| শনিবার, ০৮ জানুয়ারি ২০২২ | প্রিন্ট
মোহাম্মদ আলী ঝিলন, গাজীপুর : গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২-এর কনডেম সেল থেকে নারায়ণগঞ্জের আলোচিত সাত খুনের মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি নূর হোসেনের মোবাইল ফোন উদ্ধার হওয়ার ঘটনায় তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। শনিবার কারাগারের উপ-তত্ত্বাবধায়ক উম্মে সালমাকে প্রধান করে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির অন্য দুই সদস্য হলেন- সদস্য সচিব ডেপুটি জেলার নুরুল মবিন ও সদস্য প্রধান কারারক্ষী মো: আসাদুজ্জামান কমিটিকে ১১ জানুয়ারির মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২-এর জেল সুপার আব্দুল জলিল।
তিনি জানান, কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২-এর কনডেম সেলে নূর হোসেনসহ তিনজন বন্দি ছিলেন। গত ৫ জানুয়ারি গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সেখানে অভিযান চালিয়ে নূর হোসেনের ব্যবহৃত একটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।
জেলা সুপার বলেন, ‘কারাগারের অভ্যন্তরে মোবাইল ফোন ব্যবহারের অপরাধে নূর হোসেনের বিরুদ্ধে কারাবিধি আইনে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যে তাকে ডান্ডাবেরি পরিয়ে ওই সেল থেকে সরিয়ে অন্য কনডেম সেলে স্থানান্তর করা হয়েছে। কারাগারের ভেতর কিভাবে মোবাইল ফোন আনা হয়েছে এবং ঘটনার সাথে কারা জড়িত তা তদন্ত করা হচ্ছে।’
আগামী ১৬ জানুয়ারি নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন (নাসিক) নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ওই নির্বাচনে কাউন্সিলর পদে ৪ নম্বর ওয়ার্ডে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন নূর হোসেনের ছোট ভাই নূর উদ্দিন এবং ৩ নম্বর ওয়ার্ডে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ভাতিজা শাহ জালাল বাদল। নির্বাচনে দু’জনের প্রতীকই ঠেলাগাড়ি। নূর হোসেন তার ভাই ও ভাতিজাকে বিজয়ী করার জন্য কারাগারের কনডেম সেলে বসেই মোবাইল ফোনে নেতাকর্মীদের নির্দেশনা দিয়ে যাচ্ছিলেন বলে জানা গেছে।
উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের ফতুল্লার লামাপাড়া এলাকা থেকে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলামসহ সাতজনকে অপহরণ করে হত্যার পর লাশ শীতলক্ষ্যা নদীতে ডুবিয়ে রাখা হয়। তিন দিন পর নিহতদের লাশ উদ্ধার করা হয়। প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলাম ও তার চার সহকর্মী হত্যার ঘটনায় তার স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটি ফতুল্লা থানায় একটি এবং সিনিয়র আইনজীবী চন্দন সরকার ও তার গাড়ির চালক ইব্রাহিম হত্যার ঘটনায় জামাতা বিজয় কুমার পাল একই থানায় অপর একটি মামলা দায়ের করেন।
২০১৭ সালের ১৬ জানুয়ারি নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ সৈয়দ এনায়েত হোসেনের আদালত এ হত্যা মামলার রায়ে নূর হোসেন ও র্যাবের ৩ কর্মকর্তাসহ ২৬ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড এবং নয়জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ডের আদেশ দেন। পরে উচ্চ আদালত মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত নূর হোসেনসহ ১৫ জনের মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল রাখেন। নিম্নআদালত থেকে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত অপর ১১ জনের সাজা কমিয়ে প্রত্যেককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদান করা হয়। নূর হোসেনের বিরুদ্ধে অস্ত্র ও চাঁদাবাজিসহ একাধিক মামলা বিচারাধীন রয়েছে।
Posted ১৫:১৬ | শনিবার, ০৮ জানুয়ারি ২০২২
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | admin