বুধবার ২৪শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১১ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

প্রথম রোজায় গ্যাস নেই, বিপাকে শিশু ও গৃহিণীরা

  |   রবিবার, ০৩ এপ্রিল ২০২২ | প্রিন্ট

প্রথম রোজায় গ্যাস নেই, বিপাকে শিশু ও গৃহিণীরা

রমজানের প্রথম দিনেই মারাত্বক গ্যাস সঙ্কটে পড়েছে রাজধানীবাসী। ইফতার তৈরিতে বিপাকে পড়েছে গৃহিণীরা। আগাম কোনো ঘোষণা ছাড়াই এভাবে গ্যাস না থাকায় সারাদিন রোজা রেখে ইফতার করতে পারেনি অনেক এলাকার বাসিন্ধারা। বিশেষকরে শিশুরা যারা রোজা রেখেছিল তাদের মধ্যে বেশি অস্থিরতা দেখা গেছে। গতকাল রোববার অনেকেই মোবাইল ফোনে গ্যাস নেই বলে অভিযোগ করেছেন। কোথাও থাকলেও তা এত কম ছিল যে পানি পর্যন্ত গরম করা সম্ভব হয়নি। রোববার ঢাকার মোহম্মদপুর, রায়েরবাজার, ধানমন্ডি, শংকর, কাঁঠালবাগান, কলাবাগান, রামপুরা, ওয়ারী, মগবাজার, বনশ্রী, গোপীবাগ, মিরপুর, ইস্কাটন, মানিকদিসহ অনেক এলাকায় গ্যাসের সংকট দেখা গেছে।

 

এদিকে পেট্রোবাংলা জানিয়েছে, দেশের বড় গ্যাসক্ষেত্রগুলোর মধ্যে বিবিয়ানা একটি। এ ক্ষেত্রের ছয়টি কূপ বন্ধ থাকায় হঠাৎ করেই এর প্রভাব পড়েছে ঢাকায়। এ সংকট কাটতে ১০ এপ্রিল পর্যন্ত সময় লাগবে বলে মনে করছেন পেট্রোবাংলার কর্মকর্তারা। এদিকে রামপুরা বনশ্রীর বাসিন্দা সালমা খাতুন জানান, দুপুর পর্যন্ত মোটামুটি গ্যাস ছিল। দুপুরের পর একেবারেই নেই। ইফতারের কিছুই রান্না করতে পারিনি। অবেলায় বাইরে থেকেও কিছু আনতে ইচ্ছা হচ্ছেনা। সারদিন রোজা রেখে একমাত্র মেয়ে দুর্বল হয়ে পড়েছে। তারজন্যও কোনো ইফতারি তৈরি করা সম্ভভ হয়নি।

ইস্কাটনের বাসিন্দা সাঈদা খানম জানান, সকাল থেকেই গ্যাসের চাপ কম। দুপুরের পর আরও কমে গেছে। ইফতারের কোনো আইটেম করা সম্ভভ হয়নি। একই অভিযোগ করেন মিরপুরের বাসিন্দা শরীফ। মেরাদিয়া-সিপাহীবাগ থেকে বিথী জানান, মোটেও গ্যাস নেই। চুলাই জ্বলছে না। তাই কোনো রান্না-বান্নাও নেই।

 

উত্তরা থেকে শাহাবুদ্দিন জানান, বাসা থেকে জানানো হলো গ্যাস নেই। ইফতারি হবে না। বাইরে থেকে কিছু কিনে আনবে। নাফিসা জানান, ‘কাল রাত থেকেই গ্যাস নেই। এখনও আসেনি। ইফতার বানাতে না পেরে দোকান থেকে কিনে এনেছি।’ একই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন মগবাজার, রায়েরবাজার, কলাবাগান, কাঁঠালবাগান, রামপুরা ও মিরপুর এলাকার বাসিন্দারা।

 

এদিকে রোববার দুপুরের দিকে বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো বিজ্ঞপ্তি এবং মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপুর ফেসবুক পেইজের একটি পোস্টে জানা গেছে, বিবিয়ানা গ্যাস ক্ষেত্রের জরুরি মেরামত ও সংরক্ষণ কাজের জন্য গ্যাস সরবরাহে ঘাটতিজনিত কারণে কিছু কিছু বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদনে বিঘ্ন ঘটছে। ফলে কোনও কোনও এলাকায় সাময়িকভাবে সরবরাহ ব্যাহত হতে পারে। এই অসুবিধার জন্য মন্ত্রণালয় আন্তরিক দুঃখ প্রকাশ করছে।

 

পেট্রোবাংলার সংশ্লিষ্ট একটি স্ত্রূ জানায়, বিবিয়ানার ছয়টি কূপ থেকে গত রাতে গ্যাস উত্তোলনের সময় বালি উঠতে শুরু করে। এ কারণে বন্ধ করে দিতে হয় উৎপাদন। এতে রাতে প্রায় ৪৫০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের সংকট দেখা দেয়। আবাসিক এলাকায় সাধারণত প্রায় ২৩০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করা হয়। এখন সেখানে সরবরাহ হচ্ছে ১৯০০ মিলিয়ন ঘনফুট। তবে পেট্রোবাংলার এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, হঠাৎ বিবিয়ানায় দুর্ঘটনা ঘটে গেছে। কিছুই করার ছিল না। আমরা পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছি। বিকাল নাগাদ একটি কূপ মেরামতের কাজ শেষ হয়েছে। আগামীকালের মধ্যে আরও তিনটি কূপ উৎপাদনে আসবে বলে আশা করছি। এতে সঙ্কট অনেকটায় কেটে যাবে।

 

এদিকে রোববার সন্ধা সাড়ে ৭টার দিকে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মীর মোহাম্মাদ আসলাম উদ্দিন জানিয়েছেন, শেভরন পরিচালিত বিবিয়ানা গ্যাস ফিল্ডে জরুরি রক্ষানাবেক্ষণের জন্য কোন কোন এলাকায় গ্যাসের স্বল্প চাপের সৃষ্টি হচ্ছে। অভিজ্ঞ প্রকৌশলীবৃন্দ ত্রুটি মেরামতের কাজ করে যাচ্ছেন। খুব দ্রুততম সময়ের মধ্যেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে আশা করা যাচ্ছে। গ্যাস সরবরাহে ঘাটতিজনিত কারণে কিছু কিছু বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বিদ্যুৎ উৎপাদনে বিঘ্ন ঘটছে। ফলে কোন কোন এলাকায় সাময়িকভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যাহত হতে পারে। সাময়িক এই অসিুবিধার জন্য বিদ্যুৎ বিভাগ আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছে। সূএ: আমাদের সময় ডটকম

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ১৬:৪৪ | রবিবার, ০৩ এপ্রিল ২০২২

Swadhindesh -স্বাধীনদেশ |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement
Advisory Editor
Professor Abdul Quadir Saleh
Editor
Advocate Md Obaydul Kabir
যোগাযোগ

Bangladesh : Moghbazar, Ramna, Dhaka -1217

ফোন : Europe Office: 560 Coventry Road, Small Heath, Birmingham, B10 0UN,

E-mail: news@swadhindesh.com, swadhindesh24@gmail.com