৩ বছরের ছেলের মৃত্যুর পর মেলেনি অ্যাম্বুলেন্স। তাই ছেলের দেহ কাঁধে নিয়েই হাঁটলেন বাবা-মা। মর্মান্তিক এই ঘটনা ঘটেছে ভারতের বিহারের জাহানাবাদে।

বিহারের রাজধানী পাটনা থেকে জাহানাবাদের দূরত্ব ৪৮ কিমি। জানা গিয়েছে, হাসপাতালে মৃত্যুর পর কোনোভাবেই আম্বুলেন্স জোগাড় করতে না পেরে হাটার সিদ্ধান্ত নেয় ওই শিশুর বাবা-মা। প্রশাসনের বিরুদ্ধে তাদের অভিযোগ, লকডাউনের জেরে তারা অ্যামুলেন্স না পাওয়ায় শিশুর চিকিৎসা করাতে পারেনি। এমনকি এক হাসপাতাল থেকে অন্য হাসপাতালে দৌড়াদৌড়ি করেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি।

সামাজিক মাধ্যমে এই ঘটনার ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, অঝোরে কেঁদে চলেছেন মহিলা। তার কাঁধে রয়েছে তিন বছরের ছেলের মৃতদেহ। পাশে দাঁড়িয়ে রয়েছে শিশুটির বাবা। যখন পাশের এক ব্যক্তি তাদেরকে সাহায্যের কথা বলেন, তখন শিশুটির বাবা জানায়, তাদের এখন আর অ্যাম্বুলেন্সের প্রয়োজন নেই।

শিশুটির বাবা গিরিজ কুমার জানান, দিন দুই আগে থেকে জ্বর ও সর্দি কাশি ছিল বাচ্চার। একজন স্থানীয় চিকিৎকের কাছে নিয়ে যাওয়া হলেও কোনো কাজ না হওয়াতে একটি টেম্পো গাড়ি করে জাহানাবাদের হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। জাহানাবাদ সদর হাসপাতালের চিকিৎসকেরা তাকে দেখে রেফার করে দেয় পাটনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। কিন্তু কোনো অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করে দেয়নি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তার অভিযোগ, ‘এই অবহেলার কারণেই আমরা আমাদের সন্তানকে হারিয়েছি’।

তিনি বলেন, লকডাউনের মধ্যে যখন প্রশ্নটা জীবন মরণের ছিল। তখন আমরা যাতায়াতের কোনো উপায় পাইনি। ছেলের মৃত্যুর পর স্থানীয় কিছু লোকের সহায়তায় নিজেদের বাড়ি পৌঁছান।

ঘটনায় নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন, ওই হাসপাতালের ম্যানেজারকে সাময়িক সাসপেন্ড করা হয়েছে ও চিকিৎসকদের ওই ঘটনার কারণ দর্শানোর জন্য নোটিশ দেওয়া হয়েছে।

জেলার ম্যাজিস্ট্রেট নভীন কুমার বলেন, ‘কোনও দেরি না করে রোগীদের আম্বুলেন্স দিতে হবে। এই ঘটনা কীভাবে ঘটল তা আমরা খতিয়ে দেখছি।’

ঢাকা টাইমস