক্তব্যের পক্ষে অবস্থান নিতে গিয়ে সমগ্র জাতিকে স্তম্ভিত ও ক্ষুব্ধ করেছেন।’

ওবায়দুল কাদেরকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ‘আপনি এবং আপনার অবৈধ দেশের স্বার্থবিরোধী সরকার অমিত শাহের বক্তব্যের পক্ষে সাফাই গাইতে গিয়ে সুস্পষ্টভাবে শুধুমাত্র এদেশের মানুষের স্বার্থবিরোধী অবস্থান গ্রহণ করেননি, একইসাথে বিতর্কিত নাগরকি সংশোধনী আইন (সিএএ) ও এনআরসির ফলে ক্ষতিগ্রস্ত সকল নীরিহ সাধারণ ভারতীয় মানুষের স্বার্থহানীকর ঘৃণ্য সহযোগীর ভূমিকায় অবর্তীণ হয়েছেন।’

বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘একটি গণবিরোধী, ভোটারবিহীন এবং দখলদার সরকার অবৈধ ক্ষমতাকে টিকিয়ে রাখতে কতটা নির্লজ্জ, হিতাহিতজ্ঞানশূন্য ও ক্ষমতালিপ্সু হতে পারে অমিত শাহের বক্তব্যকে সর্থন করতে গিয়ে নিজেদের আদর্শিক পিতা শেখ মুজিব সরকারের সময়কালকে প্রশ্নবিদ্ধ করতেও যে বিন্দুমাত্র দ্বিধা করেন না, ওবায়দুল কাদেরের অবস্থান সেটাই প্রমাণ করে। কারণ, ভারতের সংসদ যে বিতর্কিত বক্তব্য দিয়েছেনে অমিত শাহ সেখানে শুধুমাত্র বিএনপি সময়কালকেই নয়, শেখ মুজিবের ৭১ পরবর্তী সরকার এবং র্বতমান অবৈধ সরকারকেও সরাসরি অভিযুক্ত করেছেন। অমিত শাহের বক্তব্যই তার সুস্পষ্ট প্রমাণ। যেখানে তিনি বলনে, মাননীয় স্পিকার, সে দেশে কিন্তু নরসংহার থামেনি – একাত্তরের পরও বেছে বেছে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের নির্যাতনের ঘটনা ঘটেই চলেছ।’

তিনি বলেন, ওবায়দুল কাদের সাম্প্রতিক বক্তব্য সর্ম্পূণরূপে ভারত-তোষণনীতির এক ঘৃণ্য আখ্যানমাত্র। এর মাধ্যমে তিনি সুস্পষ্টভাবে বিএনপির ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে দেশপ্রেম বির্বজিত প্রতিহিংসার রাজনীতি চরিতার্থ করার অপচেষ্টা চালিয়েছেন। অতএব, ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্য কোনো বিচারেই বাংলাদেশের মানুষ গ্রহণ বা সর্থন করতে পারে না। বস্তুতঃ অমিত শাহে প্রদত্ত বিএনপি ও বাংলাদেশবিরোধী বক্তব্যকে নিরংকুশভাবে সর্মথন করে ওবায়দুল কাদের ভারত সরকারের বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র রাবীশ কুমারের বর্ধিত দায়িত্ব পালন করেছেন মাত্র।

নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ) প্রসঙ্গে ফখরুল বলেন, বাংলাদেশকে টার্গেট করেই এই আইন করা হয়েছে। কারণ, ইতোমধ্যেই বাংলাদেশ সন্নিহিত ভারতের উত্তর- পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য আসামের ১৯ লাখ নাগরিককে এনআরসি’র মাধ্যমে নাগরিকহীন ঘোষণা করা হয়েছ। জাতীয় নাগরিকপঞ্জী বা এনআরসি’র মাধ্যমে নাগরিকহীন ঘোষণা করার বিজিপি নেতৃত্বাধীন ভারত সরকারের পরবর্তী টার্গেট বাংলাদেশের বৃহত্তম সীমান্তবর্তী (২,২৬২ কিলোমিটার) রাজ্য পশ্চিমবাংলা। তাই একথা অত্যন্ত সুস্পষ্টভাবে বলা যায়, ভারতের ‘নাগরিক সংশোধনী আইন (সিএএ) ও এনআরসির’ মাধ্যমে অবধারিত ক্ষতিগ্রস্ত দেশ হচ্ছে আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশ। কারণ, ভারতের বৃহত্তম সীমান্ত সন্নিহিত দেশ হিসেবে বাংলাদেশের অবস্থান সর্বাগ্রে। তাই যেকোন বিচারেই ভারতের তথাকথিত ‘নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ) ও এনআরসির’ মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্ত সম্ভাব্য দেশ বাংলাদেশ এবং এদেশের নাগরিকবৃন্দ।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি নেতা ড. মঈন খান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, ইকবাল হাসার মাহমুদ টুকু, বেগম সেলিমা রহমান, রুহুল কবির রিজভী, খায়রুল কবির খোকন, আবদুস সালাম আজাদ, মুনির হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ১৪:৪৮ | বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০১৯

Swadhindesh -স্বাধীনদেশ |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement
Advisory Editor
Professor Abdul Quadir Saleh
Editor
Advocate Md Obaydul Kabir
যোগাযোগ

Bangladesh : Moghbazar, Ramna, Dhaka -1217

ফোন : Europe Office: 560 Coventry Road, Small Heath, Birmingham, B10 0UN,

E-mail: news@swadhindesh.com, swadhindesh24@gmail.com