| বৃহস্পতিবার, ০৭ এপ্রিল ২০২২ | প্রিন্ট
করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে গত দুই বছর কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় ঈদের জামাত হয়নি। এবার শোলাকিয়ায় ঈদুল ফিতরের নামাজ অনুষ্ঠিত হবে। এটি হবে ঈদুল ফিতরের ১৯৫তম জামাত।
বুধবার দুপুরে জেলা প্রশাসকের সভাকক্ষে আয়োজিত শোলাকিয়া ঈদগাহ পরিচালনা কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ঈদগাহ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শামীম আলম সভায় সভাপতিত্ব করেন।
সভা শেষে জানানো হয়, করোনা পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি হওয়ায় সরকারের উচ্চ পর্যায়ের পরামর্শে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তবে, এবারও নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে শোলাকিয়ার জামাত আয়োজন করা হবে।
ঈদের দিন সকাল ১০টায় এ জামাত শুরু হবে। এতে ইমামতি করবেন বাংলাদেশ ইসলাহুল মুসলেমিন পরিষদের চেয়ারম্যান মাওলানা ফরিদ উদ্দিন মাসউদ। জামাতে জায়নামাজ ও মাস্ক ছাড়া আর কিছু সঙ্গে না আনতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। আগের মতো মুসল্লিদের জন্য দুটি বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থাও থাকবে।
সভা শেষে শোলাকিয়া ঈদগাহ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শামীম আলম বলেন, দেশের সবচেয়ে বড় ঈদ জামাত দীর্ঘদিন ধরে না হওয়ায় মানুষের মনে আক্ষেপ ছিল। এবার আর সেই আক্ষেপ থাকবে না।
এবারও দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা এমনকি বিদেশি মুসল্লিদের জন্য সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা রাখা হবে। মাঠ ও শহরকে সাজিয়ে দৃষ্টিনন্দন করে তোলারও পরিকল্পনাও নেওয়া হয়েছে।
পুলিশ সুপার বলেন, নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে আয়োজন করা হবে ঈদের জামাত। পাঁচ প্লাটুন বিজিবি, বিপুল সংখ্যক পুলিশ, র্যাব, আনসার সদস্যরা নিরাপত্তায় নিয়োজিত থাকবে। পুরো মাঠ ও আশপাশ সিসি ক্যামেরার আওতার মধ্যে থাকবে। তা ছাড়া প্রত্যেক মুসল্লিকে কমপক্ষে চার ধাপের নিরাপত্তা বলয় পার হয়ে মাঠে প্রবেশ করতে হবে। কেউ মোবাইল ফোন নিয়ে মাঠে যেতে পারবেন না।
জনশ্রুতি আছে, ১৮২৮ সালে এই মাঠে অনুষ্ঠিত ঈদুল ফিতরের জামাতে সোয়া লাখ মুসল্লি একসঙ্গে নামাজ আদায় করেছিলেন। তখন এ মাঠের নাম হয় ‘সোয়া লাখিয়া’। পরবর্তীতে উচ্চারণ বিবর্তনে সোয়া লাখিয়া থেকে এ ঈদগাহ ময়দানের নাম শোলাকিয়া হিসেবেই সমধিক পরিচিত হয়ে ওঠে। এ ঈদগাহ ময়দানে অনুষ্ঠিত ঈদুল ফিতরের জামাতে দেশ-বিদেশের কয়েক লাখ ধর্মপ্রাণ মুসল্লি অংশ নিয়ে থাকেন।
এক শ্রেণির ধর্মপ্রাণ মুসলমানেরা মনে করেন, দেশের প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী ও সর্ববৃহৎ এ ঈদগাহ ময়দানে পরপর তিনবার ঈদুল ফিতরের জামাত আদায় করতে পারলে এক হজ্জের সমান সওয়াব হয়। এমন অন্ধ বিশ্বাস থেকে এ ঈদগাহ ময়দানকে গরিবের মক্কা বলেও অভিহিত করা হয়ে থাকে।
সভায় অন্যদের মধ্যে পুলিশ সুপার মাশরুকুর রহমান খালেদ, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. জিল্লুর রহমান, কিশোরগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মো. পারভেজ মিয়া, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. নাজমুল ইসলাম সরকার, শোলাকিয়া ঈদগাহ মাঠের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলী সিদ্দিকীসহ জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
Posted ০৬:৫৮ | বৃহস্পতিবার, ০৭ এপ্রিল ২০২২
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | Athar Hossain