শুক্রবার ২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম >>
শিরোনাম >>

এলো স্বাধীনতার মাস

  |   সোমবার, ০১ মার্চ ২০২১ | প্রিন্ট

এলো স্বাধীনতার মাস

অগ্নিঝরা মার্চের প্রথম দিন আজ। এই মাস বাঙালির স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসের সাক্ষী। ১৯৭১ সালের এই মাসে তীব্র আন্দোলনের পরিণতিতে শুরু হয় মহান স্বাধীনতা যুদ্ধ। বাংলার আন্দোলন সংগ্রামের ঘটনাবহুল ও বেদনাবিধুর স্মৃতি বিজড়িত ১৯৭১-এর এই মার্চ মাসেই জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে শুরু হয় অসহযোগ আন্দোলন। পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে দীর্ঘ ২৩ বছরের আন্দোলন সংগ্রামের চূড়ান্ত পর্বে এসে শুরু হয় সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধ।

দীর্ঘ নয় মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর বিশ্ব মানচিত্রে অভ্যুদয় ঘটেছিল বাংলাদেশ নামক স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রের। ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ স্বাধীন বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠা হলেও চূড়ান্ত আন্দোলনের সূচনা হয়েছিল একাত্তরের ১ মার্চ থেকেই।

বছর ঘুরে এক অন্যরকম পরিবেশে এবার বাঙালির জীবনে এসেছে মার্চ। এবারের মার্চটি ভিন্ন আঙ্গিকে পালিত হবে। এবার দেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী। সরকারিভাবে মার্চসহ গোটা বছরই নানা কর্মসূচির মাধ্যমে জাঁকজমকভাবে উদযাপন করা হবে।

বিভিন্ন রাজনৈতিক দলসহ মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তিগুলো ভিন্ন কর্মসূচি পালন করবে। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর উৎসব শেষ হবে বিজয় দিবস ১৬ ডিসেম্বর। একই দিনে শেষ হবে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে সরকার ঘোষিত মুজিববর্ষের অনুষ্ঠানও।

১৯৭১ সালের ১ মার্চ, সারা দেশই তখন অগ্নিগর্ভ। পাকিস্তানের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান এদিন বেতার ভাষণে ৩ মার্চের গণপরিষদের অধিবেশন স্থগিত ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, পাকিস্তানের একটি প্রধান দল পিপলস পার্টি এবং অন্য কয়েকটি দল ৩ মার্চ অনুষ্ঠেয় জাতীয় পরিষদের অধিবেশনে যোগদান না করার ইচ্ছা প্রকাশ করায় এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। বেতারে এ ঘোষণা প্রচারের সঙ্গে সঙ্গে রাজধানী ঢাকা প্রচণ্ড বিক্ষোভে ফেটে পড়ে।

এ সময় তৎকালীন ঢাকা স্টেডিয়ামে (বর্তমান বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম) পাকিস্তান বনাম বিশ্ব একাদশের ক্রিকেট খেলা চলছিল। ইয়াহিয়া খানের ওই ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে দর্শক খেলা ছেড়ে বেরিয়ে আসে। ততক্ষণে হাজারো মানুষ পল্টন-গুলিস্তানে বিক্ষোভ শুরু করে দিয়েছে। সেই আন্দোলন শেষ পর্যন্ত স্বাধীনতার আন্দোলনে রূপ নেয়।

সেদিন মতিঝিল-দিলকুশা এলাকার পূর্বাণী হোটেলে আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের পূর্বনির্ধারিত বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। ক্ষুব্ধ ছাত্ররা সেখানে গিয়ে প্রথমবারের মতো স্লোগান দেয়, ‘বীর বাঙালি অস্ত্র ধর, বাংলাদেশ স্বাধীন কর’। ছাত্ররা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কাছে কর্মসূচি ঘোষণার দাবি জানায়। বিক্ষোভ-স্লোগানে উত্তাল হয়ে ওঠে ঢাকাসহ গোটা দেশ।

উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে পূর্বাণী হোটেলেই বঙ্গবন্ধু আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। বাইরে চলছে বিক্ষুব্ধ বাঙালির কঠোর কর্মসূচির দাবিতে মুহুর্মুহু স্লোগান। বৈঠক শেষে বঙ্গবন্ধু ২ ও ৩ মার্চ তৎকালীন পাকিস্তানে সর্বাত্মক হরতালের ডাক এবং ৭ মার্চ তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) জনসভার ঘোষণা দেন।

সেই শুরু। এরপর ১ মার্চ পেরিয়ে ২ মার্চ। একে একে পার হয় ঝঞ্ঝাবিক্ষুব্ধ ২৫টি দিন। ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী নিরস্ত্র বাঙালির ওপর আক্রমণ চালায়, শুরু হয় সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধ। এই পথ ধরে বাঙালি দামাল ছেলেরা এক সাগর রক্তের বিনিময়ে ছিনিয়ে আনেন একটি স্বাধীন দেশ—গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ১৩:৪২ | সোমবার, ০১ মার্চ ২০২১

Swadhindesh -স্বাধীনদেশ |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement
Advisory Editor
Professor Abdul Quadir Saleh
Editor
Advocate Md Obaydul Kabir
যোগাযোগ

Bangladesh : Moghbazar, Ramna, Dhaka -1217

ফোন : Europe Office: 560 Coventry Road, Small Heath, Birmingham, B10 0UN,

E-mail: news@swadhindesh.com, swadhindesh24@gmail.com