সোমবার ২৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মান্দায় বেতন-বোনাস বন্ধ মানসিক চাপে প্রধান শিক্ষকের মৃত্যুর অভিযোগ

এম এম হারুন আল রশীদ হীরা   |   সোমবার, ০১ মে ২০২৩ | প্রিন্ট

মান্দায় বেতন-বোনাস বন্ধ মানসিক চাপে প্রধান শিক্ষকের মৃত্যুর অভিযোগ

নওগাঁ : অসুস্থজনিত কারণে দু’দফায় ৬ মাসের ছুটিতে ছিলেন নওগাঁর মান্দা উপজেলার আলালপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এম রেজাউল হক। সুস্থ হয়ে গত ২০ ফেব্রুয়ারি চাকরিতে যোগদান করেন। গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত তিনি বিদ্যালয়ে নিয়মিত ছিলেন বলে নিশ্চিত করেন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকেরা। এর পরও তাঁর যোগদানকালিন নিয়মিত বেতনভাতা বন্ধ করে দেন উপজেলা শিক্ষা কর্মকতা আবুল বাশার সামসুজ্জামান। সদ্য চলতি ঈদ-উল-ফিতরেও তাঁকে দেওয়া হয়নি বেতন-বোনাসের আদেশ । এমতাবস্থায় স্ত্রী ও দুটি শিশু সন্তান নিয়ে ঈদ উৎসব পালন করতে পারেননি তিনি। প্রচন্ড মানসিক চাপে হতাশ হয়ে পড়েন তিনি। অবস্থা বেগতিক বলে গত শনিবার স্ট্রোক করলে তাঁকে নেওয়া হয় রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রোববার বিকেলে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন তিনি।

শিক্ষক রেজাউল হক উপজেলার কুসুম্বা ইউনিয়নের বিলকরিল্যা গ্রামের বাসিন্দা। তিনি ২০১০ সাল থেকে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত আলালপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেন। তাঁর বাবা মৃত বসরতুল্যা প্রামাণিক ভাতাপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। মুক্তিযোদ্ধার সন্তান রেজাউল হকের ওপর শিক্ষা কর্মকর্তার এমন আচরণে স্থানীয় বাসিন্দাদের মাঝে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। শিক্ষক রেজাউল হকের স্ত্রী পান্না খাতুন বলেন, অসুস্থজনিত কারণে স্বামী রেজাউল হক গতবছরের ২২ আগস্ট তিন মাসের ছুটির আবেদন করেন। সুস্থ না হওয়ায় ছুটি আরও তিন মাস বাড়ানো হয়। চিকিৎসায় সুস্থ হয়ে গত ২০ ফেব্রুয়ারি চাকরিতে যোগদান করেন।
পান্না খাতুন অভিযোগ করে বলেন, চাকরিতে যোগদানের পর বেতনভাতার জন্য স্বামী রেজাউল হক উপজেলা শিক্ষা অফিসে দিনের পর দিন ধর্ণা দিয়েছেন। কিন্তু শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল বাশার সামসুজ্জামান বিভিন্ন অজুহাতে তাঁকে হয়রানী করতে থাকেন। এক পর্যায়ে বিলবেতন পাসের জন্য অফিস আমার স্বামীর কাছে ১০ হাজার টাকা দাবি করে। পরে বাড়িতে থাকা ছোট্ট একটি ছাগল বিক্রি ও ধার করে ৫ হাজার টাকা তুলে দেওয়া হয় অফিসের সেই ব্যক্তির হাতে। দাবি পুরন না হওয়ায় ঈদের আগে বেতন-বোনাস পাস করেন নি।

পান্না খাতুন আরও বলেন, বেতন-বোনাস উত্তোলন করতে না পেরে স্বামী রেজাউল হক মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। প্রচন্ড মানসিক চাপে স্ট্রোক করলে তাঁকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় রোববার বিকেলে মারা যান তিনি। তিনি সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে শিক্ষা কর্মকর্তার শাস্তি দাবি করেছেন।
এ বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল বাশার সামসুজ্জামান কোন ঘুষ গ্রহণ ও  হয়রানীর অভিযোগ অস্বীকার করে এ প্রতিবেদককে বলেন, মেডিক্যালের কাগজপত্র ও ছুটির আবেদন ছাড়াই  ছয় মাস ধরে প্রধান শিক্ষক রেজাউল হক বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত ছিলেন। পরে কাগজপত্র সঠিকভাবে উপস্থাপন করায় তা অনুমোদনের জন্য জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে পাঠানো হয়েছে। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার অনুমোদন ছাড়াই তিনি বিদ্যালয়ে যোগদান করতে পারেন না বলেও তিনি আরো জানান। তবে তাঁর জন্য মানসিক চাপের সৃষ্টি ও মৃত্যুর বিষয়ে বলেন,মানুষের মৃত্যু কখন হবে কেউ বলতে পারে না। তবে জেলা শিক্ষা অফিস থেকে এখনো তার ফরোয়ার্ড করা বিল- বেতনের কপি আসেনি। কোন তারিখে বা ঈদের কতদিন আগে ফরোয়ার্ড করেছেন জানতে চাইলে তিনি আরো জানান,  দিন তারিখ মনে নেই। তবে ঈদের ২/৩ দিন আগে হবে।
Facebook Comments Box
advertisement

Posted ১৫:৩৯ | সোমবার, ০১ মে ২০২৩

Swadhindesh -স্বাধীনদেশ |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement
Advisory Editor
Professor Abdul Quadir Saleh
Editor
Advocate Md Obaydul Kabir
যোগাযোগ

Bangladesh : Moghbazar, Ramna, Dhaka -1217

ফোন : Europe Office: 560 Coventry Road, Small Heath, Birmingham, B10 0UN,

E-mail: news@swadhindesh.com, swadhindesh24@gmail.com