রবিবার ১৯শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৫ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম >>
শিরোনাম >>

বছরের প্রথমদিন নতুন বই পাবে খুদে শিক্ষার্থীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   বুধবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২২ | প্রিন্ট

বছরের প্রথমদিন নতুন বই পাবে খুদে শিক্ষার্থীরা

প্রতিবারের মতো এবারও বছরের প্রথম দিন শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন পাঠ্যপুস্তক তুলে দেওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিয়েছে সরকার। সেই লক্ষে ইতোমধ্যে সারাদেশে বই পাঠানোর কাজ শুরু হয়েছে। চলতি বছরের শেষ দিন পর্যন্ত ৮০ শতাংশ পাঠ্যপুস্তক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পৌঁছে যাবে বলে জানিয়েছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। অবশিষ্ট পাঠ্যপুস্তক জানুয়ারির ১৫ তারিখের মধ্যে পৌঁছে যাবে বলেও জানানো হয়েছে।

 

এনসিটিবি চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. ফরহাদুল ইসলাম জানান, মাধ্যমিকের ৭০ শতাংশ এবং প্রাথমিকের ৫০ শতাংশ পাঠ্যপুস্তক প্রস্তুত হয়ে গেছে। প্রতিদিনই দেশের বিভিন্নস্থানে বই পাঠানো হচ্ছে। তৈরি করা পাঠ্যপুস্তকের প্রায় ৮০ শতাংশ মাঠপর্যায়ে পৌঁছানো হয়ে গেছে। অবশিষ্ট পাঠ্যপুস্তক জানুয়ারির ১৫ তারিখের মধ্যে পৌঁছে যাবে বলেও জানান তিনি।

 

সারাদেশে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে মোট ৩৩ কোটি ৪৮ লাখ ৭৭ হাজার ৮৩৩টি পাঠ্যপুস্তক বিতরণের কথা রয়েছে। এর মধ্যে প্রাইমারির (প্রাক প্রাথমিক থেকে ক্ষুদ্র ও নৃগোষ্ঠীসহ) মোট বই নয় কোটি ৬৬ লাখ সাত হাজার ২৪৫টি এবং মাধ্যমিকের জন্য ২৩ কোটি ৮২ লাখ ৭০ হাজার ৫৮৮টি বই বিতরণ করা হবে। ১৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত মাধ্যমিকের ১৪ কোটি ৪১ লাখ বই মাঠপর্যায়ে পৌঁছে গেছে এবং প্রস্তুত হয়েছে প্রায় ১৭ কোটি বই। এছাড়া প্রাথমিকের ৫ কোটি ১৯ লাখ বই মুদ্রণ ও বাঁধাই সম্পন্ন হয়েছে। এর মধ্যে তিন কোটি ৫৭ লাখ বই দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সরবরাহ করা হয়েছে। অবশিষ্ট বই শিগগিরই স্কুল পর্যায়ে পাঠানো হবে।

 

শিক্ষা খাতে সরকারের অগ্রাধিকারের কথা তুলে ধরে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দায় কাগজ, কালিসহ পুস্তক তৈরির সব উপকরণের দাম লাগামহীন। এমন পরিস্থিতিতেও শিক্ষাখাতকে অগ্রাধিকারে রেখে আগামী ১ জানুয়ারি দেশের সব শিক্ষার্থীর হাতে নতুন বই তুলে দেওয়া হবে।

 

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকে কোমলমতি শিশুদের কথা বিবেচনা করে বছরের প্রথম দিনই তাদের হাতে বই পৌঁছে দিয়েছে। এমনকি করোনা মহামারির সময় এবং অর্থনৈতিক মন্দা সত্ত্বেও শিক্ষার্থীদের হাতে জানুয়ারির ১ তারিখে বই তুলে দেওয়া হয়েছে।

 

এদিকে ৯টিরও বেশি মুদ্রণ প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের জন্য নিম্নমানের বই ছাপার অভিযোগ পেয়েছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। নিম্নমানের বই ছাপিয়ে প্রতিষ্ঠানগুলো এনসিটিবিকে হস্তান্তর করার আগে সরেজমিন পরিদর্শন শেষে প্রায়-প্রস্তুত ৫০ হাজার পাঠ্যবই ও ছাপানো ফর্মা কেটে বিনষ্ট করা হয়েছে।

 

এনসিটিবি জানায়, গ্লোবাল প্রিন্টিং অ্যান্ড ইকুইপমেন্ট, আমিন আর্ট প্রেস অ্যান্ড প্রিন্টিং, আলামিন প্রেস, সরকার প্রিন্টিং অ্যান্ড পাবলিকেশনস, লিখন আর্ট প্রেস, হাওলাদার প্রেস, এস এস প্রিন্টার্স, নয়ন মনি এবং রিফাত প্রেসে ছাপানো ৫০ হাজার পাঠ্যবই ও বইয়ের ফর্মা কেটে বিনষ্ট করা হয়েছে। গত কয়েকদিনে এসব বই কেটে ফেলা হয়।

 

এনসিটিবি চেয়ারম্যান জানান, বেশ কিছু প্রেসে প্রস্তুত করা পাঠ্যবই ও বইয়ের ফর্মা কেটে বিনষ্ট করা হয়েছে। প্রথম থেকে এসব প্রেস মালিকদের বলে আসছিলাম নিম্নমানের বই না ছাপার জন্য। কিন্তু তারা শোনেনি। আমরা অনেক বই বাতিল করেছি। এই প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখবো। নিম্নমানের বই দেবে- এটা কোনোভাবেই হতে দেওয়া যাবে না। আমাদের পরিদর্শন টিম মুদ্রণ প্রতিষ্ঠানগুলোতে নজর রাখছে। নিম্নমানের বই ছাপার প্রমাণ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

এদিকে প্রাথমিকের বই ছাপার কাজ শুরুই করতে পারেনি দশবিশা ও জাহানারা প্রেস। এ বিষয়ে জানতে চাইলে অধ্যাপক মো. ফরহাদুল ইসলাম বলেন, ‘১৯ ডিসেম্বর থেকে এরা বই ছাপা শুরু করছে। আগামী ৩০ ডিসেম্বরের মধ্যে ৫০ শতাংশ বই সরবরাহ করবে। তাদের সঙ্গে কথা হয়েছে।

 

এনসিটিবির দাবি, আগামী ৩০ ডিসেম্বরের মধ্যে ৮০ শতাংশ বই ছাপা এবং সরবরাহ সম্ভব হবে। তবে মুদ্রণ প্রতিষ্ঠানগুলোতে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কাগজ সংকটের কারণে অনেক প্রতিষ্ঠানে বই ছাপার অগ্রগতি নেই। জাহানারা প্রেস ব্যাংক ঋণ না পেয়ে বই ছাপার কাজ শুরু করতে পারেনি।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ডলারের মূল্য বৃদ্ধি, মূল্যস্ফীতি, গ্যাস ও নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুতের অভাবে কাগজ সংকট চলছে কিছু দিন আগে থেকেই। এদিকে ডলার সংকট মেটাতে ভার্জিন পাল্প আমদানি করার সুযোগ পায়নি কাগজকল মালিকরা। ফলে রিসাইকেলের মাধ্যমে তৈরি কাগজে পাঠ্যবই ছাপার সুযোগ দেওয়া হয়েছে মুদ্রণ মালিকদের। এ কারণে পাঠ্যবইয়ের মান এমনিতেই বেশি ভালো হবে না। অন্যদিকে আগামী ১ জানুয়ারি পাঠ্যবই শিক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছাতে চায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এই সুযোগ নিয়ে একশ্রেণির মুদ্রণ মালিক সবচেয়ে নিম্নমানের কাগজে বই ছেপে সরবরাহের চেষ্টা করছে। দেশে কাগজের সংকট থাকলেও পাঠ্যবই ছাপার জন্য এক লাখ টনের বেশি কাগজ প্রয়োজন হবে। এই কাগজের সরবরাহ না থাকায় দ্রুত বই ছাপার কাজে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়। কাগজকলগুলোতে কাগজ তৈরির পর তাদের কাছ থেকে সরবরাহ নেওয়া হচ্ছে।

 

উল্লেখ্য, ২০১২ সাল থেকেই সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে বই বিতরণ উৎসবের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের হাতে বিনামূল্যে নতুন বই তুলে দিচ্ছে। এই কার্যক্রমের ধারাবাহিকতায় সারাদেশে একযোগে বছরের প্রথম দিন ১ জানুয়ারি শিক্ষক-শিক্ষার্থী-অভিভাবক, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ প্রাথমিক শিক্ষা সংশ্লিষ্ট দফতরগুলোর কর্মকর্তা-কর্মচারীর উপস্থিতিতে বই বিতরণ উদযাপিত হয়ে আসছে।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ০৭:৪১ | বুধবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২২

Swadhindesh -স্বাধীনদেশ |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

এ বিভাগের আরও খবর

Advisory Editor
Professor Abdul Quadir Saleh
Editor
Advocate Md Obaydul Kabir
যোগাযোগ

Bangladesh : Moghbazar, Ramna, Dhaka -1217

ফোন : Europe Office: 560 Coventry Road, Small Heath, Birmingham, B10 0UN,

E-mail: news@swadhindesh.com, swadhindesh24@gmail.com