| মঙ্গলবার, ০৬ মার্চ ২০১৮ | প্রিন্ট
ক্ষমতায় টিকে থাকতে আওয়ামী লীগ সরকার বাংলাদেশকে ব্যর্থ ও জঙ্গি রাষ্ট্রে পরিণত করতে চায় বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আর এই চক্রান্তের অংশ হিসেবেই বরেণ্য শিক্ষাবিদ মুহম্মদ জাফর ইকবালের ওপর হামলা হয়েছে কি না, সেই প্রশ্ন রেখেছেন তিনি।
দুর্নীতির মামলায় দণ্ড পাওয়া বিএনপি প্রধান বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে মঙ্গলবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে দলের পক্ষ থেকে এক মানববন্ধনে এ কথা বলেন ফখরুল।
বেলা ১১টার আগে থেকেই শুরু হয় মানববন্ধন। শেষ হয় নির্ধারিত সময় বেলা ১২টায়। নির্ধারিত সময়ের আগেই রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা প্রেসক্লাবের সামনে এসে জড়ো হন।
এ সময় গত ৩ মার্চ সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপক জাফর ইকবালের ওপর হামলা নিয়ে কথা বলেন ফখরুল। ফখরুলের সন্দেহ এই ঘটনায় আওয়ামী লীগ জড়িত।
হামলার পর দিন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, যে শক্তি জাফর ইকবালের ওপর হামলা করেছে, সেই শক্তিকে মদদ দেয় বিএনপি। পরদিন রাজধানীতে এক আরেক আয়োজনে কাদের বলেন, সেই অপশক্তিকে মদদ দেয়া বন্ধ না করলে নির্বাচনে এর জবাব পাবে বিএনপি
আর কাদেরের এই বক্তব্যের জবাবে ফখরুল বলেন, ‘সরকার দেশকে সম্পূর্ণ অকার্যকর করতে ষড়যন্ত্র করছে। এর অংশ হিসেবেই প্রখ্যাত সাহিত্যিক জাফর ইকবালকে প্রকাশ্য দিবালোকে চুরিকাঘাত করা হলো।’
‘এবং কোনো তদন্ত না করেই বলে দেয়া হলো, এর জন্য বিএনপি দায়ী। অথচ যাদের ধরা হলো তারা সবাই আওয়ামী লীগের লোক।’
‘আজকে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন এসে যাবে তাহলে কি আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় টিকে থাকবার যে হীন উদ্দেশ্য, সেই উদ্দেশে দেশকে একটা অকার্যকর ও জঙ্গিরাষ্ট্রে পরিণত করতে চায়?’।
সম্পূর্ণ মিথ্যা মামলায় খালেদা জিয়াকে দণ্ড দেয়া হয়েছে অভিযোগ করে ফখরুল বলেন, ‘তাকে (খালেদা জিয়া) আইনি অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। যে কারণে বিএনপি চেয়ারপারসনকে জামিন দেয়া হচ্ছে না।.. চলছাতুরীর মাধ্যমে তার মুক্তিকে বিলম্বিত করছে যাতে তাকে কারাগারে রেখে একদলীয় নির্বাচন করতে চায়।’
দেশের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘যারা বৈধভাবে, গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত নয় তাদের অধীনে দেশে নির্বাচন হতে পারে না। তাই আমরা পরিষ্কারভাবে বলতে চাই দেশনেত্রীকে মুক্তি দিতে হবে।’
‘সংসদ ভেঙে দিতে হবে। সকল দলের জন্য সমান সুযোগ তৈরি করতে হবে। সকল মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। একটি গণতান্ত্রিক পরিবেশ তৈরি করতে হবে। সেই নির্বাচনে অবশ্যই বিএনপিসহ সকল গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল অংশ নেবে। সেই নির্বাচনে এই ফ্যাসিস্ট, একনায়ক সরকারের পতন হবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।’
খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিয়ে দেশে একটি ‘সুন্দর পরিবেশ তৈরি’র মাধ্যমে ‘সুষ্ঠু নির্বাচনের’ দাবি জানান ফখরুল। বলেন, ‘আগামী নিবার্চনে সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে হতে হবে। অন্যথায় বাংলার মানুষ মেনে নেবে না।’
এই কর্মসূচিকে ঘিরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনের এলাকায় ব্যাপক নিরাপত্তার ব্যবস্থা করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। আর মানববন্ধন থেকে ফেরার পথে বিএনপির সহযোগী সংগঠন স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি শফিউল বারী বাবুকে আটক করে পুলিশ।
বাবুকে আটকের খবর মানববন্ধনে ছড়িয়ে পড়লে নেতাকর্মীরা ছোটাছুটি শুরু করেন। সে কারণে কর্মসূচি শেষ হওয়ার আগেই মির্জা ফখরুলসহ কেন্দ্রীয় নেতারা যেখানে দাঁড়িয়ে বক্তব্য দিচ্ছিলেন তার আশপাশ ফাঁকা হয়ে যায়।
Posted ১৪:২১ | মঙ্গলবার, ০৬ মার্চ ২০১৮
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | Athar Hossain