| শুক্রবার, ১৪ মার্চ ২০১৪ | প্রিন্ট
ঢাকা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি চূড়ান্ত করেছেন দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। কমিটিতে থাকছেন দলের নবীন-প্রবীণ সদস্যরা। কমিটির সদস্য রাখা হবে ২১ থেকে ২৫ জনের মতো। যেকোনো সময় এই কমিটি ঘোষণা করা হতে পারে। পরবর্তী ৯০ দিনের মধ্যে কাউন্সিলের মাধ্যমে পূর্ণাঙ্গ মহানগর কমিটি করার দায়িত্ব থাকবে আহ্বায়ক কমিটির। নতুন কমিটি নিয়ে কাজ করছে এমন কয়েকটি সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
মহানগর বিএনপির কমিটি চূড়ান্ত, ঘোষণার অপেক্ষা
মহানগর বিএনপির নতুন আহ্বায়ক কমিটিতে থাকতে পারেন এমন একজন নেতা জানান, দলের স্থায়ী কমিটির এক সদস্য গত বুধবার তাঁকে ফোনে জানিয়েছেন নতুন দায়িত্ব পালনের জন্য প্রস্তুত থাকতে।
দলের একাধিক নেতা জানান, দলের ভাইস চেয়ারম্যান ও ঢাকা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সাদেক হোসেন খোকা কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে গুলশানে খালেদা জিয়ার সঙ্গে তাঁর কার্যালয়ে একান্তে কথা বলেন।
দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও ওই সময় উপস্থিত ছিলেন। কমিটি পুনর্গঠনের প্রক্রিয়া নিয়ে খোকার মতামত জানতে চান বেগম জিয়া। মির্জা আব্বাসকে আহ্বায়ক করে কমিটি করার কথা বলেন খোকা। কিন্তু মির্জা আব্বাস মহানগর কমিটির দায়িত্ব নিতে চান না বলে আগেই জানিয়েছেন চেয়ারপারসনকে। খোকা তখন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আ স ম হান্নান শাহ অথবা ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়াকে দায়িত্ব দেওয়ার পরামর্শ দেন। পরে দলের সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে একান্তে কথা বলেন বেগম জিয়া। সব কিছু বিবেচনা করে তিনি নতুন কমিটি চূড়ান্ত করেন। এখন শুধু ঘোষণা বাকি রয়েছে।
জানতে চাইলে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান বলেন, যোগ্য ও পরীক্ষিতদের দিয়ে ঢাকা মহানগর বিএনপির কমিটি চূড়ান্ত করেছেন দলীয় প্রধান। স্থায়ী কমিটির বৈঠকেও এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। যেকোনো সময় কমিটির ঘোষণা আসতে পারে। নবীন-প্রবীণদের সমন্বয়ে কমিটি হচ্ছে বলেও জানান তিনি। মহানগর কমিটি উত্তর-দক্ষিণে ভাগ করা হবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে স্থায়ী কমিটির বৈঠকে আলোচনা হলেও চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
এদিকে নতুন কমিটি গঠন নিয়েও দেখা দিয়েছে বিভক্তি। নতুন কমিটিতে কারা স্থান পাচ্ছেন তা নিয়ে চলছে জল্পনা-কল্পনা। কাঙ্ক্ষিত পদ পেতে দলীয় কর্মকাণ্ডে তৎপরতা বাড়ানোর পাশাপাশি দৌড়ঝাঁপ করছেন সংশ্লিষ্টরা। অন্যদিকে নবীন-প্রবীণ সমন্বয়ে কমিটি করার বিষয়ে জোর দিয়েছেন খালেদা জিয়া। কমিটি ঘোষণার পর নেতাদের মধ্যে কোনো সমস্যার সৃষ্টি হয় কি না সেই বিষয়টিও বিবেচনায় রেখেছেন তিনি। এ জন্যই বিষয়টি নিয়ে খোকার সঙ্গে দলীয় প্রধান পরামর্শ করেন বলে সূত্র জানায়।
বিএনপির বেশ কয়েকজন নেতা জানান, বিগত ১৭ বছর মহানগর বিএনপির প্রধান ছিলেন খোকা। তাই নতুন কমিটি ঘোষণার পর যেন খোকার অনুসারীরা কোনো ধরনের সমস্যা সৃষ্টি করতে না পারে, সে বিষয়টি মাথায় রেখেই কমিটি দিচ্ছেন দলীয় প্রধান।
সূত্র মতে, হান্নান শাহকে আহ্বায়ক হিসেবে রেখে বৃহস্পতিবার (গতকাল) রাতের মধ্যেই কমিটি ঘোষণা করতে পরামর্শ দেন দলের একটি পক্ষের নেতারা। তাঁদের যুক্তি, শুক্রবার খালেদা জিয়া গুলশানে তাঁর রাজনৈতিক কার্যালয়ে যান না। কাজেই বৃহস্পতিবার কমিটি ঘোষণা দিলে অন্য নেতারা কার্যালয়ে গিয়ে তদবির করতে পারবেন না। তবে কমিটি শুক্রবারের মধ্যে না হলে কয়েক দিন পেছাতেও পারে। কারণ ১৬ মার্চ মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দলের বেশ কয়েকজন নেতার হাজিরা রয়েছে আদালতে। পুনর্গঠিত মহানগর কমিটিতে থাকছেন এমন কয়েকজন নেতাও সেদিন হাজিরা দেবেন। এ ছাড়া হান্নান শাহও অসুস্থ। সম্প্রতি তিনি দেশের বাইরে থেকে চিকিৎসা করিয়ে এসেছেন। এ ছাড়া অর্থপাচার মামলায় দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। কমিটি দেওয়ার আগে এ বিষয়টিও বিবেচনা করা উচিত বলে অনেকে মনে করেন। কারণ অনেক নেতার মধ্যে আতঙ্ক শুরু হয়েছে তাঁরা আবার গ্রেপ্তার হন কি না।
এদিকে কমিটি ঘোষণা এবং আহ্বায়ক হওয়ার সম্ভাবনা সম্পর্কে জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আ স ম হান্নান শাহ বলেন, ‘এ বিষয়ে এখনই আমার কোনো মন্তব্য করা ঠিক হবে না।’
কমিটি গঠন বিষয়ে খালেদা জিয়ার দৃষ্টিভঙ্গিতে সংশ্লিষ্টরা নিশ্চিত হয়েছেন, বর্তমান কমিটির প্রথম সারির কেউ এতে থাকছেন না। তবে যুগ্ম আহ্বায়কদের কেউ কেউ থাকতে পারেন। দলীয় সূত্র দাবি করছে, নতুন কমিটিতে থাকতে পারেন দলের নেতা আমানউল্লাহ আমান, মোহাম্মদ শাহজাহান, বরকতউল্লা বুলু, সালাহ উদ্দিন আহমদ, আবুল খায়ের ভূঁইয়া, আবু সাইদ খান, কাজী বাশার, এম এ কাইয়ুম, নাসির উদ্দিন আহমেদ পিন্টু, মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, আবদুস সালাম, আবদুল লতিফ, মো. শাহাবউদ্দিন প্রমুখ।
সূত্রগুলো বলছে, আহ্বায়ক কমিটির উপদেষ্টা হিসেবে থাকতে পারেন ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল আউয়াল মিন্টু প্রমুখ।
Posted ১১:১৩ | শুক্রবার, ১৪ মার্চ ২০১৪
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | admin