মঙ্গলবার ২৩শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১০ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বৈশাখের উৎসবে তারুণ্যের ফ্যাশন

  |   শুক্রবার, ০৭ এপ্রিল ২০১৭ | প্রিন্ট

বৈশাখের উৎসবে তারুণ্যের ফ্যাশন

ফ্যাশন ডেস্ক: বাংলা নববর্ষকে সামনে রেখে বাঙ্গালি সবচেয়ে বেশি প্রস্তুতি নেন পোশাককে ঘিরে। এই পোশাকগুলো সরবরাহ করে আমাদের দেশি ফ্যাশন হাউসগুলো। তারাও তাদের পোশাকের নকশা করার ক্ষেত্রে ঋতু বা মৌসুমকে প্রাধান্য দিচ্ছে।

এই ফ্যাশন হাউসগুলো বৈশাখী উৎসবকে কেন্দ্র করেও প্রতি বছরই পোশাকে নানা পরিবর্তন নিয়ে আসে। এরই ধারাবাহিকতায় এবছরও রঙে যেমন এসেছে বৈচিত্র্য তেমনি পরিবর্তন এসেছে কাটিং ও কাজে। বাঙালির বর্ষবরণ শুরু হয় লাল-সাদা দিয়ে। ফ্যাশনে এর কী কোন ব্যাখ্যা আছে? তবে এর উত্তর কিছুটা দূরহ হলেও পাওয়া যাবে বেশকিছু ধারণা। প্রকৃতিতে বৈশাখের নিজস্ব একটা রঙ আছে, তার প্রকাশ ঘটলে বদলে যায় বাঙালির রূপ। নতুন রঙে বাংলার জীবনকে রাঙাতে আসে বৈশাখ।

বৈশাখের চিরায়ত রঙ লাল-সাদা’র চল কেন বা কবে থেকে, এ বিষয়ে রয়েছে মতভেদ। কারও কারও মতে, ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটে বৈশাখের প্রধান আয়োজন হালখাতা! যার মোড়কের অংশ লাল এবং ভেতরের পাতার রঙ সাদা, সেখান থেকে লাল-সাদা আসতে পারে! আবার অনেকে মনে করেন, আগেকার দিনে হিন্দু নারীরা লাল পাড়ের সাদা শাড়ি পরে বিভিন্ন পূজা-পার্বণে অংশ নিত, সেখান থেকেও আসতে পারে লাল-সাদা।যদিও এসব কারণের পেছনে গ্রহণযোগ্য তেমন যুক্তি পাওয়া যায় না। কারণ, সাধারণভাবেই অনেক সম্ভান্ত পরিবারে মেয়েদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে লাল পেড়ে সাদা শাড়ির পরিধানের প্রচলন ছিল। বাস্তবতা হলো, ধীরে-ধীরে তা উৎসবের পোশাকে পরিণত হয়েছে। বৈশাখের রঙ লাল-সাদা হওয়ার কারণ যাই হোক, তা শুরু থেকে সর্বজনীনভাবে মান্য হয়ে আসছে। রমনার বটমূলে ছায়ানটের আনুষ্ঠানিক বর্ষবরণের মাধ্যমে এর কিছুটা বিস্তৃতি ঘটেছে। স্বাধীনতা-উত্তর বৈশাখী আয়োজনে দেশীয় ফ্যাশন হাউজেগুলোতে লাল-সাদাকেই প্রেরণা হিসেবে বেছে নেওয়ার ধারাটি গতিশীল থাকে এবং স্বাভাবিকভাবে বৈশাখের রঙ লাল-সাদা-এ প্রাতিষ্ঠানিক রুপ লাভ করে। এ ব্যাপারে কথা হয় ফ্যাশন ডিজাইনার পার্থ’র সঙ্গে। তিনি জানান, শুরুটা লাল-সাদা দিয়ে হলেও ২০০৬-০৭ এর দিকে বৈশাখের পোশাকের রঙে সংযোজন হয়েছে বাহারি রঙ। যেমন- পেস্ট, কালো, হলুদ, মেরুন, গোল্ডেন, ম্যাজেন্টা ও সবুজের বিভিন্ন শেডের ব্যবহার ছিল চোখে পড়ার মতো।তবে আগেরটি মূল প্রেরণার মধ্যেই রয়ে গেছে। তবে বিভিন্ন রঙ সংযোজনের চেষ্টা চলতে অব্যহত ছিল। এছাড়া ২০১০-১১ সালের দিকে, লাল-সাদার পাশাপাশি কোড়া, হলুদ, অফ হোয়াইট, কমলা, বাসন্তী, নীল, বেগুনি, সবুজ, টিয়া, কালো, ম্যাজেন্টা, লাইমগ্রিন, ফিরোজা, ইটলাল ইত্যাদি রঙের ব্যবহারও দেখা যায়। ২০১২ সালে লাল-সাদা তার শক্ত অবস্থান বজায় রাখলেও এর পাশাপাশি কর্তৃত্ব করে লাল গ্রুপের রঙ। এছাড়া ছিল কালো, ফিরোজা, সবুজ, নীলের মৃদু ব্যবহার। ফ্যাশন হাউজগুলো যখন থেকে বৈশাখের পোশাক নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কাজ শুরু করেছে তখন থেকেই সাদা-লালেই আটকে ছিল। পরবর্তীকালে অন্যান্য রঙ ব্যবহার করার চেষ্টা হলেও কোনো রঙই সুবিধা করতে পারেনি এবং পারবেও না। এটি ফিক্সড হয়ে গেছে সাদা-লালে। ফলে এবারের বৈশাখেও ট্র্যাডিশনাল লাল-সাদা, লাল-কোড়া বা অফ হোয়াইট প্রধান রঙ হিসেবে থাকবে। সঙ্গে সাপোর্টিং হিসেবে থাকছে ম্যাজেন্টা, কমলা, হলুদ, সবুজ, নীল ও গ্রুপ রঙের ব্যবহার। তবে ট্র্যাডিশনাল রঙে লালের বিভিন্ন শেড চোখে পড়ার মতো।

মানুষ বৈশাখের উৎসবে লাল-সাদাকেই বেশি পছন্দ করে। ফলে এর প্রাধান্য বেড়েছে এবং এটিই শেষ পর্যন্ত টিকে আছে। অন্য সব উৎসবে বিচিত্র রঙ ব্যবহার করা এবং তা পাল্টে নেয়ার সুযোগ আছে কিন্তু বৈশাখের ফ্যাশনে তা নেই এবং এটাই ভালো। যেহেতু এ দিনটি উদযাপন করতে বাঙালিয়ানার ষোলকলা পূর্ণ করতে সবার আগে চাই লোকজ ঐতিহ্যের পোশাক।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ০৪:৪৪ | শুক্রবার, ০৭ এপ্রিল ২০১৭

Swadhindesh -স্বাধীনদেশ |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement
Advisory Editor
Professor Abdul Quadir Saleh
Editor
Advocate Md Obaydul Kabir
যোগাযোগ

Bangladesh : Moghbazar, Ramna, Dhaka -1217

ফোন : Europe Office: 560 Coventry Road, Small Heath, Birmingham, B10 0UN,

E-mail: news@swadhindesh.com, swadhindesh24@gmail.com