| বুধবার, ০৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯ | প্রিন্ট
দুর্নীতি মামলায় কারাবন্দি দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবি করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবেদীন ফারুক। অন্যথায় জনগণকে সঙ্গে নিয়ে রাস্তায় নামার ঘোষণা দিয়েছেন। আর রাজপথে নামলে সরকার এক মুহূর্তও টিকতে পারবে না হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।
বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অপরাজেয় বাংলার উদ্যোগে খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে আয়োজিত মানববন্ধনে এই হুঁশিয়ারি দেন ফারুক।
দলের ৪১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে রাজধানীতে বিপুল নেতাকর্মীদের জমায়েতের কথা সরকারকে স্মরণ করিয়ে দিয়ে ফারুক বলেন, ‘২ সেপ্টেম্বর পার্টি অফিসের সামনে একটা বার্তা বিএনপি আপনাদের দিয়েছে। একটা মেসেজ আপনারা পেয়েছেন। কয়েক ঘণ্টায় সেদিন লাখ লাখ মানুষ ঢাকার রাস্তায় নেমে এসেছিল। আকাঙ্ক্ষা কিন্তু একটাই ছিল- বেগম জিয়ার মুক্তি। অতএব এখনও চিন্তা-ভাবনা করুন। এখনও সময় আছে খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিন, অন্যথায় জনগণকে সঙ্গে নিয়ে বিএনপির নেতাকর্মীরা রাজপথে নামলে এক মুহূর্তও কিন্তু টিকতে পারবেন না।’
সরকারের উদ্দেশ্যে ফারুক বলেন, ‘কয়েক ঘণ্টা আগে র্যালির অনুমতি দিয়েছিল আপনাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তাতেই কয়েক লাখ মানুষ একত্রিত হয়েছে। এ থেকেই বোঝা যায়- বিএনপি রাস্তায় নামলে আপনাদের কোনো অস্তিত্বই থাকবে না।’
বিএনপি নেতা বলেন, ‘২০০৮ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত আমরা ক্ষমতায় নাই। আমরা ক্ষমতার বাহিরে এই সময়গুলোতে শুধু জাতির সামনে বক্তব্যই দিয়ে যাচ্ছি। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের হাত ধরে যে দলের যাত্রা শুরু হয়েছিল সেই দলের বর্তমান কাণ্ডারি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া আর ভবিষ্যত রাষ্ট্রনায়ক দলের বর্তমান ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমান। তাই বিএনপিকে নিয়ে বেশি কিছু কিন্তু আপনাদের বলার নেই। আপনার বরং নিজেদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করুন।’
ফারুক বলেন, ‘আজ পত্রিকায় দেখলাম হাইওয়ে রোডে টোলের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। দেশের স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলোর টাকা সরকারের কাছে জমা হচ্ছে। তার কয়েকদিন আগে দেখলাম ঈদের বোনাস সরকারি কর্মকর্তারা পান নাই। তার আগে দেখলাম বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে সরকার। বাংলাদেশে এখন প্রত্যেকটা নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম লাগামহীনভাবে বাড়িয়ে দিচ্ছে সরকার। অথচ এর কোনো প্রতিকার নেই। ঢাকা শহর সয়লাব হলেও ডেঙ্গু প্রতিরোধ করতে পারেনি সরকার, শেয়ারবাজারের লুটকারীদের ধরতে পারেনি। ঋণ খেলাপিদের তালিকা প্রকাশ করতে পারেনি। তাই এই সরকারের কাছে এখন প্রশ্ন- কয়দিন আর ক্ষমতায় থাকবেন এভাবে?’
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা বলেন, ‘দেশে আজ সরকারি কোষাগারগুলো শূন্য করে লুটেরা টাকা নিয়ে যাচ্ছে দেশের বাইরে। লুট হয়ে যাচ্ছে ব্যাংক। খবরদারি বেড়ে যাচ্ছে। দেশের উন্নয়ন নাই জনগণের উন্নয়ন নাই। উন্নয়নের নামে হচ্ছে কয়েকটা মেগা প্রজেক্ট। আর মেগা প্রজেক্টের নামে চলছে অবাধ লুটপাট দুর্নীতি।’
ফারুক বলেন, ‘গ্রামে কালভার্ট নাই, পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা নাই। গ্রামের মানুষ অসহায়। আইশৃঙ্খলাবাহিনীর কী অবস্থা এটা সবাই জানেন। খুন-গুম-লুটপাটে আজ এই সরকার চ্যাম্পিয়নশিপ পেয়েছে। বিচারব্যবস্থা ধ্বংস করে গণতন্ত্র ধ্বংস করে অন্যায়ভাবে বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগারে আটকে রেখেছে সরকার।’
সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘হাতে কোনো কাজ না থাকায় খুন-গুম-লুটপাট-দুর্নীতিই এখন সরকারের অন্যতম কাজ হয়ে দাঁড়িয়েছে।’
অন্য এক প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ইদানিং আওয়ামী লীগের কিছু নেতাকর্মী শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে নিয়ে নানা বিভ্রান্তিকর কথা বলে বেড়াচ্ছেন। এই কথাগুলোর কোনো ভিত্তি নেই। এই কথাগুলো বলা মানে আন্দোলনের মধ্যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা, স্বাধীনতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করা। মন্ত্রী-এমপিদের হাতে কাজ নাই বলেই তারা এসব কথা বলে বেড়াচ্ছেন।’
আয়োজক সংগঠনের সহ-সভাপতি ইব্রাহিমের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য রাজিয়া আলিম প্রমুখ।
Posted ১৬:৫৭ | বুধবার, ০৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | Athar Hossain