শুক্রবার ১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

২৯ ডিসেম্বরকে সাংবাদিকদের কালো দিবস ঘোষণা : প্রহসনের নির্বাচন বন্ধের আহ্বান সাংবাদিক নেতাদের

  |   বুধবার, ০১ জানুয়ারি ২০১৪ | প্রিন্ট

P1_29-december-shangbadikde

স্টাফ রিপোর্টার : ২৯ ডিসেম্বরকে সাংবাদিকদের কালো দিবস ঘোষণা করে সাংবাদিক নেতারা বলেছেন, জাতির ইতিহাসে এটি একটি কালো দিন, এদিন আওয়ামী সন্ত্রাসী দ্বারা প্রেস ক্লাব আক্রমণের শিকার হয়েছে। প্রেস ক্লাবের ইতিহাসে এমন ন্যক্কারজনক ঘটনা আগে কখনও ঘটেনি। ওই ঘটনায় প্রেস ক্লাব নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করায় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার বেনজীর আহমেদের কঠোর সমালোচনা করে তাকে বক্তব্য প্রত্যাহার করার
আহ্বান জানিয়ে সাংবাদিক নেতারা বলেন, নইলে গণতান্ত্রিক সরকার ক্ষমতায় এলে তার বিচার করা হবে।
গতকাল বুধবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে) আয়োজিত সদস্যদের পরিচয়পত্র প্রদান উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সাংবাদিক নেতারা এসব কথা বলেন। একই সঙ্গে তারা দেশে গণতন্ত্র ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা রক্ষায় আগামী ৫ জানুয়ারির প্রহসনের নির্বাচন বন্ধের আহবান জানান।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সভাপতি রুহুল আমিন গাজী বলেন, ২৯ ডিসেম্বর জাতির ইতিহাসে একটি কালো দিন, এদিন আওয়ামী সন্ত্রাসীরা প্রেস ক্লাবে আক্রমণ চালায়। প্রেস ক্লাবের ইতিহাসে এমন ন্যক্কারজনক ঘটনা আগে কখনও ঘটেনি। এজন্য ২৯ ডিসেম্বরকে তিনি জাতীয় প্রেস ক্লাবের কালো দিবস হিসেবে পালন করা হবে বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, প্রেস ক্লাবে কে ঢুকবে আর কে ঢুকবে না তা নির্ধারণ করবেন ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক। অন্য কারও অধিকার নেই প্রেস ক্লাবে কাউকে ঢুকতে বাধা দেয়ার।
তিনি পুলিশ কমিশনার বেনজীর আহমেদকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ২৯ ডিসেম্বর জাতীয় প্রেস ক্লাবে বহিরাগতরা এসে হামলা করেছে। আপনার বাহিনী প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে তাদের সহযোগিতা করেছে। সুপ্রিমকোর্টেও পুলিশের উপস্থিতিতে আইনজীবীদের ওপর হামলা করা হয়েছে। অথচ আপনি প্রেস ক্লাব, সুপ্রিমকোর্ট নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করে যাচ্ছেন। আপনি প্রেস ক্লাবকে নিয়ে যে বক্তব্য দিয়েছেন তা প্রত্যাহার করে আপনাকে ক্ষমা চাইতে হবে।
আগামী ৫ জানুয়ারি প্রহসনের নির্বাচন বন্ধ করার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে এই সাংবাদিক নেতা বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে এত ভয় কেন। আপনার সরকার নাকি প্রচুর উন্নয়ন করেছে? আপনার অসুবিধা এক জায়গায়, আপনার শাসনে ৫ বছরে বাংলার মানুষ এমন অবস্থায় গিয়ে পৌঁছেছে যে, ভবিষ্যতে তারা আপনাকে আর ভোট দেবে না।
বিএফইউজে মহাসচিব শওকত মাহমুদ বলেন, শেখ মুজিবুর রহমানের পরিবার যখন ক্ষমতায় থাকে তখন গণমাধ্যম বন্ধ করা হয়, সাংবাদিকরা বেকার হয়। শেখ মুজিব ’৭৫ সালে ৪টি সরকারি প্রচারপত্র রেখে সব পত্রিকা বন্ধ করে দেন। আর শেখ হাসিনা ’৯৬ ও ২০০৮ সালে ক্ষমতায় এসে একের পর এক পত্রিকা, টিভি বন্ধ করে দিচ্ছেন। অন্যদিকে জিয়া পরিবার যখন ক্ষমতায় থাকে তখন গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠা হয়, সাংবাদিকরা ভালো থাকেন। সরকার ক্ষমতা কুক্ষিগত করতে প্রহসনের নির্বাচন করতে চায় মন্তব্য করে তিনি বলেন, এ নির্বাচনে দেশি-বিদেশিদের কোনো সমর্থন নেই। অবিলম্বে এ নির্বাচন বন্ধ করতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে ডিইউজে সভাপতি কবি আবদুল হাই শিকদার বলেন, ফ্যাসিবাদী, মিথ্যাবাদী ও অবৈধ সরকারের নির্বাচন বাতিল করার জন্য সাংবাদিক সমাজ দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। তিনি সরকারকে ৫ জানুয়ারির নির্বাচন বন্ধের আহ্বান জানান। ২৯ ডিসেম্বর প্রেস ক্লাবে আওয়ামী সন্ত্রাসীদের হামলার বিষয়ে তিনি বলেন, তারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার নামে লাঠি নিয়ে সাংবাদিকদের ওপর হামলা চালিয়েছে। এর চেয়ে জঘন্য কাজ আর হতে পারে না। তারা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি নয়, তারা ভারতের দালাল। এই দালালদের দেশ থেকে বিতাড়িত করতে হবে। পরিচয়পত্র দেয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, পরিচয়পত্রধারী ডিইউজে সদস্যদের গণপরিবহনে চড়ার ক্ষেত্রে ৫০ ভাগ রেয়াতের জন্য বিআরটিসির সঙ্গে কথা চলছে এবং এটিকে হেলথকার্ড হিসেবে ব্যবহার করা যায় কিনা সে বিষয়েও চিন্তাভাবনা চলছে। তবে খেয়াল রাখতে হবে যাতে কেউ এই কার্ডের অপব্যবহার করতে না পারে।
জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমদ পরিচয়পত্র প্রদানের জন্য ডিইউজে নেতাদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, এরপর ডিইউজে সদস্যদের জন্য স্বাস্থ্যসেবা ও সদস্য কল্যাণ তহবিল গঠনের উদ্যোগ বাস্তবায়ন করবে বলে আমি আশা করি।
জাতীয় প্রেস ক্লাবের যুগ্ম-সম্পাদক কাদের গনি চৌধুরী বলেন, ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠান জাতীয় প্রেস ক্লাব সম্পর্কে প্রজাতন্ত্রের একজন কর্মকর্তা হয়ে পুলিশ কমিশনার যে মন্তব্য করেছেন তা অত্যন্ত গর্হিত কাজ। এর জন্য তাকে ক্ষমা চাইতে হবে। তা না হলে জাতি তাকে ক্ষমা করবে না।
ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের ৬৭ বছরের ইতিহাসে এই প্রথম সদস্যদের পরিচয়পত্র বিতরণ করা হয়েছে। এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সংগঠনের শতাধিক সদস্যের হাতে পরিচয়পত্র তুলে দেয়া হয়। সংগঠনটির ২৯টি নির্বাচনী অঙ্গিকারের একটি ছিল সদস্যদের পরিচয়পত্র প্রদান।
ডিইউজের আমার দেশ ইউনিট প্রধান বাছির জামালের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তৃতায় করেন বিএফইউজের সহকারী মহাসচিব এম আবদুল্লাহ, ডিইউজের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম প্রধান, ইনকিলারেব সিনিয়র সহকারী সম্পাদক আবদুল আউয়াল ঠাকুর, ডিইউজের সাংগঠনিক সম্পাদক রফিক মুহাম্মদ, দফতর সম্পাদক শরীফ আবদুল গোফরান প্রমুখ। এ সময় বিএফইউজের সহ-সভাপতি নুরুল আমিন রোকন ও আমিরুল ইসলাম কাগজী, সাবেক মহাসচিব এমএ আজিজ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ১৩:০৭ | বুধবার, ০১ জানুয়ারি ২০১৪

Swadhindesh -স্বাধীনদেশ |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement
Advisory Editor
Professor Abdul Quadir Saleh
Editor
Advocate Md Obaydul Kabir
যোগাযোগ

Bangladesh : Moghbazar, Ramna, Dhaka -1217

ফোন : Europe Office: 560 Coventry Road, Small Heath, Birmingham, B10 0UN,

E-mail: news@swadhindesh.com, swadhindesh24@gmail.com