শনিবার ১৮ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৪ঠা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম >>
শিরোনাম >>

বিরোধী দলহীন নির্বাচনে জনআকাঙ্ক্ষা প্রতিফলনের সুযোগ নেই : সংসদ সদস্য জন স্টিভেনসন

  |   সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০১৩ | প্রিন্ট

uk-malik

যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্ট সদস্য জন স্টিভেনসন বলেছেন, বিরোধী দলবিহীন একতরফা কোনো নির্বাচনে জনআকাঙ্ক্ষা প্রতিফলনের সুযোগ নেই। এরকম কিছু হলে সেটা গণতন্ত্রের সঙ্গে প্রহসন ছাড়া আর কিছুই নয়। কোনো দেশে এরকম নির্বাচন হলে কারও কাছে তা গ্রহণযোগ্যতা পাবে বলে বিশ্বাস হয় না। গণতন্ত্রের মূল চিন্তাই হচ্ছে জনগণের ইচ্ছা নির্বিঘ্নে স্বাধীনভাবে ভোটের মাধ্যমে প্রকাশ করা। বিরোধী দল নির্বাচনে না থাকলে জনগণের মতামত প্রকাশের সে সুযোগই থাকবে না।

বাংলাদেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে গত বৃহস্পতিবার দুপুরে সিটিজেন মুভমেন্ট এবং কমিটি ফর হিউম্যান রাইটস্ অ্যান্ড ডেমোক্র্যাসির উদ্যোগে যুক্তরাজ্যের কাম্ব্রিয়া কাউন্টির কার্লাইলে একটি রেস্টুরেন্টে আয়োজিত সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সংসদ সদস্য জন স্টিভেনসন এ কথা বলেন। কমিটি ফর হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড ডেমোক্র্যাসির আহ্বায়ক মোশাহিদ হোসেইনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সেমিনারে বিশেষ অতিথি ছিলেন স্থানীয় সিটি কাউন্সিলর কলিন গ্লোভার, সিটিজেন মুভমেন্টের আহ্বায়ক এমএ মালেক, ১৮ দলীয় জোট নেতা মুফতি শাহ সদর উদ্দিন, যুক্তরাজ্যে নির্বাসিত দৈনিক আমার দেশ প্রতিনিধি অলিউল্লাহ নোমান, কাউন্সিলর আবদুল হারিস প্রমুখ। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সৈয়দ সিদ্দিক। সেমিনারে যুক্তরাজ্য প্রবাসী বাংলাদেশী নাগরিকরা উপস্থিত ছিলেন।
সংসদ সদস্য জন স্টিভেনসন বলেন, বাংলাদেশ এখনও একটি শিশু গণতন্ত্রের দেশ। এখানে জনগণের ইচ্ছাকে প্রধান্য দিতে হবে। জনগণের ইচ্ছার বাইরে গিয়ে গণতন্ত্র চর্চার সুযোগ নেই। বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় বাহিনীর বল প্রয়োগে মানবাধিকার লঙ্ঘনের চলমান ঘটনাবলী নিয়ে তিনি যুক্তরাজ্যের সরকার ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনার আশ্বাস দিয়ে তিনি বলেন, উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে যুক্তরাজ্য সব সময়ই বাংলাদেশে সুষ্ঠু, অবাধ এবং গ্রহণযোগ্য নির্বাচন চাইবে। গণতন্ত্রকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে হলে, জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন দেখতে হলে স্বাধীন এবং নির্বিঘ্ন পরিবেশ তৈরির মাধ্যমেই নিরপেক্ষ নির্বাচনের আয়োজন করতে হবে।

এমএ মালেক বলেন, বাংলাদেশ স্বাধীনতার পর এখন একটি কঠিন সময় অতিক্রম করছে। বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর বাবা শেখ মুজিবুর রহমান গণতন্ত্রের কথা বলে মানুষকে উজ্জীবিত করেছিলেন। কিন্তু স্বাধীনতার পর ক্ষমতায় এসে তিনি গণতন্ত্র হরণ করেন এবং সব রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করে একদলীয় বাকশাল প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তখনও হাজার হাজার রাজনৈতিক নেতাকর্মীকে হত্যা, গুম করা হয়েছিল। বাবার চিন্তা এবং আদর্শেই শেখ হাসিনা বাংলাদেশে বিরোধী দলের ওপর দমন-নিপীড়ন চালিয়ে যাচ্ছেন। প্রতিদিন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা প্রকাশ্যে গুলি করে মানুষ হত্যা করছে। অনেক নেতাকর্মীকে ধরে নিয়ে গুম করা হয়েছে। এর আগে বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ইলিয়াস আলী ও তার ড্রাইভার আনসার আলীকে গুম করেছে। এখন শুধু গুম নয়, বাসাবাড়িতে প্রবেশ করে মানুষ হত্যা করছে, ঘরবাড়ি ধ্বংস করছে। অনেক নারী ও মেয়ে শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগ সংবাদপত্রে উঠে আসছে। তিনি বলেন, এ অবস্থায় একটি দেশে গণতন্ত্র চলছে বলা যায় না। সেটা গণতন্ত্রের নামে হিটলার-মুসোলিনির একনায়কতন্ত্র চলছে।

মুফতি শাহ সদর উদ্দিন বলেন, বাংলাদেশে রাজপথে মানুষকে যেভাবে গুলি করা হচ্ছে, যেভাবে ৫ মে রাতে মতিঝিলে গণহত্যা চালানো হয়েছে, এরপর আর বলা যায় না দেশে গণতন্ত্র আছে। এখন শেখ হাসিনার একনায়কতন্ত্র এবং চরম স্বৈরতান্ত্রিক শাসন চলছে। এ অবস্থা থেকে জাতিকে মুক্তি দিতে হলে, গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে হলে উন্নয়ন সহযোগী দেশগুলোর সহযোগিতা লাগবে।

কাউন্সিলর আবদুল হারিছ বলেন, মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত স্বাধীনতাকে অর্থবহ করতে হলে গণতন্ত্রকে এগিয়ে নিতে হবে। গণতন্ত্র ছাড়া মানুষের ইচ্ছার প্রতিফলন সম্ভব নয়। এজন্য দরকার ফ্রি, ফেয়ার অ্যান্ড ক্রেডিবল ইলেকশন। তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের জুলুম-নির্যাতনের ফলে নির্বাচনের সেই পরিবেশ নেই। বিরোধী দল নির্বাচনে না আসায় গণতন্ত্র হুমকির মুখ পড়েছে।

অলিউল্লাহ নোমান বলেন, বাংলাদেশে একদিকে চলছে রাষ্ট্রীয় হত্যাকাণ্ড, আরেকদিকে ভিন্নমতের গণমাধ্যমকে গলা টিপে ধরা হচ্ছে। স্বাধীনভাবে সরকারের অন্যায়-অত্যাচারের বিরুদ্ধে কথা বলারও কোনো সুযোগ নেই। বর্তমান গণতান্ত্রিক স্বৈরশাসনে ভিন্নমতের গণমাধ্যমগুলোকে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। দৈনিক আমার দেশ সম্পাদককে গ্রেফতারের পর পত্রিকার ছাপাখানা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে রিমান্ডে নিয়ে দিনের পর দিন নির্যাতন করা হচ্ছে।

সেমিনারে অন্যান্য বক্তা বাংলাদেশে রাষ্ট্রীয় বাহিনীগুলোর হত্যাকাণ্ড নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ এবং উন্নয়ন সহযোগী দেশ হিসেবে যুক্তরাজ্যের সহযোগিতার বলিষ্ঠ ভূমিকার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ০০:৪৬ | সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০১৩

Swadhindesh -স্বাধীনদেশ |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

এ বিভাগের আরও খবর

Advisory Editor
Professor Abdul Quadir Saleh
Editor
Advocate Md Obaydul Kabir
যোগাযোগ

Bangladesh : Moghbazar, Ramna, Dhaka -1217

ফোন : Europe Office: 560 Coventry Road, Small Heath, Birmingham, B10 0UN,

E-mail: news@swadhindesh.com, swadhindesh24@gmail.com