| মঙ্গলবার, ১২ এপ্রিল ২০২২ | প্রিন্ট
বিএনপি নেতারা দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদকে গিয়ে নিজেদের দুর্নীতি আড়ালে মহড়া দিচ্ছেন বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
আজ তার সরকারি বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ মন্তব্য করেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি নেতারা দুর্নীতি দমন কমিশনে গিয়ে যে মহড়া দিয়েছেন তা নিজেদের দুর্নীতি ও ব্যর্থতা আড়ালের অপচেষ্টা মাত্র। বিএনপির কথিত আন্দোলন আর অভ্যুত্থানের রঙিন খোয়াব ভেঙ্গে যাওয়ায় জনগণের নজর এখন ভিন্ন দিকে নিতে চায়। কর্মী-সমর্থকদের রোষানল থেকে বাঁচতেই বিএনপি নেতারা দুর্নীতির তথ্য প্রদানের নামে নাটকীয়তার আশ্রয় নিচ্ছে।
বিএনপি নেতাদের উদ্দেশ্য করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, অনেক তথ্যই সরকারের কাছে আছে, কে কোথায় সভা করছে, কাকে টাকা দিচ্ছে, এমনকি সরকারের বিরোধিতার নামে রাষ্ট্রবিরোধী কাজে উস্কানির জন্য দুর্নীতিলব্ধ অর্থ বিনিয়োগ করা হচ্ছে।
কারা কর ফাঁকি দিয়ে ব্যবসা করে আবার দুর্নীতিবাজ নেতৃত্বের জন্য অবৈধ উপায়ে অর্থ প্রেরণ করছে, – সব খবরই সরকারের কাছে আছে উল্লেখ করে কাদের বলেন, এসব অপরাধীরা কেউই ছাড় পাবে না।
ওবায়দুল কাদের বিএনপি মহাসচিবের কাছে প্রশ্ন রেখে বলেন নিজ দলের অপরাধী, দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে আপনাদের অবস্থান কী? সাহস থাকলে তাদের তালিকা দিন। বিদেশে বিলাসী জীবনের রসদ কোথা থেকে আসছে তার হিসাব জমা দিন।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, সর্ষের মধ্যে ভূত রেখে ভূত তাড়ানোর এসব লোকদেখানো অপপ্রয়াস অপরাজনীতিরই ধারাবাহিকতা মাত্র।
বিএনপি দুর্নীতি নিয়ে কথা বললে তা হাস্যকর উল্লেখ করে তিনি বলেন, যে দলের চেয়ারপারসন দুর্নীতির দায়ে দণ্ডপ্রাপ্ত, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি এবং দলীয় গঠনতন্ত্র থেকে যে দল দুর্নীতিবিরোধী ৭ ধারা অপসারণ করে, যারা আত্মস্বীকৃত দুর্নীতিবাজ দল হিসেবে নিজেদের পরিচিত করেছে, যাদের শাসনামলে দেশকে পরপর ৫ বার দুর্নীতিতে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হওয়ার কলঙ্কতিলক পরতে হয়েছিল, সেই আপাদমস্তক দুর্নীতিগ্রস্ত বিএনপি যখন দুর্নীতি নিয়ে কথা বলে তখন মানুষের হাসি পায়।
তিনি বলেন, আত্মস্বীকৃত দুর্নীতিবাজ দলের এমন মুখরেচক কথার নৈতিক মানদণ্ড নিয়েও মানুষ পরিহাস করে।
কাদের বলেন, তারেক রহমানের পাচারকৃত ১২ কোটি টাকা আটক করেছিলো যুক্তরাষ্ট্রের ডিপার্টমেন্ট অফ জাস্টিস। আওয়ামী লীগ সরকার ২০১২ সালে সে টাকা দেশে ফেরত আনে। বাংলাদেশ কোর্টের রায়ের প্রেক্ষিতে ২০১৩ সালে সিঙ্গাপুর সরকার পাচারকৃত ৮ কোটি টাকা ফেরত দেয়।
ওবায়দুল কাদের বলেন, তারেক রহমান ও তার ব্যবসায়িক পার্টনার গিয়াসউদ্দিন আল মামুন সিটিএনএ ব্যাংকে ২১ কোটি টাকা পাচার করে। এফবিআই এ ব্যাপারে তদন্ত করেছে এবং বাংলাদেশের আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছে, শুধু তাই নয় লন্ডনের একটি ব্যাংকে প্রায় ৬ কোটি টাকা পাওয়া যায় তার ব্যাংক হিসেবে। বেলজিয়ামে ৭৫০ মিলিয়ন ডলার, মালয়েশিয়ায় ২৫০ মিলিয়ন ডলার পাচার করেছেন, দুবাইয়ের এমিরিটাস হিলস-এ স্প্রিং- ১৪ নামের কয়েক মিলিয়ন ডলার মূল্যের বাড়ির মালিক হয়েছিলো জিয়া পরিবার। ভাঙ্গা সুটকেসের গল্প ততদিনে লঞ্চ, টেক্সটাইল মিল, বিদেশে বাড়ি আর ব্যাংক ব্যালেন্সের নিচে চাপা পড়ে গেছে, অথচ তারাই এখন দুর্নীতির বিরুদ্ধে বড় বড় কথা বলে!
দেশবাসী জানে অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে শেখ হাসিনা শূন্য সহিষ্ণুতা নীতিতে অটল উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, শুদ্ধি অভিযানের মাধ্যমে এর প্রমাণ জনগণ ইতোমধ্যে দেখেছে।
তিনি বলেন, যে যত বড় নেতাই হোক, অনিয়মের অভিযোগ পেলে কাউকে ছাড় দেওয়া হয়নি। সরকারি দলের অনেক নেতা, এমপি এমনকি মন্ত্রী পর্যন্ত ছাড় পায়নি।
দুদক স্বাধীনভাবে কাজ করছে উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, সরকারি দলের বিরুদ্ধেও দুদকের কাজ করতে কোন বাধা ছিলো না এবং এখনো নেই। বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যানসহ তাদের অনেক নেতার বিরুদ্ধে দুদকে যে তথ্য বা অভিযোগ আছে সে ব্যাপারেও দুদক তদন্ত করে ব্যবস্থা নিবে বলে আশা করেন ওবায়দুল কাদের।
বিএনপির বিরুদ্ধে জনগণের সবচেয়ে বড় অভিযোগ দুর্নীতি বলে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, সাহস থাকলে আপনাদের গঠনতন্ত্র দুর্নীতি বিরোধী ৭ ধারা ফিরেয়ে আনুন, যা বাদ দিয়েছিলেন, তাহলে বোঝা যাবে আপনারা দুর্নীতির বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন। একদিকে দুর্নীতিকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়ে, আবার অন্যদিকে কল্পিত অভিযোগ করাকে জনগণ নৈতিকতা বিরোধী বলেই মনে করে।
Posted ১০:৪০ | মঙ্গলবার, ১২ এপ্রিল ২০২২
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | Athar Hossain