নিজস্ব প্রতিবেদক | মঙ্গলবার, ২২ নভেম্বর ২০২২ | প্রিন্ট
নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদ ও দলীয় প্রধানের মুক্তিসহ যেসব দাবিতে বিএনপি যেসব কর্মসূচি পালন করছে সেগুলোতে আসল ঘোষণা ছিল না বলে জানিয়েছেন দলটির মহাসচিবের মির্জা ফখরুল। আগামী ১০ ডিসেম্বর আসল ঘোষণা আসবে বলে জানান তিনি।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এখনো আসল ঘোষণা দেয়নি। ডিসেম্বরের ১০ তারিখে আসল ঘোষণা আসবে।’
মঙ্গলবার (২২ নভেম্বর) বিকেলে নয়াপল্টনে বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত সমাবেশে ১০ ডিসেম্বর নিয়ে কথা বলেন ফখরুল।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আগামী ১০ ডিসেম্বর থেকে এক দফার আন্দোলন শুরু হবে। সেদিন নয়াপল্টনের সমাবেশ থেকে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের এক দফার কর্মসূচি শুরু হবে।
মাস দুয়েক ধরেই দেশের রাজনীতিতে উত্তেজনা বাড়ছে। এর মধ্যে ১০ ডিসেম্বর ঘিরে দেশের প্রধান দুই রাজনীতিক দলের নেতাদের পাল্টাপাল্টি বক্তব্যের কারণে ডিসেম্বরের এই তারিখ নিয়ে নানা আলোচনা-গুঞ্জন চলছে সর্বমহলে।
এই আলোচনা শুরু হয়েছিল বিএনপি নেতা আমান উল্লাহ আমানের এক বক্তব্যের মধ্য দিয়ে। কয়েক সপ্তাহ আগে ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে আমান উল্লাহ বলেছিলেন, ১০ ডিসেম্বরের পর বাংলাদেশের সব কিছু পরিচালিত হবে খালেদা জিয়ার কথা মতো। একই সঙ্গে বিএনপির পক্ষ থেকে বিভিন্ন ধরনের বক্তব্য দেওয়া হচ্ছে। তাদের কোনো কোনো নেতা বলছেন যে, তাদের নেতা তারেক রহমান দেশে ফিরবেন।
বিএনপি নেতাদের বক্তব্যের প্রেক্ষিতে কড়া জবাব এসেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকেও। কিছুদিন ধরেই আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলে আসছেন ‘খেলা হবে’। এর মধ্যে দিয়ে তিনি বিএনপিকে একটা বার্তা দিয়েছেন। কাদেরের মতে, খেলা হবে সাংগঠনিক শক্তি প্রদর্শন করে রাজনীতির মাঠ দখলেও।
এছাড়া ক্ষমতাসীন দলের অনেক নেতাও ১০ ডিসেম্বর ঘিরে বিএনপি কোনো অপতৎপরতা করতে চাইলে কড়া জবাব দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
দুই দলের নেতাদের পাল্টাপাল্টি বক্তব্যের মধ্যে আজ আবারও ডিসেম্বর ১০ তারিখ নিয়ে কথা বলেন বিএনপি মহাসচিব।
এতদিন ধরে চালিয়ে আসা আন্দোলন কর্মসূচিতে আসল ঘোষণা ছিল না জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, এখনো তো আসল ঘোষণা দেইনি, আসল ঘোষণা আসবে ১০ তারিখ। সেদিন থেকে শুরু হবে এক দফার আন্দোলন।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘মানুষের জীবন নিয়ে খেলছে সরকার, আন্দোলনে ফেটে পড়তে হবে, সরকারকে বাধ্য করতে হবে পদত্যাগ করতে। ১০ ডিসেম্বর নতুন ঘোষণা আসবে, একদফা এক দাবি; হাসিনার পতনের কর্মসূচি আসবে।’
১০ ডিসেম্বরের সমাবেশ নিয়ে ফখরুল বলেন, ‘১০ তারিখে এইখানেই (নয়াপল্টনে) সমাবেশ হবে। এটা জনগণের ঘোষণা।’
আন্দোলনের জন্য নেতাকর্মীদের প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানিয়ে বিএনপির এই নেতা বলেন, আওয়ামী লীগ আমাদের জীবন নিয়ে খেলছে। আমাদের সাতজনকে হত্যা করেছে। আজকে ফেটে পড়তে হবে। অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে হবে। জেগে উঠতে হবে। এমনি এমনি কেউ সরে না, সরাতে হবে। মানুষের বল দিয়ে শক্তি দিয়ে এদেরকে চলে যেতে বাধ্য করতে হবে।
সরকারকে উদ্দেশ্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা সাতটি সমাবেশ করেছি। প্রতিটি সমাবেশে বাধা দিয়েছে সরকার। এরা কত বড় ভীরু, কাপুরুষ। গাড়ি বন্ধ করে দেয়, লঞ্চ বন্ধ করে দেয়, লেগুনা বন্ধ করে দেয়। তাতে কি সমাবেশ বন্ধ করতে পেরেছে? তিন ঘণ্টার সমাবেশকে তোমরা তিন দিন বানিয়েছ।’
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালাম। সঞ্চালনায় ছিলেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি’র সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনু এবং উত্তরের সদস্য সচিব আমিনুল হক।
সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানুল্লাহ আমান, বিএনপি নেতা শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, মীর সারাফত আলী সপু, ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন, যুবদলের সাবেক সভাপতি সাইফুল আলম নীরব, কৃষিবিদ শামিমুর রহমান শামীম, যুবদলের সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, মহিলা দলের আফরোজা আব্বাস, হেলেন জেরিন খান, ছাত্রদলের কাজি রওনাকুল ইসলাম শ্রাবণ ও সাইফ মাহমুদ জুয়েল প্রমুখ।
Posted ১৬:১৫ | মঙ্গলবার, ২২ নভেম্বর ২০২২
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | Athar Hossain