| বুধবার, ০৪ জুন ২০১৪ | প্রিন্ট
মুহাম্মদ রফিকুল ইসলাম মাসুম, মোরেলগঞ্জ থেকে : বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলা সদর টাউন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. ইউনুস আলী আকনের বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়ম দুর্নীতি ও জাল-জালিয়াতির অভিযোগ পাওয়া গেছে।এসব অভিযোগের মধ্যে রয়েছে জালিয়াতির মাধ্যমে প্রধান শিক্ষক পদ দখল, উচ্চতর বেতন স্কেল গ্রহন, নিজ স্ত্রীকে ভূয়া সনদে চাকুরী প্রদান,বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদ ও শিক্ষকদের স্বাক্ষর জালিয়াতি,শিক্ষকদেরকে নানাভাবে হয়রানী করাসহ ভূয়া বিল ভাউচারের মাধ্যমে লক্ষলক্ষ টাকা আত্মস্বাতের অভিযোগ।
সম্প্রতি স্থানীয় সংসদ সদস্যের সুপারিশসহ জেলা শিক্ষা অফিসারসহ সংশ্লীষ্ট বিভাগের বিভিন্ন দপ্তরে দায়েরকৃত লিখিত অভিযোগেজানাগেছে, প্রধান শিক্ষক মো. ইউনুস আলী আকন ১৯৯৩ সালের ১২জুন উপজেলার ধানসাগর তুজাম্বর আলী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক (ইনডেস্কনং-২১৬৯৯২) হিসেবে যোগদান করেন।সরকারি বিধিমতে চাকুরীর বয়সসীমা ৮ বছর অতিবাহিত হলে শিক্ষকতা পেশায় উচ্চতর বেতনস্কেল গ্রহনের যোগ্যতা অর্জিত হয়। কিন্তু মো. ইউনুস আলী আকন মাত্র ৩ বছরের ব্যাবধানে শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদপত্রসহ নিয়োগ-যোগদানপত্র জালিয়াতি করে ভূয়া কাগজপত্র দিয়ে উচ্চতর বেতনস্কেল গ্রহন করেন।
সরকারি বিধান অনুযায়ী প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগে যোগ্যতার ক্ষেত্রে সহকারী প্রধান শিক্ষক হিসেবে কমপক্ষে ৩ বছরের অভিজ্ঞতাসহ নিরবিচ্ছিন্নভাবে ১৫ বছরের শিক্ষকতার নিয়ম থাকলেও তা লংঘন করে মাত্র ১০বছরের ব্যাবধানে তিনি জালজলিয়াতি করে নিয়োগ সংশ্লিষ্ট সকলকে ধোকা দিয়ে ২০০৪ সালে টাউন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের পদটি দখল করেন। দুর্নীতিবাজ প্রধান শিক্ষক মো. ইউনুস আলী আকনের নিজ স্ত্রী ফারজানা পাপড়ি আলিম পাশ হওয়া সত্ত্বেও øাতক ও শিক্ষক নিবন্ধনের জাল সনদ দিয়ে তাকে একই বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক সমাজ বিজ্ঞান পদে নিয়োগ দিয়ে এমপিওভূক্ত করান (ইনডেস্ক নং-এটি-১০৫৮৬৪৬)। এদিকে উম্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে অধিনে প্রধান শিক্ষকের স্ত্রী ফারজানা পাপড়ির এসএম কলেজে ডিগ্রিতে (আইডি-১০-০-২৩-৪৮১-০৬০) অধ্যায়নের বিষয়টি প্রকাশ পাওয়ায় সহকারী শিক্ষক পদে øাতক ও শিক্ষক নিবন্ধনের ভূয়া সনদ দিয়ে তার নিয়োগ যোগদান ও এমপিওভূক্তির বিষয়টি বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় প্রকাশ হয়।
২০১৩ সালে মহা পরিচালক,মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে এমপিও সিটে বেসরকারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সুনির্দিষ্ট পদবী মুদ্রনের জন্য তথ্য চাওয়া হয়।এসময় বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতিসহ সকল শিক্ষক শিক্ষিকাগণ প্রধান শিক্ষককে এমপিও সিটে জালসনদে নিয়োগপ্রাপ্ত তার নিজ স্ত্রী ফারজানা পাপড়ির নাম অন্তর্ভূক্তিতে বাঁধা দেন।কিন্তু দুর্নীতিবাজ প্রধান শিক্ষক মো. ইউনুস আলী আকন নিজেই পরিচালনা কমিটির সভাপতি,শিক্ষক প্রতিনিধিসহ সকল শিক্ষক শিক্ষিকার স্বাক্ষর জাল করে ভূয়া সনদে নিয়োগপ্রাপ্ত তার নিজ স্ত্রী ফারজানা পাপড়ির নাম ওইতালিকাভূক্ত করেন।
চতুর প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক শিক্ষিকাদের মুল সনদপত্র, নিয়োগ ও যোগদানপত্র কৌশলে জব্দ করে তাদেরকে নানা ভাবে হয়রানী করে আসছেন।২০১৩সালের অক্টোবরে শিক্ষক শিক্ষিকাদের তথ্য বিবরণী প্রেরনকালে তাদের কাছ খেকে বিভিন্ন অংকে টাকা আদায় করেন।এছাড়াও তিনি তাদেরকে জিম্মি করে ৩লক্ষ টাকার বিল ভাউচারে স্বাক্ষর করিয়ে নেন বলে অভিযোগ রয়েছে। সম্প্রতি একজন অফিস সহকারী নিয়োগ দিয়ে তিনি সাড়ে ৩ লক্ষ টাকা গ্রহন করেন। ওই টাকা দিয়ে বিদ্যালয়ের প্রাচির নির্মাণ করার কথা থাকলেও তিনি তা না করে ওই টাকা আত্মস্বাত করেন বলে শোনা যায়।অভিযোগ রয়েছে প্রধান শিক্ষক একাধিক রেজুলেশন খাতা,নোটিশ খাতা,হাজিরা খাতা ব্যাবহার এবং শির্ক্ষাীদের ভূয়া তালিকা প্রদান করে সংশ্লীষ্টদের স্বাক্ষর জাল করে উপবৃত্তি,টিউশন ফিসহ সরকারি বিভিন্ন অনুদান আত্মস্বাত করে আসছেন বলে জানা গেছে।
এসব অভিযোগের বিষয় প্রধান শিক্ষক মো. ইউনুস আলী আকনের কাছে জানতে চাইলে তিনি সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন,জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধকে কেন্দ্র করে একটি মহল তাকে হেয় প্রতিপন্য করার জন্য মিথ্যা ও ভিত্তিহীন অভিযোগ করেছে। জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. মিজানুর রহমানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন,অভিযোগ পেয়েছি এবং জনৈক কর্মকর্তাকে তদন্তের দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে ।
Posted ১০:৫৬ | বুধবার, ০৪ জুন ২০১৪
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | admin