| সোমবার, ১০ মার্চ ২০১৪ | প্রিন্ট
স্টাফ রিপোর্টার : নির্বাচনী হলফনামা প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের বক্তব্যকে ‘দুর্নীতি ও দুর্বৃত্তায়িত রাজনীতির প্রতি আত্মসমপর্ণের শামিল বলে মন্তব্য করেছেন সুশাসনের জন্য নাগরিক সুজনের সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার।
গতকাল সোমবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে তৃতীয় দফায় উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থীদের হলফনামার তথ্য প্রকাশ প্রসঙ্গে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
বদিউল আলম মজুমদার বলেন, সৈয়দ আশরাফ নির্বাচনী হলফনামাকে রাজনীতিকদের চরিত্র হলফনামা বলে উল্লেখ করেছেন এবং হলফনামা সংশোধনের উদ্যোগ নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন। তিনি বলেন, আশরাফের এ বক্তব্য দুর্নীতি ও দুর্বৃত্তায়নগ্রস্ত রাজনীতির প্রতি আত্মসমর্পণের শামিল। তিনি নির্বাচন কমিশন ও সরকারকে প্রার্থীদের হলফনামা সংশোধন ও জনসম্মুখে প্রকাশ বন্ধের উদ্যোগ থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানান।
সুজন সম্পাদক বলেন, আমরা দেখেছি ক্ষমতার সঙ্গে একটি জাদুর কাঠির সম্পর্ক আছে। যারাই ক্ষমতায় গেছেন তাদেরই সম্পদ বেড়েছে। বর্তমান সরকারের গত মেয়াদের নির্বাচনী ইশতেহারে দুই দফায় ক্ষমতাশালী ও বিত্তশালী রাজনীতিবিদ-আমলাদের সম্পদের হিসাব প্রকাশের অঙ্গীকার ছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, ২০০৫ সালে শেখ হাসিনা বিরোধীদলীয় নেতা থাকা অবস্থায়ও রাজনীতিবিদ ও আমলাদের সম্পদের হিসাব প্রকাশের কথা বলেছিলেন। কিন্তু দুঃখজনক হলো গত ৫ বছরে তা হয়নি।
সংবাদ সম্মেলনে সুজনের সহকারী সমন্বয়ক সানজিদা হক বিপাশা তৃতীয় দফায় অনুষ্ঠেয় ৮৩ উপজেলা নির্বাচনের ৩৯৩ জন চেয়ারম্যান প্রার্থীর হলফনামার তথ্য প্রকাশ করেন।
সুজনের বিশ্লেষণ থেকে জানা যায়, তৃতীয় দফায় অনুষ্ঠেয় ১৫ মার্চ ৮৩টি উপজেলায় চেয়ারম্যান প্রার্থীদের মধ্যে ৩০ দশমিক শূন্য ২ শতাংশের বিরুদ্ধে বর্তমানে বিভিন্ন ধরনের মামলা আছে। ১১৬ জনের বিরুদ্ধে অতীতে মামলা ছিল। চেয়ারম্যান প্রার্থীদের মধ্যে ২৭৮ জনের বার্ষিক আয় পাঁচ লাখ টাকা বা তার নিচে। চেয়ারম্যান প্রার্থীদের অর্ধেকের বেশির (৫২ দশমকি ৪২ শতাংশ) পেশা ব্যবসা। এ প্রার্থীদের ২০৬ জন ব্যবসা এবং ৭৬ জন কৃষি কাজের সঙ্গে জড়িত ।
প্রার্থীদের ৫৯ জনের সম্পদের মূল্য ৫ লাখ টাকার কম। কোটিপতির সংখ্যা ৫০ জন এবং এর মধ্যে ৫ কোটি টাকার অধিক সম্পদের মালিক পাঁচজন। তাদের ১২১ জনের বাত্সরিক আয় ২ লাখ টাকার মধ্যে। বাত্সরিক ১ কোটি টাকার বেশি আয় করেন দু’জন।
৩৯৩ জন প্রার্থীর ৫৪ জনই ঋণগ্রহীতা। তাদের মধ্যে কোটি টাকার অধিক ঋণ নিয়েছে সাতজন। এর মধ্যে ৫ কোটি টাকার অধিক ঋণ রয়েছে ৫ জন প্রার্থীর। ৩৩৯ জন প্রার্থীর কোনো ঋণ নেই। নিয়মিত আয়কর দেন ১৪৮ জন, তার মধ্যে ৫ হাজার টাকার কম আয়কর দেন ৯৬ জন। লাখ টাকার উপর আয়কর দেন ২০ জন। আর ৫ লাখ টাকা আয়কর দেন ৭ জন এবং ১০ লাখ টাকা আয়কর দেন ৫ জন।
এছাড়া ২১০ জন প্রার্থীর শিক্ষাগত যোগ্যতা স্নাতক বা স্নাতকোত্তর, এসএসসি পাস ৫৩ জন, ৪৮ জন এইচএসসি পাস এবং ৭৮ জনের শিক্ষাগত যোগ্যতা এসএসসির নিচে।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, সুজনের কোষাধ্যক্ষ আবদুল হক, সহ-সভাপতি আবুল হাসনাত প্রমুখ।
Posted ১৬:৪৬ | সোমবার, ১০ মার্চ ২০১৪
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | admin