
নিজস্ব প্রতিবেদক | শনিবার, ১৯ নভেম্বর ২০২২ | প্রিন্ট
সিলেট থেকে : ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার অত্যাচারের স্টিমরোলার চালিয়ে দেশকে আবারও তালাবিহীন ঝুলিতে পরিণত করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। শনিবার (১৯ নভেম্বর) বিকেলে সিলেটের সরকারি আলিয়া মাদরাসা মাঠে আয়োজিত গণসমাবেশে বক্তব্যকালে এ কথা বলেন তিনি। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া বাংলাদেশে কোনো নির্বাচন হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, যারা এর বিরোধিতা করবে তারা গণশত্রু বলে স্বীকৃত হবে। তাদের গণশত্রু হিসেবে চিহ্নিত করা হবে। এটাই আমাদের এখন সংকট উত্তরণের একমাত্র পথ।
তারা আবার নতুন করে খেলা শুরু করেছে। কোন খেলা- মামলা মামলা খেলা। কোনো মামলা গায়েবি, কোনো মামলায় কোনোকিছু ঘটেনি, বলে দিল ওখানে নাশকতা ঘটেছে। সেই নাশকতার মামলায় বিএনপি নেতাকর্মীদের আসামি করা হয় অথচ তারা জানেই না কোনোকিছু। এভাবে গত ১৪ বছর ধরে তারা এই দেশের মানুষের ওপর অত্যাচার নির্যাতনের স্টিমরোলার চালিয়ে যাচ্ছে।আওয়ামী লীগকে উদ্দেশ্য করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিএনপির শীর্ষ এই নেতা বলেন, আমাদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই ফ্যাসিস্ট-দানবীয় সরকারকে পরাজিত করতে হবে। যারা আমাদের সমস্ত স্বপ্নগুলোকে ধ্বংস করে দিয়েছে, অর্জনগুলোকে ধ্বংস করে দিয়েছে, তাদের পরাজিত করে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
ফখরুল বলেন, আমরা পরিষ্কার করে বলেছি- অবিলম্বে শেখ হাসিনাকে পদত্যাগ করতে হবে, সংসদ বিলুপ্ত করতে হবে এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। ঝাড়ি-ঝুড়ি খাটবে না। পুলিশ দিয়ে, আমলা দিয়ে রাতের অন্ধকারে সবকিছু পাল্টিয়ে দেবা; ইভিএম করবা- ওটা হবে না…। জনগণ তার ভোট এবার দেখে নেবে। করায়-গণ্ডায় বুঝে নেবে। সেই ভোট হতে হবে এবং জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা হবে।
সমাবেশে উপস্থিত নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনারা একটি নতুন যুদ্ধ শুরু করেছেন। আজ এ যুদ্ধ আপনাদের নতুন যুদ্ধ। এই যুদ্ধ আপনাদের অধিকার ফিরে পাওয়ার যুদ্ধ। এই যুদ্ধ আপনাদের ভোটের অধিকার ফিরে পাওয়ার। এই যুদ্ধ আপনাদের ভাতের অধিকার ফিরে পাওয়ার। সিলেটের ইতিহাস হচ্ছে যুদ্ধের ইতিহাস। আপনাদের ইতিহাস যুদ্ধে জয়ের ইতিহাস। আজকে সিলেটের পুণ্যভূমি থেকে যুদ্ধ শুরু হলো, এই যুদ্ধে আমরা অবশ্যই জয়ী হব।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ভোলায় আব্দুর রহিম, নূরে আলম নারায়ণগঞ্জে শাওন প্রধান এবং মুন্সীগঞ্জে শাওনকে এই সরকারের পুলিশ এবং গুন্ডাবাহিনী হত্যা করেছে। তারা মনে করছে আগের মতো হত্যা করলে সবকিছু থেমে থাকবে, কিন্তু থেমে থাকেনি উজ্জীবিত হয়ে উঠেছে। অনুপ্রাণিত হয়েছে এবং একটার পর একটা বিভাগীয় সমাবেশ বেশি জনসমাগমের মাধ্যমে সফল হচ্ছে।
সকল রাজনৈতিক দল ও মানুষের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আসুন এখন আর বসে থাকার সময় নেই। সমস্ত রাজনৈতিক দল, ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান- আমরা সকলে এক হয়ে যেভাবে ’৭১ সালে লড়াই করেছিলাম, সংগ্রাম করেছিলাম সেইভাবে এই ভয়াবহ দানব সরকারকে পরাজিত করে জনগণের একটি সরকার প্রতিষ্ঠা করি। জনগণের রাষ্ট্র নির্মাণ করি।
জ্বালানি তেল ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি, দলীয় কর্মসূচিতে গুলি করে নেতাকর্মীদের হত্যার প্রতিবাদ ছাড়াও নির্বাচনকালীন নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের দাবিতে বিভাগীয় (দলের সাংগঠনিক বিভাগ) পর্যায়ে সমাবেশ করছে বিএনপি। ইতোমধ্যে চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ, খুলনা, রংপুর, বরিশাল ছাড়াও ফরিদপুরে বিভাগীয় সমাবেশ সম্পন্ন করেছে সংসদের বিরোধী দলটি।
এরমধ্যে শনিবারের এই সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য চন্দ্র রায়, ড. আব্দুল মঈন খান, ভাইস চেয়ারম্যান ডাক্তার এ জেড এম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খন্দকার খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির, ফজলুর রহমান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও ইলিয়াসপত্নী তাহসিনা সিনা রুশদী লুনা, উপদেষ্টা ডা. এনামুল হক, সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মুয়াজ্জেম হোসেন আলাল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়াও সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সাখাওয়াত হাসান জীবন, কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুল, ছাত্রদলের সভাপতি রওনাকুল ইসলাম শ্রাবণসহ সিলেট বিভাগের জেলাগুলোর শীর্ষ নেতৃবৃন্দ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
Posted ১৩:১২ | শনিবার, ১৯ নভেম্বর ২০২২
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | Athar Hossain