রাজধানীর খিলগাঁওয়ে কর্মসূচি পালনের সময় বিএনপির নেতাকর্মীদের লাঠি হাতে অংশ নেওয়ার বিষয়ে সমালোচনা করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। বিএনপির নেতাকর্মীদের হাতে বাঁশের লাঠির সঙ্গে জাতীয় পতাকা কিসের আলামত তা জানতে চেয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।

আজ (২১ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে নিজ দফতরে ব্রিফিংয়ের এমন প্রশ্ন রাখেন সেতুমন্ত্রী।

দলের তিন নেতাকে হত্যা, সারাদেশের বিভিন্ন স্থানে সমাবেশে হামলা ও তেল-গ্যাস-নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে গত মঙ্গলবার রাজধানীতে লাঠি, স্টাম্প হাতে জনসভা করেছে বিএনপি।

গত মঙ্গলবার খিলগাঁও জোড়পুকুর খেলার মাঠে বাঁশের লাঠি, বাংলাদেশের পতাকা টাঙিয়ে সমাবেশস্থলে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে জড়ো হন বিএনপির নেতাকর্মীরা। আত্মরক্ষার্থে এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে দলটির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়।

বিএনপি নেতাকর্মীদের লাঠি হাতে অংশ নেওয়ার বিষয়টি টেনে সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘আজকাল বিএনপির নেতা-কর্মীদের হাতে বাঁশের লাঠির সঙ্গে জাতীয় পতাকা দেখা যাচ্ছে। এটা কিসের আলামত? এটা কি জাতীয় পতাকার অবমাননা নয়?

বিএনপি আন্দোলনের নামে রাজপথে আবারও সহিংসতা ও সন্ত্রাস সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে বলে অভিযোগ করেন কাদের।

নির্বাচনের পাশাপাশি বিএনপি আন্দোলনেও ব্যর্থ হয়েছে এমন অভিযোগ করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘অতীতে যখন বিএনপি ক্ষমতায় ছিল, তখন জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য এবং জনগণের চোখে পড়ার মতো তেমন কোনো উন্নয়ন স্থাপন করতে পারে নাই, যে কারণে জনগণের সঙ্গে তাদের দূরত্ব শুরু হয়েছে।

সেতুমন্ত্রী বলেন, শুধু লিপ সার্ভিস দিয়ে এবং বক্তৃতা-বিবৃতিতে বিষোদগার করে জনগণের থেকে দূরত্ব কমানো সম্ভব নয়। সে কারণে তাদের আন্দোলনে জনগণের সম্পৃক্ততা এবং সাড়া নেই। তাই তারা এখন সহিংসতার পথ বেছে নিচ্ছে।

বিএনপির দুর্নীতি বিশ্ববিদিত উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, গঠনতন্ত্র পরিবর্তন করে নিজেদের দলকে দুর্নীতিবাজদের নিরাপদ আশ্রয়স্থলে পরিণত করেছে বিএনপি।

তিনি বলেন, বিএনপি কখনো কোনো দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের সাহস দেখাতে পারেনি। বিএনপি যখন দুর্নীতি নিয়ে বড় বড় কথা বলে তখন মানুষ হাসে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের মেগা প্রজেক্ট বাস্তবায়নের সক্ষমতায় বিএনপি আত্মদহনে দগ্ধ হচ্ছে- এমন দাবি করে সেতুমন্ত্রী বলেন, বিএনপি নেতারা এখন মেগা হতাশায় ভুগছে।

বিএনপি নেতাদের তাদের অতীত বক্তব্য স্মরণ করিয়ে দিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, তারা একসময় বলেছিলেন জোড়াতালির পদ্মাসেতু যেকোনো সময় ভেঙে পড়বে, অথচ বিএনপি নেতারা এখন ঠিকই পদ্মা সেতু পার হচ্ছেন।

নির্বাচন ও ইসি নিয়ে বিএনপি নেতাদের বক্তব্য প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপি জন্মলগ্ন থেকেই প্রহসনের নির্বাচন জাতির ঘাড়ে চাপিয়ে দিয়েছিল, হ্যাঁ-না ভোটের মাধ্যমে সামরিক উর্দি পরে, আবার কখনো ভোটারবিহীন নির্বাচন করে, কখনো গায়েবি ভোটার তৈরি করে জনগণের নির্বাচনের অধিকার হরণ করেছিল।

তিনি বলেন, বিএনপির মুখে নিরপেক্ষ নির্বাচন ভূতের মুখে রাম নাম। বিএনপি সেসব অপকর্ম ভুলে থাকতে চাইলেও জনগণ কিন্তু তাদের অতীত অপকর্ম ভুলে যায়নি।

‘সরকার জনগণ থেকে দূরে সরে গেছে’ বিএনপি মহাসচিবের এমন বক্তব্যের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, আসলে সরকার নয়, বিএনপির সঙ্গে তৈরি হয়েছে জনগণের যোজন-যোজন দূরত্ব।

এর আগে ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে বাংলাদেশে নিযুক্ত জাইকার প্রধান সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। এ সময় জাইকার অর্থায়নে বাংলাদেশে চলমান বিভিন্ন প্রকল্পের অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা হয়।