
| শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০১৩ | প্রিন্ট
ঢাকা: বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থ সরকারের মন্ত্রীদেরকে ‘সাবেক মন্ত্রী’ উল্লেখ করে বলেছেন, পদত্যাগ করার পর তাদের আর মন্ত্রী পরিচয় দেয়ার কোন অধিকার নেই। গুলশানে নিজ কার্যালয়ে দেয়া সাক্ষাৎকারে ১৮ দলীয় জোটের এই নেতা বলেন, পদত্যাগ নিয়ে এই মশকরা করার কারণে একদিন আইনের মুখোমুখী হতে হবে তাদের। তিনি বলেন, জনগণের কাছে সরকারের আর কোন গ্রহণযোগ্যতা নেই। নিরুপায় হয়ে এখন তারা ১৮ দলীয় জোট ভাঙার ষড়যন্ত্র করছে। কিন্তু তা সফল হবে না। ১৮ দলীয় জোট এখন মহানগর এক্সপ্রেস ট্রেনের মতো গতিশীল হয়েছে। ইনশাআল্লাহ এখন এর গন্তব্য থেকে বিচ্যুত করার কেউ নেই। এখান থেকে কেউ সরে গেলে সে নিজেই ছিটকে পড়বে; জোটের কিছুই হবে না।
পার্থ বলেন, ১৮ দলীয় জোট একটি ‘বিস্ময়কর সমন্বয়’। আমরা ছোট ছোট দল জনগণের জন্য চিন্তা করলেও তা বাস্তবায়ন করতে পারতাম না। জোটের মাধ্যমে আমরা তা পারছি। আওয়ামী লীগ দিন বদলের নামে দেশের ঘরে ঘরে মাদক ঢুকিয়ে দিয়েছে। এক কোটি তরুণকে ঘুম পাড়িয়ে রেখেছে। এক সমাবেশে আমি এটা বলার পরই বিরোধী দলীয় নেতা মাদকমুক্ত দেশ গঠনের ঘোষণা দেন। মাদকমুক্ত দেশ গঠনের জন্য ১৮ দলীয় জোট ব্যাপক পরিকল্পনা নিয়েছে। জোটের বাইরে থাকলে জনগুরুত্বপূর্ণ হলেও আমার এই চিন্তা বাস্তবায়ন হতো না। আমার কোন পরামর্শ যুক্তিযুক্ত হলে তা বিরোধী দলীয় নেতা শোনেন। এটা একটা বিরাট ব্যাপার। সুতরাং জোট ভাঙার চেষ্টা সফল হবে না। তিনি বলেন, এখন কৃত্রিমভাবে শেয়ার বাজারের দাম বাড়িয়ে জনগণকে প্রলুব্ধ করছে সরকার। কিন্তু সরকারের পাঁচ বছরের দুর্নীতি আর দুঃশাসনের কথা জনগণ ভোলেনি।
নির্বাচনের প্রস্তুতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিরোধী দলের পক্ষ থেকে চিঠি দেয়ার পরও সমঝোতার কোন উদ্যোগ নেয়নি সরকার। দুই নেত্রীর ফোনালাপের পর স্পষ্ট হয়েছে যে, সরকার আর কোন সমঝোতা চায় না। বিএনপির শীর্ষনেতাদেরকে আবারও রিমান্ডে নিয়ে প্রমাণ করেছে তারা সমঝোতা চায় না। পাঁচ বছরে গুম, হত্যা, মামলা-হামলা দিয়ে যে ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টি করেছে তাতে কোনভাবেই আওয়ামী লীগকে বিশ্বাস করে না জনগণ। আমরা যদি বুঝতাম, তারা একটা সুন্দর নির্বাচন দেবে তাহলে, বাইরে থেকে লোক এনে তত্ত্বাবধায়ক বানিয়ে নির্বাচন করার দরকার ছিল না। আমাদেরকে সেই বিশ্বাস করাতে পারেনি আওয়ামী লীগ। আমাদের উপর যেভাবে স্টিম রোলার চালিয়েছে তাতে কোনভাবেই তাদের অধীনে নির্বাচনে যাওয়া যায় না। আগে লাঠির আঘাত আসত, এখন বুলেটের আঘাত আসে। আগে কিছুটা রাজনৈতিক সদাচারণ ছিল। এখন ফ্যাসিস্ট আচরণ শুরু হয়েছে। তারপরও রাস্তায় নামছে মানুষ। সুতরাং, আন্দোলনই এখন আমাদের কর্মসূচি। সামনে হরতাল ও অবরোধের কর্মসূচি দেয়া হবে।
হরতালে হতাহতের বিষয়ে তিনি বলেন, হরতালে সহিংসতা হচ্ছে। কোন রাজনীতিবিদ এর দায় এড়াতে পারেন না। সবাইকেই এর জন্য জনগণের কাছে দায়ী থাকতে হবে।
তিনি বলেন, ভোটাধিকার মানুষের বেসিক ফান্ডামেন্টাল রাইট। এই ভোটাধিকারের জন্য বৃহত্তর স্বার্থেই কঠিন কর্মসূচি দিতে হচ্ছে। আমরা জনগণের ভোটের অধিকারের জন্য ফাইট করছি। এ কারণেই হামলা, মামলা আর নেতাদের বাড়ীতে তল্লাশী শুরু হয়েছে। আন্দোলনের পাশাপাশি আমরা কিভাবে আগামী বাংলাদেশ গড়ে তুলবো তা স্পষ্ট করছি।
আওয়ামী লীগের নির্বাচনের প্রস্তুতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, একতরফা নির্বাচন বাংলাদেশের মানুষ চায় না। জনগণ ভোট দিতে যাবে না। এটা একটা রসিকতা হবে।
কূটনৈতিক দৌড়ঝাপ প্রসঙ্গে তরুণ এই রাজনীতিক বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ভারতের এটা বোঝা উচিত যে, কোন রাজনৈতিক দল নয়, বাংলাদেশের মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে হবে। জনগণের পালস্ বুঝতে হবে। মানুষ এখন আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে দাড়িয়েছে। কোন দেশের বিরুদ্ধে দাঁড়াতেও বাংলাদেশের মানুষের সময় লাগবে না।
আওয়ামী লীগের সমালোচনা করে তিনি বলেন, তারা উন্নয়নকে পাশ কাটিয়ে জাতিকে বিভক্ত করার রাজনীতি করে। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষ বিপক্ষ নিয়ে অর্থহীন বিতর্ক সৃষ্টি করেছে। বাক স্বাধীনতার সুযোগ নিয়ে তারা ইসলামের বিরুদ্ধে বিভ্রান্তিকর বক্তব্য দিয়েছে। ইসলাম বিদ্বেষীদেরকে জাতীয় বীর বানিয়েছে। আওয়ামী লীগের পরাজয় এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ বেআইনীভাবে পরের সংসদের হাত পা বেধে দেয়ার ব্যবস্থা করেছে সংবিধানে। মনে রাখতে হবে, সংবিধান মানুষের জন্য। আর সুপ্রীম কোর্ট হচ্ছে সংবিধানের গার্ডিয়ান। সুতরাং, জনগণের ইচ্ছার ভিত্তিতেই এই সংবিধান পুনঃসংশোধিত হবে।
Posted ০৩:০৩ | শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০১৩
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | admin