শনিবার ২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম >>
শিরোনাম >>

প্রভাবশালীর অবৈধ ভবন ভেঙে রাজউক প্রমাণ করুক, তারা পারে: মেয়র সাঈদ খোকন

  |   রবিবার, ৩১ মার্চ ২০১৯ | প্রিন্ট

প্রভাবশালীর অবৈধ ভবন ভেঙে রাজউক প্রমাণ করুক, তারা পারে: মেয়র সাঈদ খোকন

সাধারণ নাগরিকরা রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) উপর আস্থা হারিয়েছেন উল্লেখ করে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র সাঈদ খোকন বলেছেন, দু’একটা প্রভাবশালীর অবৈধ ভবন ভেঙে তো রাজউক প্রমাণ দিতেই পারে যে তারা পারে।

রোববার (৩১ মার্চ) রাজধানীর কলাবাগানের ইয়াকুব সাউথ সেন্টারে স্টেট ইউনিভার্সিটি আয়োজিত ‘অগ্নিকাণ্ড : কারণ ও করণীয়’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন তিনি।

সাঈদ খোকন বলেন, রাজধানীতে অবৈধভাবে গড়ে উঠেছে সাড়ে ৫ হাজার ভবন। আজ রাজউক চাইলেই তা ভাঙা অসম্ভব। সাধারণ নাগরিকরা বিশ্বাসও করেন না এই অবৈধ ভবন ভেঙে রাজউক নতুন শহর উপহার দেবে। কিন্তু রাজউক তো একটা কাজ করতেই পারেন যে, প্রতীকী অর্থে প্রমাণ করে দিক একজন সর্বোচ্চ প্রভাবশালীর দ্বারা অবৈধভাবে গড়ে ওঠা ভবনটি ভেঙে ফেলুক। তাহলেই বুঝবো রাজউকের সদিচ্ছা, আন্তরিকতা রয়েছে।

মেয়র বলেন, রাজধানীতে অবৈধভাবে গড়ে উঠেছে সাড়ে ৫ হাজার ভবন। রাজধানীর এইসব অবৈধ ভবন ভাঙার কি ক্যাপাসিটি রয়েছে রাজউকের? ভেঙে সেখানে নতুন করে গড়বার সাধ্য কি আছে? ভাঙতে গেলেও তো সেখানে যে ময়লা হবে তার ডাম্পিং কোথায় করবে? এটা তো অসম্ভব ব্যাপার। কিন্তু এই ভবনগুলো তো একদিনে গড়ে ওঠেনি। আইন অমান্য করে কেউ না কেউ তো এই ভবনগুলো অবৈধভাবে করেছি। অন্য কোনো দেশের নাগরিক করেনি। আমাদের নাগরিকরাই করেছি।

তিনি বলেন, উচিত ছিল তখনই যখন ভবনগুলো নির্মাণ হচ্ছিল তখন বাধা দেয়া ও আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করা। আজকে এই ভবনগুলো যদি ভাঙতে চাই তা তো অসম্ভব।

সাঈদ খোকন বলেন, এই যে সমস্যা তা একদিনে সৃষ্টি হয়নি। বছরের পর বছর অব্যবস্থাপনা, অবহেলা আর অসক্ষমতার মধ্য দিয়ে তৈরি হয়েছে। আজকে রাজউক এই সাড়ে ৫ হাজার ভবন ভাঙবে-এটা সাধারণ নাগরিকরা বিশ্বাসও করেন না।

মেয়র বলেন, ঢাকা পৃথিবীর সবচেয়ে ঘনবসতির দেশ। ঢাকায় প্রতিদিন নতুন মানুষের আগমন ঘটে ৬ হাজার। ঢাকার মধ্যে পুরান ঢাকা আরও বেশি ঘনবসতির। ঢাকার প্রবৃদ্ধি উল্লেখজনক হারে বাড়ছে। কিন্তু অনেকেই শহুরে জীবনে অভ্যস্ত নন।

তিনি বলেন, সচেতনতা সবার জন্যই। সমাজের অনেক মানুষ রয়েছে শিক্ষিত দামি গাড়িতে ঘুরছে। কিন্তু অসচেতন মনে ওয়াটার বোতল, ব্যবহৃত টিস্যু রাস্তায় ছুড়ে ফেলে দিচ্ছেন। শিক্ষিত মানুষের মধ্যে যদি বোধ খুঁজে না পাই তাহলে অর্ধশিক্ষিত কিংবা অশিক্ষিত মানুষকে দোষ দিয়ে কি লাভ?

অগ্নিকাণ্ডের ক্ষেত্রে সচেতনতার বিকল্প নেই জানিয়ে তিনি বলেন, চুরিহাট্টার অগ্নিকাণ্ডের পর সবাইকে সচেতন হবার অনুরোধ জানানো হয়। সবাই আগ্রহীও হয়। দ্রুত সময়ের মধ্যে কেমিক্যাল সরাতে বলা হয়। এরপর কিন্তু আরও একটি আগুনের ঘটনা ঘটেছিল। প্রস্তুতি থাকায় বড় ধরনের কিছু ঘটেনি। এজন্য সচেতনতা বৃদ্ধি জরুরি।

সাঈদ খোকন বলেন, দ্বিতীয় যে হারে প্রবৃদ্ধি বাড়ছে, ভৌত অবকাঠামো বেড়েছে তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে সেবামূলক সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানের সেবা বাড়েনি। সক্ষমতা বাড়েনি। এক্ষেত্রে সিটি কর্পোরেশনও বাইরে নয়। গত ৪ বছরে একটি বিষয় খুব পীড়া দিয়েছে। মাত্র ৪০ শতাংশ মানুষকে সেবা দেয়ার মতো জনবল আমাদের রয়েছে।

আমলাতান্ত্রিক জটিলতার ব্যাপারে ক্ষোভ প্রকাশ করে মেয়র বলেন, অধিকতর সেবা ও সেবার মান বৃদ্ধি এবং সেবা সর্বস্তরে পৌঁছে দিতেই ২০১১ সালে ঢাকা সিটি কর্পোরেশন বিভক্ত করা হয়। গত ৪ বছরে আমি চেষ্টা করেও ৬০ শতাংশ জনবলের অভাব পূরণ করতে পারিনি। কারণ আমলাতান্ত্রিক জটিলতা। আজ ২০১৯ সাল চলছে, আশ্চর্য হলেও এটাই সত্যি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় আমাদের সে জনবলের বিষয়টি ঝুলিয়ে রেখেছে।

তিনি বলেন, চুরিহাট্টায় আগুনের পর বলা হলো, সিটি কর্পোরেশন কেন মামলা করব না। যৌক্তিক কথা। কিন্তু সিটি কর্পোরেশনের ক্ষমতায় সেটা নেই। ট্রেড লাইসেন্স ছাড়া ব্যবসা ও দোকান করার কারণে সর্বোচ্চ ৫ হাজার টাকা জরিমানা করতে পারে সিটি কর্পোরেশন, মামলা করতে পারে না।

সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে সমন্বয়ের অভাব রয়েছে উল্লেখ করে সাঈদ খোকন বলেন, আমাদের সেবা দানের ক্ষেত্রে সবগুলো সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সমন্বয় নেই। সময় এসেছে সবাই বসে সমন্বয় করা। সচেনতা বৃদ্ধি করা। তবেই সম্ভব ঘুরে দাঁড়ানো।

স্টেট ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞান অনুষদের ডিন স্থপতি অধ্যাপক শামসুল ওয়ারেসের অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। সঞ্চালনা করেন অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস।

গোলটেবিল আলোচনায় আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স পরিচালক (অপারেশন অ্যান্ড মেইনটেইন্যান্স) মেজর শাকিল নেওয়াজ, বুয়েটের স্থাপত্য বিভাগের প্রধান ড. নাসরিন হোসাইন, বুয়েটের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মফিজুর রহমান, কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. ইয়াসির আরাফাত খান, বাংলাদেশ অ্যাসিড মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোহাম্মদ উল্লাহ পলাশ, স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটির পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের সভাপতি ড. কামরুজ্জামান মজুমদার, এফবিসিসিআই সাবেক সভাপতি ও দোকান মালিক সমিতির সভাপতি মো. হেলাল উদ্দিন, ঢাবির রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. আহসান হাবিব সানা, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক কামরুল ইসলাম প্রমুখ।


পিবিডি

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ১৬:২৩ | রবিবার, ৩১ মার্চ ২০১৯

Swadhindesh -স্বাধীনদেশ |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

এ বিভাগের আরও খবর

Advisory Editor
Professor Abdul Quadir Saleh
Editor
Advocate Md Obaydul Kabir
যোগাযোগ

Bangladesh : Moghbazar, Ramna, Dhaka -1217

ফোন : Europe Office: 560 Coventry Road, Small Heath, Birmingham, B10 0UN,

E-mail: news@swadhindesh.com, swadhindesh24@gmail.com