
| বৃহস্পতিবার, ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ | প্রিন্ট
যার নং ৭০১/০৭। ওই মামলায় ২০১০ সালে বাদী হালিম ডিক্রি লাভ করেন। ওই ডিক্রি জারি মামলায় বিজ্ঞ আদালত কমিশন নিয়োগ করে ২০১৬ সালের ৯ই মে জমির দিক ও সীমানা নির্ধারণ করে ঢাক-ঢোল পিয়ে গ্রামবাসীর উপস্থিতিতে জমির দখল হালিম বরাবর বুঝিয়ে দেয়া হয়। এর পর হালিম মিয়া জমিতে বেড়া দিয়ে বিভিন্ন ধরনের গাছ ও ফসল লাগিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে দখল ভোগ করে আসছেন।
হঠাৎ করে গত ১১ই জানুয়ারি স্থানীয় সন্ত্রাসী আওয়ামী লীগের কর্মী দাবি করা সেলিমের নেতৃত্বে ও পুলিশের সহায়তায় জমিটি দখল করে নেয় মান্নারা। দখলকারীরা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র লাঠি, কুড়াল, কোদাল, বল্লম নিয়ে জমিতে প্রবেশ করে। এ সময় জমিতে থাকা গাছ ও ফসল ধংস করে। এতে প্রায় দুই থেকে আড়াই লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। পাশাপাশি ভূমিদস্যুরা হালিমকে হত্যার হুমকি দেয়। ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকা পুলিশ সদস্যরা হলেন- এসআই জানে আলম, আফজাল ও মাহমুদুর।
জানা গেছে, সেলিম দলিল লেখক হিসেবেও পরিচিত। সে জাল দলিল তৈরি করে বিভিন্নভাবে মানুষকে হয়রানি করে বলে অভিযোগ রয়েছে। হালিমের জমির বিষয়েও একটি জাল দলিল তৈরি করে থানা পুলিশকে ম্যানেজ করেছে বলেও তার রিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
আদালতের রায় এভাবে অমান্য করে অবৈধভাবে দখলের ঘটনায় এলাকার বিশিষ্টজনেরা হতবাক। তারা জানান, হালিম যেমন আদালতের মাধ্যমে জমি বুঝে পেয়েছেন তেমনি অবৈধ দখলকারী মান্নারাও আদালত পর্যন্ত যেতে পারতেন।
জমির মালিক হালিম মিয়া বলেন, ঘটনার দিন পুলিশ ও সেলিম আমার কাছে আসে। বলে- ‘তোর জমির দলিল বের কর। তোর বাপ জমি কিনছিল? তুই কিসের জমি পাবি।’ এ ছাড়া এ সময় তার সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন। অথচ সেলিমের এখানে কেনো ভূমিকা রাখার কথা নয়।
হালিম মিয়া জানান, এখন আমি খুবই নিরাপত্তাহীন অবস্থায় আছি। এমনকি দখলকারী সন্ত্রাসীরা নিজেদের বাড়িতে আগুন লাগিয়ে আমার উপর দোষ চাপানোর চেষ্টা করতে পারে বলে শোনা যাচ্ছে। এর আগেও নিজেদের বাড়িতে আগুন লাগিয়ে আমাদের উপর মামলা করেছিল বলে জানান তিনি।
এ বিষয়ে সেলিমের কাছে জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি পুরোপুরি অস্বীকার করেন। বলেন, আমি ঘটনাস্থলে ছিলাম। থাকতে থাকতেই মান্নারা জমি দখল করে নিয়েছে।
স্থানীয় ১০ নম্বর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান (মন্টু) বলেন, সেলিমের কারণে আওয়ামী লীগের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। আমি অনেকবার তাকে অসামাজিক কার্যকলাপ থেকে বিরত থাকতে নিষেধ করেছি। কিন্তু সে শোনেনি। উল্টো দলের উপজেলা নেতৃবৃন্দের কাছে আমার বিরুদ্ধে নালিশ করেছে। এ ছাড়া একই দলের হওয়ায় সব সময় কিছু বলতে পারি না। এজন্য সেলিম কোনো স্থানে থাকলে আমি ওখানে থাকি না।
এ বিষয়ে পীরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সরেস চন্দ্র বলেন, জমি দখলের বিষয়টি আমার জানা। কোনো ধরনের হতাহতের ঘটনা যাতে না ঘটে সেজন্য পুলিশ প্রথমডাঙ্গা গ্রামে গিয়েছিল। আদালত কমিশন নিয়োগ করে জমি বুঝিয়ে দিয়েছে, এ ছাড়া আদালতের রায় থাকা অবস্থায় কিভাবে জমি দখল করে, এমন প্রশ্নের জবারে ওসি বলেন, কমিশনের কথা বাদ দেন। একতরফা রায় হলে ঢাক-ঢোল পিটিয়ে কমিশন বলে জমি আপনার। এসব কমিশনের কোনো ইয়ে নাই।
জমির বিষয়টি মীমাংসা করার জন্য রংপুর পুলিশ সুপার ও রংপুর রেঞ্জের ডিআইজি (অপরাধ) এবিএম জাহিদ হোসেন পীরগঞ্জ উপজেলা ওসিকে তাৎক্ষণিক নির্দেশ দেন। কিন্তু তাদের আদেশও মানছেন না ওসি।
Posted ১৮:৫০ | বৃহস্পতিবার, ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | Mahbub