| মঙ্গলবার, ৩০ আগস্ট ২০২২ | প্রিন্ট
ছাতক নৌ-পুলিশের ইনচার্জ আনোয়ার হোসেন মৃধা জানান, মঙ্গলবার বেলা পৌনে ২টায় সদর উপজেলার হরিনাপাটি এলাকায় আসার পর অসুস্থ হয়ে পড়েন বীর মুক্তিযোদ্ধা ক্ষিতীন্দ্র চন্দ্র বৈশ্য। যে কারণে চিকিৎসক তাঁকে বলেন, সাঁতার কাটা অব্যাহত রাখলে তাঁর শারীরিক অবস্থার আরো অবনতি হবে। যে কারণে তাঁকে নৌকায় তোলে অক্সিজেন সাপোর্ট দিয়ে সুনামগঞ্জ জেলা সদরে নিয়ে আসা হয়।
তিনি আরো জানান, গন্তব্যে যাওয়ার জন্য ৩২ ঘণ্টা সাঁতার কাটেন এই প্রবীণ মুক্তিযোদ্ধা। পরে বিকাল ৪ টায় সুনামগঞ্জ শহরের উকিল পাড়াস্হ রিভার ভিউ ঘাটে এই বীর সেনানীকে নৌকা থেকে নামিয়ে এমবুল্যান্স যোগে প্রথমেই সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে পরে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। রিভার ভিউ ঘাটে তাকে বহনকারী নৌকাটি পৌঁছালে সুনামগঞ্জ রিপোর্টার্স ইউনিটির সভপতি লতিফুর রহমান রাজু, সাধারণ সম্পাদক হিমাদ্রি শেখর ভদ্র, কার্য নির্বাহী কমিটির সদস্য মাসুম হেলাল, দিলাল আহমদ, জাকির হোসেন, কর্ণ বাবু দাস সহ নেতৃবৃন্দ তাকে ফুল দিয়ে বরণ করেন।
মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সিলেট জেলা ইউনিটের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা সুব্রত চক্রবর্তী জুয়েল জানান, ক্ষীতিন্দ্র চন্দ্র বৈশ্য মঙ্গলবার দুপুরের দিকে দুর্বল হয়ে পড়েন। তাঁর নিশ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছিল। এ অবস্থায় তাঁর সঙ্গে থাকা চিকিৎসক তাকে পানি থেকে উঠে আসার পরামর্শ দেন। প্রথমে রাজি না হলেও সবার অনুরোধে তিনি শেষপর্যন্ত মিশন শেষ করতে রাজি হন। তিনি সিলেট শহরের চাদনী ঘাট এলাকা থেকে ভোর ৬ টায় আনুষ্ঠানিক ভাবে সাতাঁর শুরু করেন। পথে কোন জায়গাতেই থামেননি। খাবার ও সাঁতার কেটেই খেয়েছেন।
নৌ পুলিশ সুপার সম্পা ইয়াসমীন জানান, আমাদের নৌ পুলিশের একটি টীম তাঁর সাথে অন্য একটি নৌকায় সার্বক্ষণিক ছিল। উল্লেখ্য, ছাত্রজীবন থেকেই দেশসেরা সাঁতারু হিসেবে খ্যাতি পাওয়া ক্ষিতীন্দ্র চন্দ্র বৈশ্য (৭০) একাধিক জাতীয় রেকর্ডের অধিকারী। ৬৭ বছর বয়সে ১৮৫ কিলোমিটার সাঁতার কেটে রেকর্ড গড়েন তিনি। বর্তমানে সাঁতার কেটে সবেচেয়ে বেশি দূরত্ব অতিক্রম করে গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডের অধিকারী স্প্যানিশ নাগরিক পাবলো ফার্নান্দেজ। ৭০ বছর বয়সে ২৮১ কিলোমিটার সাঁতরে রেকর্ডটি নিজের করে নিতে চেয়েছিলেন ক্ষিতীন্দ্র চন্দ্র বৈশ্য।
ক্ষিতীন্দ্র চন্দ্র বৈশ্যর বাড়ি নেত্রকোনা জেলার মদন উপজেলার জাহাঙ্গীরপুর গ্রামে। ১৯৫২ সালের ২৩ মে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। সিলেটের এমসি কলেজ থেকে পদার্থ বিজ্ঞানে স্নাতক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে একই বিষয়ে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করে তিনি চাকরিজীবনে প্রবেশ করেন। চাকরি থেকে অবসর নেওয়ার আগে তিনি বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের উপ-পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
Posted ১৪:০৪ | মঙ্গলবার, ৩০ আগস্ট ২০২২
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | admin