নিজস্ব প্রতিবেদক | শুক্রবার, ১০ মার্চ ২০২৩ | প্রিন্ট
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেছেন, বর্তমান জনসম্মতিহীন কর্তৃত্ববাদী সরকার জনগণের জীবন নিয়ে তামাশা করছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের বাজারে আগুন জ্বলছে। শ্রমজীবী ও মধ্যবিত্ত মানুষ হাস-ফাঁস করছে। মানুষের হাতে টাকা নেই কিন্তু বাজারদর বাড়ছে প্রতিনিয়ত। বাজার নিয়ন্ত্রণে বর্তমান সরকার চূড়ান্তভাবে ব্যর্থ হচ্ছে। সরকার সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করছে না সিন্ডিকেটই সরকারকে নিয়ন্ত্রণ করছে তা নিয়ে মানুষের মাঝে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে।
শুক্রবার (১০ মার্চ) শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে গণসংহতি আন্দোলন ঢাকা জেলার প্রথম সম্মেলনের উদ্বোধনী সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
জোনায়েদ সাকি বলেন, জনগণের ভোটাধিকার হরণ করে ক্ষমতায় টিকে থাকতে সরকার দেশের স্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়ে আদানি গ্রুপের সঙ্গে অবৈধ বিদ্যুৎ আমদানির চুক্তি করছে। যা ২০১৮ সালের নির্বাচনের পর ভারতের সমর্থন পাওয়ার জন্যই করা হয়েছে বলে জনগণ মনে করে। এই ধরণের কর্তৃত্ববাদী সরকার সামনের নির্বাচনেও জনগণের ভোটাধিকার হরণ করে ক্ষমতায় টিকে থাকতে চায়, কিন্তু সে সুযোগ তাদের আর জনগণ দেবে না।
তিনি বলেন, আমরা জনগণের ভোটাধিকার ও রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক রূপান্তরের লক্ষ্যে যুগপৎ আন্দোলন করছি, এই লড়াইয়ের মধ্য দিয়েই বর্তমান সরকারের পতন ঘটিয়ে জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা করব আমরা। সবাইকে সেই লড়াইয়ে আরও ঐক্যবদ্ধ ভূমিকা রাখার আহ্বান জানাই।
গণসংহতি আন্দোলনের নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল বলেন, ঢাকা শহর এখন বিস্ফোরণের নগরীতে পরিণত হয়েছে। ৭ মার্চ সিদ্দিকবাজারে বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত প্রায় ২৩ জন মানুষ নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন আরও শতাধিক মানুষ। কিন্তু সরকার এক্ষেত্রে নির্বিকার। বিস্ফোরণের ঘটনায় সরকারের অদক্ষতা ও অব্যবস্থাপনা চরম আকারে ধরা পড়েছে, সরকারি দলের সাধারণ সম্পাদক বিস্ফোরণের দায় বিরোধীদলের ওপর চাপানোর চেষ্টা করে চরম দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিয়েছেন। সরকার উন্নয়নের বাহাদুরী দীর্ঘদিন ধরেই করছেন। কিন্তু বাস্তবতা হলো উদ্ধারকাজ চালানোর মতো প্রয়োজনীয় জনবল ও যন্ত্রপাতির অভাবে উদ্ধারকাজ বিলম্বিত হচ্ছে।
আবুল হাসান রুবেল আরও বলেন, সরকারের ব্যাপক দুর্নীতি-লুটপাট ও অর্থপাচারের কারণে দেশ চরম অর্থনৈতিক সংকটের মুখে পড়েছে। ভাই-ব্রাদারদের লুটপাটের স্বার্থে দেশের বিদ্যুৎখাত ভয়াবহ বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে। কিন্তু সরকার সমস্ত দায় চাপাচ্ছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ওপরে। কিন্তু দেশের মানুষের কাছে পরিষ্কার তাদের লুটপাটের কারণেই দেশ আজ ভয়াবহ সংকটের সম্মুখীন। এই সংকট মোকাবিলায় এই সরকারকে ক্ষমতা থেকে নামানো ছাড়া মানুষের আর অন্য কোনো পথ নেই। আমরা মানুষকে সেই লক্ষ্য নিয়ে সংগঠিত আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানাই।
সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন- গণসংহতি আন্দোলনের রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য তাসলিমা আখতার, মনির উদ্দীন পাপ্পু, ঢাকা উত্তর গণসংহতি আন্দোলনের আহ্বায়ক মনিরুল হুদা বাবন, ঢাকা দক্ষিণ গণসংহতি আন্দোলনের আহ্বায়ক আলিফ দেওয়ানসহ বিভিন্ন থানার নেতৃবৃন্দ।
সমাবেশে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন গণসংহতি আন্দোলনের সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য দীপক রায়, গণসংহতি আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য অঞ্জন রায়, গণসংহতি আন্দোলনের জাতীয় পরিষদ সদস্য আরিফুল ইসলাম, গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির সাধারণ সম্পাদক বাবুল হোসেন, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি মশিউর রহমান খান রিচার্ড বিভিন্ন নেতৃবৃন্দ।
Posted ১৫:৫০ | শুক্রবার, ১০ মার্চ ২০২৩
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | Athar Hossain