বুধবার ১৫ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১লা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

৪ হাজার কোটি টাকা পাচারের তথ্য পেয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক

  |   বুধবার, ০১ আগস্ট ২০১৮ | প্রিন্ট

৪ হাজার কোটি টাকা পাচারের তথ্য পেয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক

বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আবু হেনা মোহা. রাজী হাসান বলেছেন, বাংলাদেশ থেকে ব্যাংকিং চ্যানেলে চার হাজার কোটি টাকা পাচারের ব্যাপারে তথ্য পাওয়া গেছে। এর মধ্যে তদন্ত করে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে কিছু তথ্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে পাঠানো হয়েছে। মঙ্গলবার চলতি অর্থবছরের প্রথম ৬ মাসের (জুলাই-ডিসেম্বর ২০১৮) মুদ্রানীতি ঘোষণার সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি জানান, জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে বাংলাদেশ ব্যাংকের তদন্ত প্রতিবেদন সরবরাহ করা হয়েছে। এছাড়া তিনি জানান, মুদ্রা পাচার প্রতিরোধে বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা ইউনিট আরও জোরালোভাবে কাজ করছে। বিষয়টি নিয়ে তারা সতর্ক আছেন। যাদের বিরুদ্ধে মুদ্রা পাচারের অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে তাদের আইনের আওতায় আনা হচ্ছে।

আমদানি বৃদ্ধি পাচ্ছে অথচ সে তুলনায় পণ্য দেশে আসছে না; সঙ্গত কারণে টাকা পাচারের বিষয়টি সামনে আসছে- সাংবাদিকদের এমন মন্তব্যের উত্তরে দেয়ার জন্য গভর্নর ফজলে কবির কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর ও আর্থিক গোয়েন্দা ইউনিটের প্রধান আবু হেনা মোহা. রাজী হাসানকে দায়িত্ব দেন। এ সময় টাকা পাচার সংক্রান্ত উল্লিখিত তথ্য তিনি তুলে ধরেন। যদিও বিভিন্ন সূত্র ও তথ্য অনুযায়ী দেশ থেকে পাচার হওয়া টাকার পরিমাণ কয়েক লাখ কোটি টাকা।

সাম্প্রতিক সময়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তদন্তে বেশ কয়েকটি ব্যাংকের মাধ্যমে আমদানি পণ্য এবং রফতানির মূল্য দেশে না এনে টাকা পাচারের বিষয়টি জানাজানি হয়। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তদন্তে প্রাথমিকভাবে এসব অভিযোগের প্রমাণও মিলেছে। এসব ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার দায়ে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও নেয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট গ্রাহকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদনগুলো আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, দুর্নীতি দমন কমিশন ও রাজস্ব বোর্ডের কাছে পাঠানো হয়েছে। সূত্র জানায়, এর মধ্যে ক্রিসেন্ট গ্রুপ, বিসমিল্লাহ গ্রুপ, অ্যানন টেক্স দেশ থেকে আমদানি-রফতানির আড়ালে বিপুল অংকের টাকা পাচার করেছে বলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক তথ্য পেয়েছে। এছাড়া আরও কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের নামে আমদানি-রফতানি ব্যবসার আড়ালে টাকা পাচারের অভিযোগ তদন্তাধীন আছে। এর আগে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রতি বছর দেশে যে হারে বিদেশি বিনিয়োগ আসছে, তার কয়েকগুণ টাকা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পাচার হচ্ছে। গত ১০ বছরে দেশ থেকে প্রায় ৬ লাখ কোটি টাকা পাচার হয়েছে। যা দেশের জাতীয় বাজেটের দেড়গুণ। এছাড়াও এ টাকা দিয়ে ১৮টি পদ্মা সেতু নির্মাণ করা যায়।

বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সংস্থার গবেষণা প্রতিবেদন অনুসারে মোটা দাগে মোট চার কারণে টাকা পাচার হচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে- বিনিয়োগের পরিবেশের অভাব, রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার আশঙ্কা, রাষ্ট্রীয় সংস্থাগুলোর দুর্বল নজরদারি এবং বেপরোয়া দুর্নীতি। সাম্প্রতিক সময়ে পরপর ৩টি সংস্থার রিপোর্টেই বাংলাদেশ ভয়াবহ আকারে টাকা পাচারের তথ্য উঠে এসেছে। এ সংস্থাগুলোর মধ্যে রয়েছে- সুইস ব্যাংক, গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টিগ্রিটি (জিএফআই) এবং যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক অনুসন্ধানী সাংবাদিকদের সংগঠন আইসিআইজে। ২০১৭ সালের জিএফআইয়ের প্রতিবেদনে বাংলাদেশ থেকে প্রায় ৭৬ হাজার কোটি পাচারের তথ্য উঠে এসেছে। গত বছর সুইস ব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওই ব্যাংকে বাংলাদেশি নাগরিকদের জমার পরিমাণ ৪ হাজার কোটি টাকা। এর বেশির ভাগই পাচার করা হয়েছে বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদরা।

বিশ্লেষকরা মনে করেন, এভাবে নির্বিঘ্নে টাকা পাচারের বড় কারণ হল বিচার না হওয়া এবং যারা এটি করছেন তারা নিশ্চিত জানেন যে তাদের কিছুই হবে না।  যুগান্তর

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ১৩:৩৫ | বুধবার, ০১ আগস্ট ২০১৮

Swadhindesh -স্বাধীনদেশ |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement
Advisory Editor
Professor Abdul Quadir Saleh
Editor
Advocate Md Obaydul Kabir
যোগাযোগ

Bangladesh : Moghbazar, Ramna, Dhaka -1217

ফোন : Europe Office: 560 Coventry Road, Small Heath, Birmingham, B10 0UN,

E-mail: news@swadhindesh.com, swadhindesh24@gmail.com