বৃহস্পতিবার ১৬ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২রা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ইসলামে মাতা-পিতার মর্যাদা

  |   বুধবার, ২৫ এপ্রিল ২০১৮ | প্রিন্ট

ইসলামে মাতা-পিতার মর্যাদা

মুফতী মুজাহিদ সরকার: এই ধরাশয় আগমন, জগতের আলো-বাতাস উপভোগ, চন্দ্র-সূর্য্য, পাহাড়-পর্বত, নদী-নালা, খাল-বিল, সমুদ্র অবলোকন করতে পেরেছি মাতা-পিতার মাধ্যমে। তাই তাদের অবদান অস্বীকার করার কোন অবকাশ নেই। ইসলামও পিতা-মাতাকে যথা-যথ মূল্যায়ন করেছে। আল্লাহ পিতা-মাতার খেদমত করার নির্দেশ দিয়ে বলেন: “তোমার প্রতিপালক তিনি ব্যতীত অন্য কারো ইবাদত না করতে এবং পিতা-মাতার প্রতি সদ্ব্যবহার করতে আদেশ দিয়েছেন”। (সূরা বনী ইসরাইল-২৩-২৪)

অর্থাৎ পিতা-মাতার প্রতি দয়াদ্র হতে হবে। আল্লাহ পাক উক্ত আয়াতের অপর অংশে বলেন: “তাদের একজন অথবা উভয়ে তোমার জীবদ্দশায় বার্ধক্যে উপনীত হলে তাদের উফ (বিরক্তি সূচক) বল না এবং তাদেকে ধমক দিবে না (বয়সের ভারে জর্জরিত হয়ে গেলে তাদের কটাক্ষ করো না)”।
তোমাদের উচিৎ তাদের সেবা-শুশ্রুষা করা যেমনটি তারা তোমাদের শিশুকালে করেছিলেন। বস্তুত পিতা-মাতার ত্যাগ ও শুশ্রুষার প্রতিদান সন্তানের দ্বারা সম্ভব নয়। কারণ পিতা-মাতা সন্তানের লালন-পালন করে তাদেরকে বাঁচাবার ও বড় করে মানুষের মত মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার কামনা নিয়ে। আর সন্তান পিতা-মাতার শুশ্রুষা করে তাদের মৃত্যুর কামনা নিয়ে।

উক্ত আয়াতের শেষ অংশে আল্লাহ পাক বলেন: “তাদের সাথে সম্মানসূচক কথা বলবে। মমতাবেশে তাদের প্রতি নম্রতার পক্ষপুট অবনমিত করবে এবং বলবে: হে আমার রব! তাদের প্রতি দয়া কর যেভাবে শৈশবে তারা আমাকে প্রতিপালন করেছিলেন”। আল্লাহ তা‘য়ালা আরো বলেন: “আমার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রদর্শন কর এবং তোমার মাতা-পিতার প্রতিও। আমার কাছেই প্রত্যাবর্তন স্থল”। (সূরা লোকমান-১৪)

লক্ষণীয় বিষয় যে, আল্লাহ তা‘য়ালা তার নিজের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশের নির্দেশের সাথে মাতা-পিতার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশের নির্দেশও দিয়েছেন। হযরত ইবনে আব্বাস রা. বলেন: তিনটি আয়াতে তিনটি জিনিসের সাথে সম্পৃক্ত করে অবতির্ণ করা হয়েছে। প্রতিজোড়ার একটি বাদ দিয়ে অপরটি করা হলে তা গ্রহণযোগ্য হবে না।

তার একটি হল আল্লাহর অনুগত্যের সাথে রাসূলের অনুগত্য সম্পৃক্ত করেছেন আল্লাহ তা‘য়ালা বলেন: “তোমরা আল্লাহর অনুগত্য কর এবং রাসূলের অনুগত্য কর”। (সূরা নিসা-৫৯)
দ্বিতীয়টি হলো নামায কায়েমের সাথে যাকাত আদায়কে সম্পৃক্ত করেছেন। আল্লাহ পাক বলেন: “তোমরা নামায কায়েম কর এবং যাকাত প্রদান কর”। (সূরা বাকারা-১১০)
তৃতীয়টি হলো আল্লাহর কৃতজ্ঞতার সাথে মাতা-পিতার কৃতজ্ঞতা পালনের নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন: “তোমরা আমার ও তোমাদের পিতা-মাতার প্রতি কৃতজ্ঞ থাক”। (সূরা লোকমান-১৪)

মাতা-পিতার প্রতি কৃতজ্ঞ না হয়ে শুধু আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞ হলে তা গ্রহণযোগ্য হবে না। এ মর্মে রাসূল সা. বলেন: “মাতা-পিতার অসন্তুষ্টিতে আল্লাহর অসন্তুষ্টি আর আল্লাহর অসন্তুষ্টি মাতা-পিতার অসন্তুটিতে”। (তিরমিযী-১৮৯৯)

একবার রাসূল সা. একব্যক্তিকে জিহাদের অনুমতী না দিয়ে পিতা-মাতার শুশ্রুষা করার নির্দেশ দেন। (বুখারী-৩০০৪)
জিহাদের মত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে অনুমতি না দেয়ার দ্বারা প্রতিয়মান হয় যে, মাতা-পিতার শুশ্রুষা কতটুকু তাৎপর্যবহ। কিন্তু পরিতাপজনক সত্য যে, বর্তমান পৃথিবীতে অধিকাংশ পিতা-মাতা সেবা-যত্নের ক্ষেত্রে অবহেলিত। আল্লাহ আমাদেরকে পিতা-মাতার সেবা-যত্ন করে উভয় জগতে সফলকাম হওয়ার তৌফীক দান করুন। আমীন! লেখক ; সিনিয়র শিক্ষক জামিয়া মাদানিয়া রওজাতুল উলূম কুমিল্লা

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ১৪:৪১ | বুধবার, ২৫ এপ্রিল ২০১৮

Swadhindesh -স্বাধীনদেশ |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement
Advisory Editor
Professor Abdul Quadir Saleh
Editor
Advocate Md Obaydul Kabir
যোগাযোগ

Bangladesh : Moghbazar, Ramna, Dhaka -1217

ফোন : Europe Office: 560 Coventry Road, Small Heath, Birmingham, B10 0UN,

E-mail: news@swadhindesh.com, swadhindesh24@gmail.com