| শুক্রবার, ০৩ জানুয়ারি ২০১৪ | প্রিন্ট
স্টাফ রিপোর্টার : রোববারের একতরফা নির্বাচন স্থগিত করার আহবান জানিয়েছেন ঢাকা বিশ¡বিদ্যালয়ের সাবেক ভাইস চ্যান্সেলর বিশিষ্ট রাষ্ট্রবিজ্ঞানী প্রফেসর ড. এমাজউদ্দিন আহমেদ। একইসঙ্গে তিনি প্রধানমন্ত্রীকে সরিয়ে রাষ্ট্রপতি অথবা স্পিকারকে নির্বাচনকালীন সর্বদলীয় সরকারের প্রধান করে নির্বাচন দেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।
শুক্রবার সকালে মাহমুদুর রহমান মুক্তি সংগ্রাম পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটি আয়োজিত ‘অবরুদ্ধ দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া-নির্যাতিত মাহমুদুর রহমান-বিপর্যস্ত গণতন্ত্র ও মানবধিকার’ শীর্ষক নাগরিক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন, মাহমুদুর রহমান মুক্তি সংগ্রাম পরিষদের উপদেষ্টা মোয়াজ্জেম হোসেন নান্নু চৌধুরী।
এমাজ উদ্দিন আহমেদ সরকারের উদ্দেশে বলেন, আপনারা সংবিধানের দোহাই দিয়ে বলছেন নির্বাচন পেছানো যাবে না। কিন্তু সংবিধানের ১২৩ অনুচ্ছেদের ক ধারা অনুযায়ী নির্বাচন না করে খ ধারা অনুযায়ী ২৪ জানুয়ারির পর ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করলে সংবিধানের ধারাবাহিকতা রক্ষায় কোনো সমস্যা হবেনা। প্রধানমন্ত্রী সরে গিয়ে রাষ্ট্রপতি অথবা স্পিকারকে নির্বাচনকালীন সর্বদলীয় সরকার প্রধান করলে আমরা বিরোধী দলীয় নেতাকে নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুপারিশ করবো। খালেদা জিয়া একজন দেশপ্রেমিক। আশা করি তিনি আমাদের কথা রাখবেন। এর মাধ্যমে সংবিধান সমুন্নত রেখে গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রাখা সম্ভব হবে।
প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনি শুধু ঢাকার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে রয়েছেন। দেশের বৃহত্তম অংশে আপনার আদেশ কেউ মানছে না। আমরা চাইনি স্বাধীন দেশে একজন প্রধানমন্ত্রী এই রকম বেইজ্জতিতে পড়েন।
তিনি আরো বলেন, গণতন্ত্র ও আওয়ামী লীগ কখনো একসঙ্গে চলেনি। ইতিহাসের দিকে তাকালে আমরা দেখতে পাই ১৯৭২ সালে গণতন্ত্রের আশীর্বাদ মাথায় নিয়ে যাত্রা শুরু করলেও মাত্র আড়াই বছরের মাথায় এই গণতন্ত্র বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে।
রাষ্ট্রবিজ্ঞানী এমাজ উদ্দিন প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে বলেন, একগুয়েমি ছেড়ে সোজা পথে আসুন। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ধ্বংস করবেন না। নাহলে দেশের পতাকা থাকবে কিন্তু দেশের অভ্যন্তরীন সক্ষমতা ও অর্থনীতি ধ্বংস হয়ে যাবে। দেশের আবার তলাবিহীন ঝুড়িতে পরিণত হবে।
বিরোধীদলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়াকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
সমাবেশে মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক শিরিন সুলতানা বলেন, বেগম খালেদা জিয়াকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। পুলিশ যেভাবে সাইরেন বাজিয়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে তাতে মনে হচ্ছে এটি কোনো ভিন্ন দেশ। তিনি আরো বলেন, বিএনপির যুদ্ধ শুধু আওয়ামীলীগের বিরুদ্ধে নয়, আমাদের যুদ্ধ প্রতিবেশি একটি দেশের বিরুদ্ধে। আন্দোলনের মাধ্যমেই শেখ হাসিনা সরকারের পতন হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।
জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমদ বলেন, শুধ বেগম খালেদা জিয়া নন, দেশের সব মানুষ আজ অবরুদ্ধ। এ সরকারের পেটুয়া বাহিনী সাংবাদিক, আইনজীবী ও শিক্ষকদের উপরও নির্যাতন চালিয়েছে। তিনি আরো বলেন, সারা জাতি বর্তমান সরকারের প্রহসনের নির্বাচনের বিপক্ষে। কিন্তু সরকার তাতে কর্ণপাত করছেনা। তিনি প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে বলেন, এখনো সময় আছে নির্বাচন স্থগিত করুন, তাহলে জাতি আপনাকে ক্ষমা করতে পারে।
স্বাধীনতা ফোরামের সভাপতি আবু নাসের রহমাতুল্লাহ বলেন, সরকার বেগম খালেদা জিয়াকে অবরুদ্ধ করে গণতন্ত্রকেই অবরুদ্ধ করে রেখেছে। মানবাধিকার ও বাকস্বাধীনতা আজ পদদলিত। মাহমুদুর রহমানকে কারারুদ্ধ করে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা হরণ করা হয়েছে। তিনি অবিল¤ে¦ ৫ জানুয়ারির নির্বাচন স্থগিতের আহবান জানান।
মাহমুদুর রহমান মুক্তি সংগ্রাম পরিষদের আহবায়ক রেজাউল কবির সিকদার রেজার সঞ্চালনায় সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন এলডিপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব সাহাদত হোসেন সেলিম, সাংবাদিক নেতা বাছির জামাল, মহিলাদলের মহানগর সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন, তাঁতি দলের সহসভাপতি জাহাঙ্গীর আলম মিন্টু, মহিলাদল নেত্রী লায়লা খানম প্রমুখ।
Posted ১২:০৩ | শুক্রবার, ০৩ জানুয়ারি ২০১৪
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | admin