| সোমবার, ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ | প্রিন্ট
মেহেরপুরে ৬৫ বছর বয়সে বাছিরন নেছা নাতি-নাতনিদের সঙ্গে পরীক্ষা দিয়ে পিইসি পাসের পর এবার ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে দাখিল ভোকেশনাল পরীক্ষা দিচ্ছে পিতা-পুত্র! পিতা-পুত্র এক সঙ্গে দাখিল ভোকেশনাল পরীক্ষায় বসায় ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। পুত্রের সঙ্গে পিতা পরীক্ষায় বসায় তরুণ প্রজন্মকে পড়ালেখায় আরও আগ্রহী করবে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
ঈশ্বরগঞ্জ বালিকা বিদ্যালয় ও মহিলা কলেজ কেন্দ্রে পরীক্ষায় বসেছে কম্পিউটার ট্রেডে ডিএস কামিল মাদ্রাসার ভোকেশনাল শাখার ছাত্র ইফতেখার জাহান রাফি। অন্যদিকে মাইজবাগ ইউনিয়নের পীতাম্বরপাড়া হুসাইনিয়া ফাজিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে রাফির পিতা ফানুর আশরাফুল উলুম মাদ্রাসার ভোকেশনাল শাখার ছাত্র মাসুদ কবীর ছোটন।
ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা সদর দত্তপাড়া গ্রামের আব্বাছ মিয়ার সাত ছেলে ও চার মেয়ের মধ্যে সবার ছোট মাসুদ কবীর ছোটন। ছোটনের বয়স যখন ৬, তখন দলিল লেখক বাবা মারা যান। বয়স ৩৬ হলেও এসএসসি পাশ করার বাসনা ছোট বেলা থেকেই দেখতেন ছোটন।
মাসুদ কবীর ছোটন বলেন, বাবা মারা যাওয়ার পর ভাইয়েরা নিজেদের সংসার নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। তার পড়ালেখায় অনেক আগ্রহ থাকলেও অষ্টম শ্রেণিতেই আটকে যায় পড়ালেখা। পড়ালেখা বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর ঈশ্বরগঞ্জ সাব-রেজিষ্ট্রি অফিসের সামনে কাজ শিখতে শুরু করেন। পরে নিজেই স্ট্যাম্প ভ্যান্ডারের কাজ করে জীবন চালাচ্ছেন।
তিনি বলেন, ছোট বেলা থেকেই ম্যাট্রিক পাশ করার ইচ্ছা থাকলেও পড়া লেখা বন্ধ হয়ে যাওয়া তা পূরণ হয়নি। দুই ছেলে ও এক মেয়ের জনক তিনি। দ্বিতীয় ছেলে ইফতেখার জাহান রাজু অষ্টম শ্রেণিতে আর মেয়ে সায়মা নার্সারি ক্লাসে পড়া লেখা করে। সন্তানদের পড়ালেখা দেখে নিজের ভেতরে ফের এসএসসি পাশ করার আগ্রহ তৈরি হয়। ভোকেশনাল শাখায় ভর্তি হয়ে কাজের পাশাপাশি পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছেন। বাবা-ছেলে পরীক্ষা দেওয়ায় স্ত্রী জাহানারও উৎসাহ দিয়ে সহযোগিতা করছে।
রোববার (৫ ফেব্রুয়ারি) ইংরেজি বিষয়ে পরীক্ষা শেষে তিনি বলেন, দুটি পরীক্ষা ভালো হয়েছে। আশা করছি আমার ম্যাট্রিক পাস করার স্বপ্ন পূরণ হবে। মাসুদ কবীর ছোটনের স্ত্রী জাহানারা বেগম বলেন, ছেলের সঙ্গে স্বামী পড়ালেখা করে এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে। এ জন্য স্বামীকে উৎসাহ দিয়ে পড়ালেখা করতে সহযোগিতা করছেন।
Posted ০৯:২০ | সোমবার, ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৭
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | Athar Hossain