শুক্রবার ১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সেনাবাহিনীর ভূমিকা সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটারের পক্ষে থাকবে নাকি বিপক্ষে

  |   মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০১৩ | প্রিন্ট

অলিউল্লাহ নোমান

Noman_2

২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি জরুরি অবস্থা জারির আগে ও পরে অনেক সেনা কর্মকর্তার মুখে শুনেছি কারও সম্পদ পাহারা দেয়ার দায়িত্ব সেনাবাহিনীর নয়। তখন ঊর্ধ্বতন সেনা কর্তাদের মুখে হরহামেশাই এই উক্তিটি শোনা যেত। সেই উক্তিতে অঙ্গুলি নির্দেশ ছিল চারদলীয় জোট সরকারের মন্ত্রী, এমপিদের দিকে। গত ক’দিন থেকে হিন্দুস্থানপন্থী আওয়ামী-বাম দলদাশ পত্রিকাগুলোতেই মহাজোটের মেয়াদ উত্তীর্ণ সরকারে মন্ত্রী, এমপিদের ৫ বছরে ফুলে ফেঁপে ওঠা সম্পদের হিসাব বের হচ্ছে। এটা শুধু মাত্র তারা নিজেরা যেটুকু নির্বাচন কমিশনে প্রদত্ত সম্পদের বিবরণীতে উল্লেখ করেছেন সেটা। এর বাইরে নামে-বেনামে কী পরিমাণ সম্পদ তাদের রয়েছে, তা বের হওয়ার জন্য দরকার সঠিক তদন্ত। কিন্তু আওয়ামী দুর্নীতিবাজদের লালন এবং বিরোধী দলের লোকদের হয়রানি কমিশন (দুদক) এরই মধ্যে সাফ জানিয়ে দিয়েছে এসব তদন্ত করে তারা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে চায় না।

পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী নিজেদের হিসাবে উল্লেখিত সম্পদ বিবরণী দেখলেই মনে হয় তারা ৫ বছরে আলাদিনের আশ্চর্য চেরাগের অধিকারী ছিলেন। নতুবা এরকম অবিশ্বাস্য সম্পদের মালিক ৫ বছরে হলেন কেমন করে! মঈন উদ্দিন এবং ফখরুদ্দিন সাজানো নির্বাচনের মাধ্যমে মন্ত্রী-এমপিদের হাতে আলাদিনের চেরাগ ধরিয়ে দিয়ে গিয়ে ছিলেন। সেই যাদুকরি আশ্চর্য প্রদীপের আলোতে তাদের সম্পদ শনৈ শনৈ বৃদ্ধি পেয়েছে। ম্যাজিক অথবা আলাদিনের চেরাগ ছাড়া ৫ বছরে এতো সম্পদ উপার্জন কারও পক্ষে সম্ভব নয়। সেটা বোঝার জন্য পিএইচডি ডিগ্রি অর্জনের প্রয়োজন আছে বলে মনে হয় না। বোকাও বুঝবে তাদের হাতে সম্পদ অর্জনের ম্যাজিক ছিল, নতুবা আলাদিনের আশ্চর্য চেরাগ ছিল। দৃশ্যমান ব্যবসা বাণিজ্য ছাড়াই কারও কারও গৃহিণী স্ত্রীর সম্পদের পরিমাণ ৫ বছরে তিনশ’ গুণের বেশি ছাড়িয়ে গেছে। এখন প্রশ্ন উঠেছে, ২৬ ডিসেম্বর থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে মাঠে নেমে সেনাবাহিনী কী এই সম্পদ পাহারা দেবে!
এছাড়া ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগ একটি ইশতেহার দিয়েছিল জাতির সামনে। সেই ইশতেহারে স্পষ্ট ভাষায় উল্লেখ ছিল ক্ষমতায় গেলে মন্ত্রী-এমপিদের সম্পদের হিসাব বিবরণী জাতির সামনে প্রকাশ করবে। কিন্তু ইশতেহারে বর্ণিত সেই ওয়াদা ৫ বছরে পূরণ করেনি আওয়ামী লীগ। তারা হয়ত ক্ষমতার মোহ এবং লুটপাটে আত্মনিয়োগের পর ভুলেই গিয়েছিলেন নির্বাচনের সময় সম্পদের হিসাব বিবরণী দিতে বাধ্যতা রয়েছে। আগে ভাবলে সেই নিয়মটা তারা পরিবর্তন করে নিতে পারতেন। নির্বাচনী বিধিবিধানের অনেক কানুনই তারা পরিবর্তন করেছেন।

নির্বাচনী ইশতেহার অনুযায়ী সম্পদ বিবরণী প্রকাশ না করলেও ৫ বছর পর নির্বাচন কমিশনে সেটা বাধ্য হয়ে দিতে হয়েছে। জাতির সামনে এখন সম্পদ বিবরণী কিছুটা হলেও একের পর এক প্রকাশ পাচ্ছে। সবচেয়ে মজার বিষয় হলো, আগামী ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে জাতির সামনে কোনো ইশতেহার নেই। এবার তারা ক্ষমতায় গিয়ে কী করবেন সেই বিষয়ে কোনো ওয়াদা নেই জাতির সামনে। যা ইচ্ছা তাই করতে পারবেন। ইশতেহার থাকলে সেটা নিয়ে পরবর্তীতে প্রশ্ন উত্থাপিত হওয়ার সুযোগ থাকে। যেমন তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল করার বিষয়টি ইশতেহারে না থাকায় প্রশ্ন উত্থাপিত হয়েছে। তেমনি সম্পদ বিবরণী প্রকাশের ওয়াদা করেও সেটা প্রকাশ না করায় মাঝে মধ্যেই গণমাধ্যমে এ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। পড়তে হয়েছে বিব্রতকর অবস্থায়। এবার আর সেই সুযোগ রাখছে না আওয়ামী লীগ। এতে এবারের নির্বাচনে এটাও একটা বিশ্বরেকর্ড। যেখানে কোনো ইশতেহার নেই। হিন্দুস্তানকে শুধু ট্রানজিটের নামে করিডোর শুধু নয়, টিপাইমুখ বাঁধ, আন্তঃনদী সংযোগের মাধ্যমে শুধু বাংলাদেশের পানি প্রত্যাহারের অনুমোদন নয়, সিকিমের লেন্দুপ দর্জির মতো পুরো বাংলাদেশটা দিয়ে দিলেও কেউ বলতে পারবে না এটা নির্বাচনী ইশতেহারের ছিল না। এবারের অলিখিত ইশতেহার হচ্ছে যা খুশি তাই করবো।

আরেকটি বড় প্রশ্ন এখন জনগণের সামনে। সেনাবাহিনীকে মাঠে নামানো হচ্ছে ৫ জানুয়ারির নির্বাচনকে সামনে রেখে। যদিও বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষ সেই নির্বাচনের পক্ষে নেই। বিএনপি’র নেতৃত্বে ১৮ দল, বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ, ডা. একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরীর বিকল্প ধারা, আ স ম আবদুর রবের জাসদ, ড. কামাল হোসেনের গণফোরাম নির্বাচন বর্জন করেছে। নির্বাচনে অংশ নেয়ার ঘোষণা দিয়েও মাঝপথে রণে ভঙ্গ দিয়েছেন এইচ এম এরশাদের জাতীয় পার্টি। নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেয়ায় এরশাদকে বিনা অসুখে হাসপাতালে সরকারি ব্যবস্থাপনায় অন্তরীণ রাখা হয়েছে। এরই মধ্যে আবার দলটি আরেক টুকরো হয়েছে। সেই টুকরোর মালিকানায় রয়েছেন বর্ষীয়ান রাজনীতিক কাজী জাফর আহমেদ। তিনিও নির্বাচন বর্জনের পক্ষে। নির্বাচনী সিডিউল ঘোষণা করলে বিএনপি’র নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোট থেকে দলে দলে নেতারা এসে অংশ নেবেন সেই প্রত্যাশা একেবারেই শূন্যের ঘরে। মোট কথা আওয়ামী লীগের মহাজোটের অংশ ছাড়া বাকি সব দল নির্বাচন বয়কট করেছে।
বিগত নির্বাচনে প্রাপ্ত ভোটের অংক কষলে দেখা যায় ৫০ শতাংশের বেশি ভোটের মালিক ১৮ দলীয় জোটসহ নির্বাচন বর্জনকারী দলগুলো। এর সঙ্গে যুক্ত হবে বিভিন্ন মিডিয়ার জনমত জরিপ অনুযায়ী আওয়ামী লীগের জনপ্রিয়তায় ধস নামা ভোটারের সংখ্যা। জনপ্রিয়তায় ধসের প্রমাণ দেখা গেছে ৮টি সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ফলাফলে। ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের বিতর্কিত নির্বাচনের প্রাপ্ত ভোটের হিসাবেই বর্জনকারীদের চেয়ে পিছিয়ে রয়েছেন নির্বাচনে অংশগ্রহণকারীরা। সুতরাং এই হিসাবে স্পষ্ট করেই বলা যায় বাংলাদেশের অধিকাংশ ভোটার শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নির্বাচনে অংশ নিতে নারাজ।

নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে প্রদত্ত তথ্য অনুযায়ী ২০০৮ সালে ২৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত মইনুদ্দিন-ফখরুদ্দিনের সাজানো নির্বাচনে কাস্টিং ভোটের প্রাপ্ত পরিসংখ্যানে আওয়ামী লীগ পেয়েছিল ৪৯ শতাংশ ভোট। আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন জোটের তত্কালীন শরিক জাতীয় পার্টি (এরশাদ) ৭ দশমিক ১ শতাংশ, ইনুর নেতৃত্বাধীন জাসদ শূন্য দশমিক ৬ শতাংশ, রাশেদ খান মেননের ওয়ার্কার্স পার্টি শূন্য দশমিক ৩ শতাংশ এবং কর্নেল অব. ড. অলি আহমদের এলডিপি শূন্য দশমিক ২ শতাংশ।

চারদলীয় জোটের প্রধান বিএনপি পেয়েছিল কাস্টিং ভোটের ৩৩ দশমিক ২ শতাংশ, জামায়াতে ইসলামী ৪ দশমিক ৬ শতাংশ, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (বিজেপি) শূন্য দশমিক ১ শতাংশ এবং স্বতন্ত্রসহ অন্যান্য পার্টি ৪ দশমিক ৯ শতাংশ ভোট।

প্রাপ্ত ভোটের এই হিসাব অনুযায়ী জাতীয় পার্টি (এরশাদ) এবং অলি আহমেদের এলডিপি এখন আর মহাজোটের সঙ্গে নেই। এরই মধ্যে এলডিপি ১৮ দলীয় জোটের অন্তর্ভুক্ত একটি দল। আওয়ামী লীগের সঙ্গে শুধুমাত্র জাসদ ইনুর শূন্য দশমিক ৬ শতাংশ এবং রাশেদ খান মেননের ওয়ার্কার্স পার্টির শূন্য দশমিক ৩ শতাংশ ভোটের হিসাব যুক্ত রয়েছে। তাতে দেখা যায় আওয়ামী লীগের সঙ্গে নির্বাচনের পক্ষে রয়েছে মাত্র ৪৯ দশমিক ৯ শতাংশ ভোট। যা বিগত নির্বাচনে কাস্টিং ভোটের মধ্যে ৫০ শতাংশের চেয়ে কিছুটা কম। অর্থাত্ বিগত মইনুদ্দিন-ফখরুদ্দিনের সাজানো নির্বাচনে প্রাপ্ত ভোটের ৫০ শতাংশের বেশি রয়েছে বিএনপির নেতৃত্বে ১৮ দলীয় জোটের সঙ্গে নির্বাচন বর্জনের পক্ষে।

প্রশ্ন উঠেছে রাষ্ট্রীয় বাজেটের টাকায় লালিত সেনাবাহিনী ৫ জানুয়ারির আরেকটি পাতানো নির্বাচনে বেশিরভাগ জনগণের পক্ষে থাকবে, নাকি ৫০ শতাংশের কম প্রাপ্ত ভোটের পক্ষে অবস্থান নেবে। হিন্দুস্থানের নীলনকশা অনুযায়ী এই সাজানো নির্বাচনে এরই মধ্যে ১৫৪টি আসনে ভোটের প্রয়োজন হবে না। এতে অর্ধেকের বেশি আসনে মানুষ ভোট থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এটা যে সাজানো এবং পাতানো নির্বাচন সেটা স্পষ্ট শেখ হাসিনার ১৪ ডিসেম্বরের একটি বক্তব্যে। সোজা সাফটা তিনি বলেছেন, বিএনপি এলেও সমঝোতার মাধ্যমে এরকম কিছু সিট তিনি দিতে পারতেন। হিন্দুস্থানের নীলনকশায় সাজানো এই নির্বাচনে সেনাবাহিনী কী ভূমিকা রাখেন সেটা দেখার অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন দেশের সাধারণ মানুষ। এখন কী সেনাবাহিনী আলাদিনের চেরাগ প্রাপ্তদের হাতেই আবার রাষ্ট্র ক্ষমতা তুলে দেয়ার ষড়যন্ত্রের সাজানো নির্বাচনে সহযোগিতা করবে এবং লুটেরাদের সেই সম্পদ পাহারা দেবে! জনগণের টাকায় লালিত সেনাবাহিনী কী সাধারণ নাগরিকের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে দেশকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেবে! এসব প্রশ্ন এরই মধ্যে মানুষের মনে দেখা দিয়েছে।
জাতীয় দুর্যোগ মুহূর্তগুলোতে মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে সেনাবাহিনী সেবার মাধ্যমে আস্থা অর্জন করেছে। বিদেশের মাটিতে গোলযোগপূর্ণ দেশগুলোতে শান্তিরক্ষায় সাহসী ভূমিকা পালন করে দুনিয়াব্যাপী প্রশংসিত হয়েছে আমাদের সেনাবাহিনী। কিন্তু আবার ১/১১-এর জরুরি আইনের আমলে কিছু বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে তুমুল সমালোচিত হয়েছে জাতীয় সেনাবাহিনী। জাতীয় স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষার প্রতীক সেনাবাহিনীর প্রতি মানুষের অবিচল আস্থা ছিল। ১/১১-এর জরুরি আইনের আমলে বিতর্কিত ভূমিকার কারণে সেনাবাহিনীর প্রতি মানুষের আস্থায় কিছুটা হলেও ফাটল ধরেছে। আগামী ৫ তারিখের সাজানো নির্বাচনে আবারও বিতর্কিত ভূমিকার মাধ্যমে সেনাবাহিনী ১/১১-এর সময় থেকে সৃষ্ট হওয়া আস্থার ফাটল প্রশস্ত করবে, নাকি যথাযথ ন্যায়ানুগ পদক্ষেপের মাধ্যমে জনগণের পাশে দাঁড়িয়ে সেই ফাটল মুছে ফেলার চেষ্টায় অবতীর্ণ হবে? মানুষের মনের এসব প্রশ্নের জবাব দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়ার এখতিয়ার হচ্ছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর। সেনাবাহিনীর পদক্ষেপের মাধ্যমেই ৫ জানুয়ারির ভেতরে মানুষ সেই জবাব পেয়ে যাবে।

এ নির্বাচনটি যে ভারতীয় আধিপত্যবাদের নীলনকশায় হচ্ছে সেটা স্পষ্ট করে গেছেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব সুজাতা সিং। সম্প্রতি বাংলাদেশ সফরকালে তিনি এরশাদকে প্রকাশ্যেই বলেছেন নির্বাচন বর্জন করলে অন্য কোন দল ক্ষমতায় আসতে পারে। এজন্য যারা ক্ষমতায় আসার সম্ভাবনা তাদেরকে বাইরে রেখে নির্বাচনের তাগিদ দেয়া হয় এরশাদকে। সুজাতা সিংয়ের এই বক্তব্য একটি দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব এবং অভ্যন্তরীণ বিষয়ে শুধু হস্তক্ষেপ নয়, মানুষের ভোটের অধিকারে লাথি মারার শামিল। জাতীয় সেনাবাহিনী কী হিন্দুস্তানের আধিপত্যবাদের পক্ষে অবস্থান নিয়ে জনমানুষের ভোটের অধিকার হরণে সহযোগিতা করবে আর লুটেরাদের সম্পদ পাহারা দেবে!
লেখক : দৈনিক আমার দেশ-এর বিশেষ প্রতিনিধি, বর্তমানে যুক্তরাজ্যে নির্বাসিত

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ০১:১৩ | মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০১৩

Swadhindesh -স্বাধীনদেশ |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement
Advisory Editor
Professor Abdul Quadir Saleh
Editor
Advocate Md Obaydul Kabir
যোগাযোগ

Bangladesh : Moghbazar, Ramna, Dhaka -1217

ফোন : Europe Office: 560 Coventry Road, Small Heath, Birmingham, B10 0UN,

E-mail: news@swadhindesh.com, swadhindesh24@gmail.com