শুক্রবার ১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মোহাম্মদপুরে ছিনতাইয়ে হিটার হৃদয়ের নেতৃত্বে বিডিএসকে গ্যাং

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   রবিবার, ২৯ জানুয়ারি ২০২৩ | প্রিন্ট

মোহাম্মদপুরে ছিনতাইয়ে হিটার হৃদয়ের নেতৃত্বে বিডিএসকে গ্যাং

রাজধানী আদাবরের সন্ত্রাসী গ্রুপ বিডিএসকে গ্যাংয়ের প্রধান হৃদয় ওরফে হিটার হৃদয়সহ ৮ সদস্যকে দেশি ও বিদেশি অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)। 

 

গ্রেপ্তাররা হলেন, বিডিএসকে গ্রুপের লিডার শ্রীনাথ মন্ডল ওরফে হৃদয় ওরফে হিটার হৃদয় (২২), রবিন ইসলাম ওরফে এসএমসি রবিন (২০), মো. রাসেল ওরফে কালো রাসেল (২৫), আলামিন ওরফে ডিশ আলামিন (২১), নোমান ওরফে ঘাড় ত্যাড়া নোমান (২১), আশিক ওরফে হিরো আশিক (১৯), জোবায়ের ইসলাম ওরফে চিকনা জোবায়ের (১৯) ও সুমন ওরফে বাইট্টা সুমন (২০)।

 

র‌্যাব-৪ এর একটি দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গত রাতে ফরিদপুর, রাজধানীর সদরঘাট লঞ্চ স্টেশন, মোহাম্মদপুর বেড়িবাঁধ এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাদের গ্রেপ্তার করে।

তাদের দেওয়া তথ্য মতে, মোহাম্মদপুরে তাদের আস্তানায় অভিযান চালিয়ে একটি বিদেশি পিস্তল, ২টি চাপাতি, একটি রামদা, একটি চাইনিজ কুড়াল, ৪টি চাকু (বড় ও ছোট), ২টি হাঁসুয়া, একটি কাঁচি ও একটি লোহার রড উদ্ধার করা হয়।

 

রোববার (২৯ জানুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজার র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইং পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

 

তিনি বলেন, গত ৭ জানুয়ারি রাত ৮টার দিকে রাজধানীর আদাবর থানাধীন তিন রাস্তার মোড় এলাকায় একজনকে জখম করে তার কাছে থাকা মোবাইল ও নগদ অর্থ ছিনতাইকারীরা নিয়ে যায়। পরবর্তীতে ভুক্তভোগীকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে একটি হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যায়। কিছুদিন আগে একই এলাকার এক কলেজ শিক্ষার্থীর নিকট থেকেও একই কায়দায় ছিনতাইকারীরা মোটা অংকের অর্থ ছিনিয়ে নিয়ে যায়। র‌্যাব ঘটনার তদন্তে সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে। যেখানে দেখা যায়, ৮-১০ জনের একটি গ্যাং ছিনতাইয়ের সঙ্গে জড়িত।

এসব ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে র‌্যাব গোয়েন্দা কার্যক্রম চালিয়ে জানতে পারে, ব্রেভ ডেঞ্জার স্ট্রং কিং (বিডিএসকে) গ্রুপের প্রধান হিটার হৃদয়ের নেতৃত্বে ছিনতাইয়ের ঘটনাগুলো সংঘটিত হয়েছে। পরে র‌্যাব অভিযান চালিয়ে করে গত রাতে আটজনকে আইনের আওতায় আনে।

 

গ্রেপ্তারদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তারা বিডিএসকে গ্যাংয়ের সক্রিয় সদস্য। তাদের গ্রুপে প্রায় ২০/২৫ জন সদস্য রয়েছে। গ্যাং লিডার হিটার হৃদয়ের নেতৃত্বে বিগত ২/৩ বছর পূর্বে গ্যাংটি গঠন করা হয়। গ্রুপের সদস্যরা আগে সবুজ বাংলা গ্রুপ, টপ টেন গ্রুপ ও ভাই বন্ধু গ্রুপের অন্তর্ভুক্ত ছিল।

 

গ্রেপ্তাররা মোহাম্মদপুর, আদাবর, বেড়িবাঁধ ও ঢাকা উদ্যান এলাকায় চুরি-ডাকাতি, চাঁদাবাজি, ছিনতাইসহ অন্যান্য সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিল দাবি করে কমান্ডার মঈন বলেন, তারা বিভিন্ন সময় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ঢাকা উদ্যান, আদাবর, শ্যামলী, মোহাম্মদপুরসহ পার্শ্ববর্তী এলাকায় মারামারিসহ বিভিন্ন ধরনের সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করত।

 

এছাড়াও তারা মাদক সেবনসহ সংশ্লিষ্ট এলাকায় মাদক ব্যবসার সাথেও জড়িত ছিল। এই গ্যাংয়ের সদস্যরা রাস্তাঘাটে ইভটিজিং, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপ্রীতিকর ভিডিও শেয়ারসহ বিভিন্ন কুরুচিপূর্ণ কার্যক্রমের সঙ্গেও জড়িত। গ্রেপ্তাররা ছিনতাইয়ের ঘটনার সাথে তাদের জড়িত থাকার বিষয়ে তথ্য দিয়েছে।

গ্রেপ্তারদের অধিকাংশের নামে মাদক, চুরি-ছিনতাই, ডাকাতি, চাঁদাবাজি ও মারামারিসহ রাজধানীর বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে।

 

গ্রেপ্তার গ্যাং লিডার হিটার হৃদয় সম্পর্কে কমান্ডার মঈন বলেন, বিগত ২-৩ বছর যাবত বিডিএসকে গ্যাংয়ের নেতৃত্ব দিয়ে আসছে। তিনি স্থানীয় একটি স্কুল হতে ৩য় শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেন। তিনি গ্রুপটি পরিচালনার পাশাপাশি বিভিন্ন সময়ে লেগুনার হেলপার হিসেবে কাজ করেছেন। গ্যাং গ্রুপের সদস্যদের মাধ্যমে তিনি মোহাম্মদপুর, আদাবর ও বেড়িবাধ এলাকায় চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসা পরিচালনা, আধিপত্য বিস্তারসহ বিভিন্ন ধরনের সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করতেন।

 

গ্রেপ্তার রবিন ইসলাম স্থানীয় একটি স্কুল থেকে ৯ম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেন। বিডিএসকে গ্যাংয়ের বিভিন্ন ধরনের অপরাধমূলক কার্যক্রমে তিনি হৃদয়ের প্রধান সহযোগী হিসেবে কাজ করতেন। গ্যাংয়ের সদস্য হিসেবে অপরাধ কার্যক্রমের পাশাপাশি বিভিন্ন সময়ে আদাবর এলাকায় রিকশার গ্যারেজে কাজ করেছেন।

 

গ্রেপ্তার রাসেলও বিডিএসকে গ্যাংয়ের সদস্য। গ্যাংয়ের সদস্য হিসেবে বিভিন্ন অপরাধ কার্যক্রমে জড়িত থাকার পাশাপাশি তিনি লেগুনার চালক হিসেবেও কাজ করতেন।

 

গ্রেপ্তার ডিশ আলামিন ও ঘাড় ত্যাড়া নোমান আদাবর এলাকায় অটো চালানোর পাশাপাশি গ্যাংয়ের সদস্য হিসেবে বিভিন্ন অপরাধ কার্যক্রমে জড়িত ছিলেন।

 

গ্রেপ্তার জোবায়ের স্থানীয় একটি স্কুল হতে ১০ম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছে। তিনি রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকায় রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন। গ্রেপ্তার হিরো আশিক জোবায়েরের সাথে রাজমিস্ত্রীর হেলপার হিসেবে কাজ করতো।

 

গ্রেপ্তার সুমন মোহাম্মদপুর ও বেড়িবাঁধসহ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় সিএনজি চালাতেন। তারা বিগত কয়েক বছর ধরে এ গ্রুপের সদস্য হিসেবে বিভিন্ন অপরাধ কার্যক্রমের সাথে জড়িত। গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

 

রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় তারা বেপরোয়া ছিল কি-না জানতে চাইলে কমান্ডার মঈন বলেন, তারা বিভিন্ন সময় ব্যক্তি স্বার্থ উদ্ধারেও ভাড়াটে সন্ত্রাসী হিসেবে কাজ করেছে। তবে রাজনৈতিক ছত্রছায়ার তথ্য পাইনি। তবে প্রত্যেকেই একাধিক মামলার আসামি। এরমধ্যে পাঁচজনই একাধিকবার কারাভোগ করে পুনরায় একই অপরাধ কর্মে জড়িয়েছেন।  সূএ: ঢাকা পোস্ট ডটকম

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ০৯:০১ | রবিবার, ২৯ জানুয়ারি ২০২৩

Swadhindesh -স্বাধীনদেশ |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement
Advisory Editor
Professor Abdul Quadir Saleh
Editor
Advocate Md Obaydul Kabir
যোগাযোগ

Bangladesh : Moghbazar, Ramna, Dhaka -1217

ফোন : Europe Office: 560 Coventry Road, Small Heath, Birmingham, B10 0UN,

E-mail: news@swadhindesh.com, swadhindesh24@gmail.com