বুধবার ৮ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৫শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঘুষ ছাড়া জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে মেলে না স্বাস্থ্যসেবা

  |   বুধবার, ৩১ অক্টোবর ২০১৮ | প্রিন্ট

ঘুষ ছাড়া জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে মেলে না স্বাস্থ্যসেবা

ডেস্ক রিপোর্ট :  জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল। দেশের হৃদরোগীদের এক ভরসার নাম ছিল এই ইনস্টিটিউট। কিন্তু দিন দিন দুর্নীতি, অনিয়ম, ঘুষ, ওয়ার্ডবয় এবং আনসার সদস্যদের দৌরাত্ম্য বেড়েই চলেছে। ঘুষ ছাড়া এই ইনস্টিটিউটে মেলে না কোনো স্বাস্থ্যসেবা! যেন ইনস্টিটিউটটিই ‘হৃদরোগে’ ভুগছে।

>> বেড পেতে ওয়ার্ডবয়দের দিতে হয় ৫০০-১০০০ টাকা
>> ইসিজির সিরিয়াল পেতে দিতে হয় ২০০-২৫০ টাকা
>> ডেথ সার্টিফিকেট নিতেও লাগে ৪০০-৫০০ টাকা
>> ইনফেকশনে রোগীর মৃত্যুর হার বেড়েছে

দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) প্রমাণ পেয়েছে, এই ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে এখন বেডপ্রাপ্তি, সিরিয়াল ভেঙে ইসিজি, ডেথ সার্টিফিকেট নেয়ার সময় বিভিন্ন হারে ঘুষ দিতে হয়। দুটি অপারেশন থিয়েটারের একটিতে পানি পড়ে। ফলে একটি বন্ধ রয়েছে। এ ছাড়া দুটি অকেজো জীবাণুনাশক অটোক্লেভ মেশিন ব্যবহৃত হচ্ছে। জীবানুমুক্তকরণের ব্যবস্থা না করেই রোগীদের হৃদযন্ত্রের অপারেশন চলছে। ফলে গত আগস্টের পর ইনফেকশনে রোগীর মৃত্যুর হার বেড়ে গেছে।

বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগের ভিত্তিতে মঙ্গলবার ঢাকার শেরেবাংলা নগরে অবস্থিত জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে অভিযান চালায় দুদক এনফোর্সমেন্ট টিম। অভিযানে দুদক এসব অনিয়মের প্রমাণ পেয়েছে।

দুদক সূত্র জানায়, দুর্নীতির কারণে হৃদরোগ চিকিৎসা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে, দুদক অভিযোগ কেন্দ্রে (হটলাইন-১০৬) এমন অভিযোগ আসে। এরপর দুদক মহাপরিচালক (প্রশাসন) মোহাম্মাদ মুনীর চৌধুরীর নির্দেশে চার সদস্যের একটি টিম আজ আকস্মিক অভিযান চালায়।

টিমের নেতৃত্ব দেন দুদকের সহকারী পরিচালক ফারজানা ইয়াসমিন। তিনি জানান, প্রায় ৪ ঘণ্টার অভিযানে দুদক টিম জানতে পারে, হাসপাতালে বেডপ্রাপ্তির ক্ষেত্রে ওয়ার্ডবয়দের ৫০০ থেকে এক হাজার টাকার ঘুষ দিতে হয়। সিরিয়াল ভেঙে ২০০ থেকে ২৫০ টাকা ঘুষের বিনিময়ে ইমারজেন্সি ইসিজি (ইলেকট্রোকার্ডিওগ্রাফি) করানো হয়। এমনকি ডেথ সার্টিফিকেট নেয়ার সময়ও ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা ঘুষ দিতে হয়।

হাসপাতালে দুটি অকেজো জীবাণুনাশক অটোক্লেভ মেশিন ব্যবহারের বিষয়ে দুদক টিম হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে জানতে চান। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দুদককে জানান, অকেজো মেশিন মেরামতে সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান সিএমএইচডির (কেন্দ্রীয় ওষুধাগার ও যন্ত্রপাতি বিতরণ বিভাগ) সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তারা কোনো সাড়া পাননি।

দুদক সূত্র বলছে, অকেজো মেশিন হওয়ায় জীবানুমুক্তকরণের ব্যবস্থা না করেই রোগীদের হৃদযন্ত্রের অপারেশন চলছে। এতে গত আগস্টের পর ইনফেকশনে রোগীর মৃত্যুর হার বেড়ে যাচ্ছে বলে জানা গেছে।

কারিগরি ব্যবস্থাপনায় মারাত্মক ত্রুটি ও অবহেলার কারণে রোগীদের মৃত্যু এবং সার্বিক অব্যবস্থাপনার বিষয়ে হাসপাতালের একাধিক দায়িত্বশীল অধ্যাপকের কাছে দুদক কর্মকর্তারা জানতে চান।

তারা দুদক টিমকে জানান, হাসপাতালের দুটি অপারেশন থিয়েটারের মধ্যে একটি চালু আছে। অপরটিতে পানি পড়ার কারণে অপারেশন বন্ধ করে রিনোভেশন করা হচ্ছে। পানি পড়ার কারণে ইনফেকশন ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে বলে তারা স্বীকার করেন।

সেখানকার ওয়ার্ডবয় এবং দায়িত্বরত আনসার সদস্যদের দৌরাত্ম্যের কথাও অধ্যাপকরা স্বীকার করেছেন। এ প্রসঙ্গে দুদক টিমকে হাসপাতালের অধ্যাপকরা জানান, দুর্নীতিগ্রস্ত ওয়ার্ডবয় ও আনসার সদস্যদের অপসারণের বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। অতি শিগগিরই এমন দুর্নীতিবাজ কর্মচারীদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এ অভিযান প্রসঙ্গে দুদক এনফোর্সমেন্ট অভিযানের প্রধান সমন্বয়ক মহাপরিচালক (প্রশাসন) মোহাম্মাদ মুনীর চৌধুরী  বলেন, হৃদরোগ হাসপাতাল ব্যবস্থাপনায় অনুশাসন ভেঙে পড়েছে, এটা ক্ষমার অযোগ্য। এ ব্যর্থতা নিয়ে কারও দায়িত্বে থাকা উচিত নয়। দ্রুত এসব অব্যবস্থাপনা ও দুর্নীতি দূর না করতে পারলে দায়িত্বপ্রাপ্তদের দুদকের জবাবদিহির আওতায় আনা হবে। এসব ঘটনার পেছনে দুর্নীতিই প্রধান কারণ। দুদক এ বিষয়ে অনুসন্ধান শুরু করবে। সূত্র : জাগোনিউজ

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ১১:৩৫ | বুধবার, ৩১ অক্টোবর ২০১৮

Swadhindesh -স্বাধীনদেশ |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement
Advisory Editor
Professor Abdul Quadir Saleh
Editor
Advocate Md Obaydul Kabir
যোগাযোগ

Bangladesh : Moghbazar, Ramna, Dhaka -1217

ফোন : Europe Office: 560 Coventry Road, Small Heath, Birmingham, B10 0UN,

E-mail: news@swadhindesh.com, swadhindesh24@gmail.com