বুধবার ২৪শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১১ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বর্তমানে বিএনপিই দেশের সবচেয়ে বড় সমস্যা : মাহবুবউল আলম হানিফ

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   রবিবার, ১৩ নভেম্বর ২০২২ | প্রিন্ট

বর্তমানে বিএনপিই দেশের সবচেয়ে বড় সমস্যা : মাহবুবউল আলম হানিফ

স্বাধীনদেশ : আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ এমপি মন্তব্য করেছেন, ‘বর্তমানে বিএনপিই দেশের সবচেয়ে বড় সমস্যা।’ আজ সকালে ঝিনাইদহ পৌরসভাধীন ওয়াপদা মাঠে জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্যদানকালে তিনি এই মন্তব্য করেন। হানিফ দাবি করেন, ‘নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপি-জামায়াত আবারও অশুভ তৎপরতায় লিপ্ত। বিএনপিকে পরিষ্কার বলে দিতে চাই- কোনো ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড সহ্য করা হবে না। দেশের মানুষ উন্নয়ন চায়, শান্তি চায়। দেশের মানুষ কখনো বিএনপির দুর্নীতিবাজ নেতৃত্ব চায় না। ব্যর্থরাষ্ট্রে ফিরে যেতে চায় না। সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদের দেশ চায় না।

বিএনপিকে ভণ্ড দল উল্লেখ করে হানিফ বলেন, ‘রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিদ্যুৎ উৎপাদন কমিয়ে সাশ্রয় করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী ভবিষ্যৎ সংকট মোকাবেলায় এই প্রস্তুতি নিয়েছেন। বিএনপি এই সুযোগে অপতৎপরতা শুরু করেছে। ঢাকায় সন্ধ্যার পর লাইটপোস্টের নিচে হাতে হারিকেন নিয়ে বিদ্যুতের দাবিতে মিছিল করছে। এর চেয়ে বড় তামাশা আর কিছু হতে পারে না।

খালেদা জিয়া মানবতার মা নয়; বরং শত্রু হিসেবে বিবেচিত হতে পারেন মন্তব্য করে হানিফ বলেন, ‘বিএনপি নেতা মির্জা ফখরুল বলেন- খালেদা জিয়া নাকি গণতন্ত্র, মানবতার মা। যে খালেদা জিয়ার হাত ২৬ হাজার নেতাকর্মীর রক্তে রঞ্জিত সে কী করে মানবতার মা হয়? খালেদা জিয়া খুনির মা। আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, ‘বিএনপি নেতারা দুর্নীতির কথা বলেন। অথচ তাদের নেতা তারেক রহমানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির কারণে সিঙ্গাপুরের আদালতে মামলা হয়েছিল। ১০ বছর জেল হয়েছে। মার্কিন ফেডারেল কোর্টেও মামলা হয়েছে। খালেদা জিয়া তো এতিমের টাকার লোভ সামলাতে না পেরে আত্মসাৎ করেছিলেন। এই হচ্ছে বিএনপির নেতা। তারা নাকি আগামী দিনের ভবিষ্যৎ।

বিএনপি-জামায়াতের মন থেকে এখনো পাকিস্তান প্রেম যায়নি মন্তব্য করে হানিফ বলেন, ‘আপনাদের মন থেকে এখনো পাকিস্তানপ্রীতি কমেনি। বিএনপি নেতাদের চিন্তা চেতনায় তা প্রকাশ পায়। টেক ব্যাক বাংলাদেশ নয়; গো ব্যাক টু পাকিস্তান। আপনারা পাকিস্তান চলে যান। আপনারা পাকিস্তান চলে গেলে দেশের মানুষ অখুশি হবে না, খুশি হবে। হানিফ দাবি করেন, ‘ঢাকায় মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, পায়রা সমুদ্রবন্দর, মাতারবাড়ি তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র ও কর্ণফুলী টানেলের মতো প্রকল্প বাস্তবায়ন করে শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশের দিকে নিয়ে যাচ্ছেন। ঠিক এই সময়ে উন্নয়ন, অগ্রযাত্রাকে ব্যাহত করতে বিএনপি-জামায়াত আবার মাঠে নেমেছে।

আওয়ামী লীগের এই জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, ‘২০০৯ সালে আমরা যখন ক্ষমতায় এসেছিলাম তখন দেশে ৪০ থেকে ৬০ লাখ মেট্রিক টন খাদ্য ঘাটতি ছিল। রপ্তানি আয়, মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি পেয়েছে। শতকরা ৩০ ভাগ মানুষের ঘরে বিদ্যুৎ ছিল। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ৩-৪ ঘণ্টা বিদ্যুৎ ছিল। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা শতভাগ মানুষের ঘরে বিদ্যুৎ পোঁছে দিয়েছেন। হানিফ বলেন, ‘২০০১ থেকে ২০০৬ সালে বিএনপি রাষ্ট্র ক্ষমতায় থাকতে দেশ ধ্বংসের দিকে চলে গিয়েছিল। তারেক রহমান হাওয়া ভবন বানিয়ে কমিশন বাণিজ্য করেছেন। তাকে কমিশন দেওয়া ছাড়া কেউ কাজ করতে পারেনি। দেশকে অন্ধকারে নিয়ে গিয়েছিলেন। সেই অন্ধকার থেকে দেশকে আলোয় উদ্ভাসিত করেছেন শেখ হাসিনা।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর খুনি জিয়াউর রহমান অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে বিএনপি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। স্বাধীনতা বিরোধীদেরকে রাজনৈতিক ও সমাজিকভাবে প্রতিষ্ঠিত করে দুর্যোগ সৃষ্টি করেছেন। ১৪০০ সামরিক কর্মকর্তাকে বিনা বিচারে হত্যা করেছেন। জামায়াতকে রাজনীতির সুযোগ দিয়ে জঙ্গিবাদের বীজ বপণ করেছিলেন। ১৯৯১ সালে ক্ষমতায় এসে খালেদা জিয়া দেশে প্রতিহিংসার রাজনীতির বীজ বপন করেছিলেন দাবি করে হানিফ বলেন, ‘১৫ আগস্ট কাল্পনিক জন্মদিন পালন করে প্রতিহিংসার রাজনীতি শুরু করেছিলেন খালেদা জিয়া। সেই সময় তিনি আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ওপর নির্যাতন ছাড়া আর কিছুই করতে পারেননি।’

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে উদ্দেশ্য করে হানিফ বলেন, ‘২০০১ সালে ক্ষমতায় আসার পর কত মায়ের কোল খালি করেছেন, মনে পড়ে? ২০০১ থেকে ২০০৬ সালে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ওপর নির্যাতন সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছিল। আজকে মির্জা ফখরুল কথায় কথায় গণতন্ত্র, মানবতার কথা বলেন। নেতাকর্মীদের ওপর মামলার কথা বলেন। অথচ এই বিএনপির সন্ত্রাসীরা আওয়ামী লীগের ২৬ হাজার নেতাকর্মী হত্যা করেছিল। ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা চালিয়ে আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করে দিতে চেয়েছিল। সেদিন শেখ হাসিনা প্রাণে বাঁচলেও আওয়ামী লীগের ২৪ জন নেতাকর্মী নিহত হয়েছিলেন। আপনাদের মুখে মানবতার কথা শুনলে হাস্যকর মনে হয়। যাদের হাত হাজার হাজার আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীর রক্তে রঞ্জিত তাদের মুখে গণতন্ত্রের কথা মানায় না।

দলের নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ থাকার আহবান জানিয়ে হানিফ বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াত ২০১৩, ২০১৪ ও ২০১৫ সালে নাশকতা করে বাসে ট্রেনে মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করেছে। তারা আবার রাজপথে সোচ্চার হচ্ছে। আমাদেরকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। বিএনপিকে হুঁশিয়ারি দিয়ে হানিফ বলেন, ‘রাজপথে সহিংসতা করার চেষ্টা করলে সরকার কঠোরভাবে তা দমন করবে। পাশাপাশি প্রয়োজন হলে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বিএনপির অপতৎপরতা রুখে দিয়ে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম। প্রধান বক্তা হিসেবে ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ১৪:৪১ | রবিবার, ১৩ নভেম্বর ২০২২

Swadhindesh -স্বাধীনদেশ |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

(729 বার পঠিত)
advertisement
advertisement
advertisement
Advisory Editor
Professor Abdul Quadir Saleh
Editor
Advocate Md Obaydul Kabir
যোগাযোগ

Bangladesh : Moghbazar, Ramna, Dhaka -1217

ফোন : Europe Office: 560 Coventry Road, Small Heath, Birmingham, B10 0UN,

E-mail: news@swadhindesh.com, swadhindesh24@gmail.com