বুধবার ২২শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৮ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পবিত্র শবেবরাতে যা যা করণীয়

  |   সোমবার, ২২ এপ্রিল ২০১৯ | প্রিন্ট

পবিত্র শবেবরাতে যা যা করণীয়

শবে বরাতের কথা শুধু বাস্তবতা ও প্রয়োজনীয়তাই নয় ইহা কোরআন শরিফ ও হাদিসের আলোকে প্রমাণিত। আমরা আল্লাহর বান্দা।বন্দেগিই আমাদের কাজ। বান্দার ত্রুটি-বিচ্যুতি ক্ষমা করার জন্য কিছু নির্দিষ্ট দিন ও রাত আল্লাহ তায়ালা দান করেছেন। দিনের মধ্যে ঈদ-উল-ফিতর,ঈদে মিলাদুন্নবী (স.)আশুরার দিন, আরাফার দিন,জুমার দিন।রাতের মধ্যে শবে কদর, শবে মিরাজ,শবে বরাত,দুই ঈদের রাত। লক্ষ্য করা যায়,বিভিন্ন সরকারও বছরে কিছু কিছু দিন ধার্য করে কয়েদিদের মুক্ত করার জন্য। মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে তেমনি এসব দিন ও রাত মূলত এই দিবস ও রজনী আমাদের প্রাণের চেয়েও প্রিয় নবী (স.)-কে দেওয়া আল্লাহর বিশেষ উপহার।এসব উপহারের মর্যাদা যথাযথভাবে কাজে লাগিয়ে গুনাহ থেকে মুক্ত হয়ে আল্লাহর নৈকট্য হাসিলের সৌভাগ্য অর্জন করা আমাদের সকলের লক্ষ্য হওয়া উচিত।

শবে বরাত:

শব অর্থ ‘রাত’ বরাত অর্থ ‘ভাগ্য’ অতএব এর সমষ্টিগত অর্থ হলো ভাগ্যের রাত বা ভাগ্য নির্ধারণের রাত। এ ছাড়া শবে বরাত মুক্ত হওয়া বা বিচ্ছেদের রাত অর্থে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। যেহেতু, অপরাধীরা আল্লাহর রহমত থেকে বঞ্চিত থাকে। এ ক্ষেত্রে বান্দার বন্দেগির সম্পর্ক বিচ্ছেদ হয়। আর আল্লাহর ওলিগণ পার্থিব অপমান-লাঞ্ছনা থেকে মুক্ত হয়ে যায় (ইবনে মাজাহ)। শাবান মাসের ১৪ তারিখ দিবাগত রাতই শবে বরাতের রাত।শাবান অর্থ শাখা-প্রশাখা হওয়া। অর্থাৎ মাহে রমজানের অবারিত কল্যাণ ও বরকত হাসিলের বিভিন্নমুখী দ্বার খুলে দেওয়া হয়।আর তাই রসুলে করিম (স.)রজব মাস থেকে দোয়া করেছেন।হে আল্লাহ, রজব ও শাবানের অবারিত কল্যাণ ও বরকত দান কর এবং রমজান পর্যন্ত পৌঁছার তৌফিক দান কর।পবিত্র কোরআনের আলোকে শবে বরাত: সুরা দুখানের ৩ নম্বর আয়াতে ইরশাদ হচ্ছে,‘আমি একে(কোরআন মজিদকে)বরকতপূর্ণ রাতে নাজিল করেছি।’আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (র.) আবু হুরায়রা (রা.)হজরত ইকরামা (রা.)সহ বহু সাহাবি-তাবেয়ির মতে,১৪ শাবান দিবাগত রাতকেই বোঝানো হয়েছে।

হাদিস শরিফের আলোকে শবে বরাত: আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.)বলেন, হা-মিম অর্থাৎ আল্লাহ নির্ধারণ করেছেন কিয়ামত পর্যন্ত যা ঘটবে।কিতাব-সুস্পষ্ট কিতাবের শপথ! লাইলাতুল মুরাবকাহ হলো-শাবান মাসের ১৪ তারিখ দিবাগত রাত,আর তাই লাইলাতুল বরাত (গুনিয়াতুত তালিবিন)।ইকরামা (রা.)বলেন, রাসুল (স.)বলেছেন,আল্লাহ তায়ালা জিবরাইল (আ.)-কে ওই রাতে প্রথম আকাশে প্রেরণ করেন। ওই রাত হলো শাবান মাসের ১৪ তারিখের দিবাগত রাত। এ রাতকে মোবারক নাম রাখার কারণ হলো যেহেতু ওই রাতে বরকত কল্যাণ নাজিল হয়।(গিয়াসুল লুগাত)। আলী (রা.) থেকে বর্ণিত, প্রিয় রাসুলে করিম (স.) ইরশাদ করেছে, যখন শাবানের ১৫ তারিখ হয়, সে রাতে আল্লাহর সম্মুখে দাঁড়িয়ে ইবাদত কর,দিনে রোজা রাখ। কেন না,এ রাতে সূর্য অস্ত যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আল্লাহ দুনিয়ার নিকটবর্তী আসমান থেকে বলতে থাকেন কেউ কী আছে ক্ষমাপ্রার্থী,যাকে আমি ক্ষমা করব?রিজিক প্রার্থী কেউ আছে কী,যাকে আমি রিজিক দেব? বিপদগ্রস্ত কেউ আছে কী? যাকে আমি সুস্থতা দান করব। এমনিভাবে সুবেহ সাদিক পর্যন্ত আল্লাহর তরফ থেকে বান্দাদের উদ্দেশ্য ঘোষণা হতে থাকে।(ইবনে মাজাহ)

শবেবরাতে যা যা করণীয়:

বিভিন্ন হাদিস থেকে জানা যায়—এ রাতে আমাদের করণীয় কী। নিম্নে বিশদ আলোচনা করা হলো-

ইবাদত করা: এ রাতে গোসল করা মোস্তাহাব, গোসলের পর দুরাকাত তাহিয়াতুল অজুর নামাজ, অতঃপর দুরাকাতের নিয়তে প্রত্যেক রাকাতে আলহামদু (সুরা ফাতিহা) সুরা ইখলাছ সহকারে ৮ রাকাত নামাজ পড়তে হয় বলে বর্ণিত আছে। আরও দুই রাকাত নামাজ আছে,যিনি পড়বেন তাকে আল্লাহ তায়ালা তিনটি পুরস্কার দেবেন। রিজিক বাড়িয়ে দেবেন, দুঃখ-দুর্দশা লাঘব করবেন আর গুনাহ মাফ করবেন।

রোজা রাখা: 

রোজা রেখে ইবাদত করা,ইবাদত করে রোজা রাখা-দুটোই উত্তম।কেন না,সারা দিন রোজা রেখে ইবাদত করলে ইবাদতে মন বসে।যাবতীয় গুনাহের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করতে হবে। কোরআন তিলাওয়াত করতে হবে।রিজিকের জন্য দোয়া করতে হবে। তওবা করতে হবে। তওবা তিনটির সমন্বয়ে হয়-কৃতকর্মের জন্য অনুতপ্ত হতে হবে,পাপ সম্পূর্ণভাবে পরিহার করতে হবে এবং ভবিষ্যতে পাপ না-করার অঙ্গীকার করতে হবে। উভয় জাহানের কল্যাণ কামনা করতে হবে। নফল নামাজ পড়তে হবে। কবর জিয়ারত করতে হবে।

লেখক : সাংবাদিক

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ০৫:৩৯ | সোমবার, ২২ এপ্রিল ২০১৯

Swadhindesh -স্বাধীনদেশ |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement
Advisory Editor
Professor Abdul Quadir Saleh
Editor
Advocate Md Obaydul Kabir
যোগাযোগ

Bangladesh : Moghbazar, Ramna, Dhaka -1217

ফোন : Europe Office: 560 Coventry Road, Small Heath, Birmingham, B10 0UN,

E-mail: news@swadhindesh.com, swadhindesh24@gmail.com