| শুক্রবার, ১৪ মার্চ ২০১৪ | প্রিন্ট
এরশাদুল বারী, ঢাকা : গ্রাম বাংলার চিরাচরিত ঐতিহ্য হিসেবে পৌষের শীতে পিঠা খাওয়ার ধুম হর হামেশাই চোখে পড়ে। কিন্তু ফাল্গুনের উষ্ণতার সকালেও কংক্রিটের চার দেয়ালের এই ঢাকা শহরে যে ভাপা, নকশী আর পাটিশাপটাসহ নানান প্রজাতির আবহমান বাংলার বৈচিত্রপ–র্ণ পিঠার আয়োজন হতে পারে তার প্রমাণ পাওয়া গেল গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবের পিঠা উৎসবে। সেই পিঠার সঙ্গে যদি রিজিয়া পারভীন আর আতিক হাসানের মতো শিল্পীদের গান থাকে তাহলে তো আর কথাই নেই। গ্রাম-বাংলার পিঠা-পাবনে পিঠা খাওয়ার যে কি আনন্দ তার কোনো
কমতি ছিল না প্রেস ক্লাবের কাবাব হাউজের সবুজ চত্বরের অনুষ্ঠিত ওই পিঠা উৎসবে। স্কাইল্যান্ড মটরস-এর সহযোগিতায় আয়োজিত এই উৎসবে ক্লাব সদস্য ও তাদের পরিবারবর্গ বিপুল আনন্দ উচ্ছ্বাসের সাথে যোগ দেন। তারা বাহারী সব পিঠার স্বাদ গ্রহণ করেন।
উৎসবে গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্যবাহী অর্ধশতাধিক পিঠা পরিবেশন করা হয়। নানান সব পিঠার মধ্যে ছিল- পাটিশাপটা পিঠা, মাল পোয়া পিঠা, লবঙ্গ লতিকা, রস ফুল পিঠা, বিবিখানা পিঠা, নারিকেলের ভাড়া পুলি, চাঁদ পাকন পিঠা, ভেজিটেবল ঝাল পিঠা, নারিকেলের ঝুড়ি, ফুল ঝুড়ি, ঝাল পোয়া, পিঠা, পাকন পিঠা, নকশী পিঠা, ফুল পিঠা, গোলাপ ফুল পিঠা, সুন্দরী পাকন, ঝিনুক, ক্ষির কুলি, স–র্যমুখী, নারিকেলের ভাজা পুলি, চিতই, ভাপা পিঠা, তালের পিঠা, তেলের পিঠা, মাল পোয়া, আনধাশা, ধুপি পিঠা, দুধ পিঠা, রস পিঠা, পুলি পিঠা, ক্ষীর পুলি, মাংস পুলি, কড়ি পিঠা, ঝিকমিক পিঠা, কাঁঠাল পাতা পিঠা, তাল পাতা পিঠা, ছিটা পিঠা, মুগ পাকন পিঠা, চিরুনি পিঠা, খেজুর পিঠা, বেণী পিঠা, ফলঝুরি, পালকি, শামুল, মুঠা, রসের পিঠা বাঁশ, চুঙ্গি, বউ পিঠা, জামাই আদর পিঠা, গড়গড়া, চই, বকুল, রূপসি, কলসি, পানতোয়া চাঁদ পাকন, কুলশি, হাড়ি ও চাপড়ি পিঠা।
প্রেস ক্লাবের সিনিয়র সহ সভাপতি কাজী রওনাক হোসেনের উপস্থাপনায় পিঠা উৎসবের এ অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি কামাল উদ্দিন সবুজ, সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমদ, বিশেষ অনুষ্ঠান ও আপ্যায়ন কমিটির আহবায়ক কাদের গণি চৌধুরী ও স্কাইল্যান্ড মটরস-এর স্বত্বাধিকারী আবু বকর সিদ্দিক।
অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী বক্তৃতায় কামাল উদ্দিন সবুজ বলেন, শীত চলে গেছে তো কি হয়েছে। প্রেমের যেমন কোনো সময় নেই, তেমনি পিঠা উৎসবের কোনো বাধা ধরা নিয়ম নেই। আবহমান বাংলার ঐতিহ্যমন্ডিত সুস্বাদু পিঠাসম–হকে নগর জীবনে ক্রমাগতভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া আমাদের নতুন প্রজন্মের কাছে পরিচিত করে দেবার জন্য জাতীয় প্রেস ক্লাব এ ধরনের উৎসবের আয়োজন করে চলেছে। ভবিষ্যতেও তা অব্যাহত থাকবে।
সৈয়দ আবদাল আহমদ বলেন, অতীতে আমাদের মা-দাদী-নানী ফুফু ও চাচীদের কঠোর শ্রমে যে সুস্বাদু পিঠা তৈরি হত তা আজকালকের শহুরে ছেলে-মেয়েদের কাছে গল্প বলে মনে হয়। তাদের কাছে গ্রামীণ পিঠার স্বাদ কিছুটা হলেও পৌঁছে দেবার জন্য আজকের উদ্যোগ। অনুষ্ঠানে সঙ্গীত পরিবেশন করে সবাইকে সন্মোহিত করেন রিজিয়া পারভীন, আতিক হাসান ও তাদের দল।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সহ-সভাপতি বখতিয়ার রাণা, যুগ্ম সম্পাদক ফরিদা ইয়াসমিন, কোষাধ্যক্ষ বদিউল আলম, ব্যবস্থাপনা কমিটি সদস্য- পারভীন সুলতানা ম–সা ঝুমা, মোঃ ন–রুল হুদা, হাসান হাফিজ, ন–রুদ্দিন আহমেদ, ফরিদ হোসেন, শামসুদ্দিন আহমেদ চারু, ন–রুল হাসান খান, শান্তা মারিয়া, মাঈনুল আলম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
Posted ১৮:০৪ | শুক্রবার, ১৪ মার্চ ২০১৪
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | admin