| বুধবার, ১৮ এপ্রিল ২০১৮ | প্রিন্ট
বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা নিয়ে বার বার গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করলেও কারাকর্তৃপক্ষ কোন উদ্যোগই গ্রহণ করছে না বলে আবারও অভিযোগ করেছে বিএনপি যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। বেগম খালেদা জিয়াকে যথাযথ মর্যাদায় চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর এই বক্তব্য ডাহা মিথ্যাচার বলে মন্তব্য করেছে রিজভী।
বুধবার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করে তিনি।
খালেদা জিয়ার জীবন নিয়ে গভীর শঙ্কা প্রকাশ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, সরকারি মেডিকেল বোর্ড দেশনেত্রীকে অর্থপেডিক বেড দেয়াসহ যেসব চিকিৎসার সুপারিশ করেছিল তা এখনও পর্যন্ত বাস্তবায়ন করা হয়নি। কারাগারে বেগম খালেদা জিয়ার কোন চিকিৎসাই হচ্ছে না। কারাকর্তৃপক্ষ ও সরকার যে ধরণের আচরণ করেছে এবং তাঁর চিকিৎসা নিয়ে টালবাহানা করছে বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসা ও অসুস্থাকে আড়াল করতে সরকারের নানা ফন্দিফিকির বন্ধ করে তাঁর নিজস্ব চিকিৎসকদের দিয়ে চিকিৎসা সেবা প্রদান করার জোর দাবি জানাচ্ছি। অবিলম্বে দেশনেত্রীকে তাঁর পছন্দানুযায়ী রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়ার জন্য আবারও জোর দাবি জানাচ্ছি।
প্রধানমন্ত্রীর যুক্তরাজ্য সফর প্রসঙ্গে রিজভী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ব্রিটেনের স্বনামধন্য টিভি চ্যানেল-ফোর এর পক্ষ থেকে বাংলাদেশে বিরোধী দল ও মতের ব্যক্তিদের নিখোঁজ হওয়া নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি প্রশ্নটি এড়িয়ে যান। এটা যুগে যুগে স্বৈরশাসকদেরই একটা আচরণ। শেখ হাসিনার ভাগ্নী ও ব্রিটিশ পার্লামেন্টের সদস্য টিউলিপ সিদ্দিকীকে ব্রিটেনের চ্যানেল ফোর এর পক্ষ থেকে বাংলাদেশের বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের গুম-খুন ও নিখোঁজ নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন-বিশ্বের যেকোন জায়গায় গুম-খুনের ঘটনা ঘটলে এর নিন্দা জানাই, বাংলাদেশও এর অন্তর্ভুক্ত।
আরেক সাংবাদিক বলেন, ব্রিটেনে মানবাধিকার নিয়ে আপনি সোচ্চার, অথচ বাংলাদেশের মানবাধিকার নিয়ে আপনি চোখ বন্ধ করে রাখতে পারেন না। আপনার খালা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আপনি একটা ফোন করলে অনেকের জীবন বেঁচে যেতো।
টিউলিপ বলেন, আমার খালার সঙ্গে আমি রাজনীতি নিয়ে কোন কথা বলি না। তখন সাংবাদিক মন্তব্য করেন যে, এটা সত্য নয়, টিউলিপ বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর রাষ্ট্রীয় সফরসঙ্গী হয়ে রাশিয়াসহ বিভিন্ন দেশে গিয়েছেন, তার এই বক্তব্য কি ডাবল স্ট্যান্ডার্ড নয় ?
রিজভী বলেন, ২০১৬ সালে গ্রেফতার ও আটক নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট পুলিশের ক্ষমতার অপব্যবহার ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর উৎপীড়ণের বিরুদ্ধে বিচারককে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা দিয়ে রুল জারি করেছিল, কিন্তু সরকারের আইন শৃঙ্খলা বাহিনী সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশনাকে শুধু অগ্রাহ্যই করছে না, বরং ঠান্ডা মাথায় বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে আইন বহির্ভূতভাবে গ্রেফতার, পূণঃগ্রেফতার, গ্রেফতার না দেখিয়ে আটক করে রাখাসহ অবিরাম নিষ্ঠুর পৈশাচিক নিপীড়ন-নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, সম্প্রতি এর হাড়হিম করা ঘটনা হলো কোটা সংস্কার আন্দোলনের তিন নেতাকে চোখ বেঁধে মাইক্রোবাসে তুলে ডিবি অফিসে নিয়ে যাওয়া। সুপ্রিম কোর্টের রায় অনুযায়ী বিদ্যমান আইনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ। তবে এসব বিষয়ে সরকার নিশ্চল, নিশ্চুপ এবং দুস্কর্মের সহায়তাকারী। সুতরাং এই ঘটনা আইনের শাসনের চোখেই কালো কাপড় বাঁধার শামিল।
গতরাত ১০টায় জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল ঢাকা কলেজ শাখার সিনিয়র সহ-সভাপতি এইচ এম রাশেদকে ডিবি পুলিশ গ্রেফতার করেছে। এছাড়া ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বংশাল থানা বিএনপি নেতা তাজ উদ্দিন তাইজুকে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক গ্রেফতার করা হয়েছে।
Posted ১৩:৩১ | বুধবার, ১৮ এপ্রিল ২০১৮
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | Athar Hossain