নিজস্ব প্রতিনিধি,পেকুয়া : কক্সবাজারের পেকুয়ায় এক হাতুড়ে ডাক্তারের ভূল চিকিৎসায় হাসপাতালের বেডে পাঞ্জার সাথে লড়ছে কাউসারা বেগম (৩৫) নামের এক গৃহবধূ। সে উপজেলার বারবাকিয়া ইউনিয়নের ভারুয়াখালী এলাকার মো.পারভেজের স্ত্রী। জানা যায়, পেকুয়ার বারবাকিয়া ইউনিয়নের নোয়াখালী ব্রীজ সংলগ্ন এলাকায় অনূকূল ফার্মেসী নামক এক চেম্বার খুলে রোগী দেখেন গৌতম কুমার চৌধুরী নামের এক পল্লী চিকিৎসক। চেম্বারের সামনে ঝুলিয়ে দেন গৌতম কুমার চৌধুরী নামের একটি সাইনবোর্ডও। নামের নিচে লিখেছেন নানা ডিগ্রীও এবং নানা রোগের অভিজ্ঞ।
রোগীদের কে চিকিৎসা সেবার পাশাপাশি একই চেম্বারে এলুপ্যাথিক ওষুধ ও হোমিওপ্যাথিক ওষুধ বিক্রি করেন।যেনও এটি একটি ওষুধের দোকান। ওই দোকানে যদিবা সে সুকৌশলে হোমিওপ্যাথিক ওষুধ গুলো একটি টেবিলের ড্রায়ারে রক্ষিত রেখে রোগিদেরকে বিক্রি করে। এছাড়াও করেন থেরাপি এবং করেন নানান রোগের পরীক্ষা নিরীক্ষাও। অল্প মেডিকেল সার্জারির সরঞ্জাম নিয়ে সাধারণ মানুষকে আকর্ষণ করতে বেশ নেন যেন বড় ডিগ্রিধারী ডাক্তার। এতে করে বারবাকিয়া ইউনিয়ন এলাকার আশে পাশের অসংখ্য রোগীরা তার প্রতারণার শিকার হচ্ছে। এধরণের ভূল চিকিৎসা দিয়ে মানুষের কাছ থেকে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। কিন্তু এসব কিছুর পিছনে নেই কোন ডিগ্রীর বৈধ সনদপত্র কিংবা প্রয়োজনীয় অনুমতি পত্র। নেই ওষুধের দোকানের বৈধ কাগজপত্র।
এদিকে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে গৃহবধূ কাউসারা বেগমের ভাই শাহাদাত হোসেন বলেন, আমার বোনের শরীরে বাত রোগ নিয়ে গত ২২ মে বারবাকিয়া ইউনিয়নের নোয়াখালী ব্রীজ সংলগ্ন অনূকূল ফার্মেসীর পল্লী চিকিৎসক গৌতম কুমার চৌধুরীর কাছে গিয়েছিল। ওই ভূয়া ডাক্তার সে আমার বোনকে দেখে ১১ টি ওষুধ লিখে একটি পরামর্শপত্র দেন। আমার বোন সেই ওষুধ সেবন করে রোগ মুক্তি হওয়ার তো দূরের কথা দিন দিন আরো অবনতি হয়ে আমার বোনের পা উল্টো ফুলে গিয়ে হাঁটাচলা অচল হয়ে যায়।
এ অবস্থায় আমার বোনকে পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হলে হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক আমার বোনের পা কেটে পেলার মত পরামর্শ দেন এবং উন্নত চিকিৎসার জন্য চমেকে প্রেরণ করে। আমার বোন জানে না সে যে ভূয়া ডাক্তার। এ বিষয়ে ডাক্তারের ভুল চিকিৎসার প্রতিবাদ করলে স্থানীয় কিছু লোকজনের সহায়তায় উল্টো গালিগালাজ করে পরিণতি খারাপ হবে বলে হুমকি দেয়। ওই ভুয়া ডাক্তার এলাকায় মানুষের সাথে প্রতারণা করে যাচ্ছেন বলে একাধিক অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এদিকে এক দোকানে এলুপ্যাথিক ও হোমিওপ্যাথিক রাখা ও রোগীদের চিকিৎসা দেওয়ার বিধান না থাকলেও কথিত এ ভূয়া ডাক্তার এসব করে যাচ্ছেন আইনকে বৃদ্ধ আঙুলী দেখিয়ে। তার জন্য এসব আইন কোনকিছুই না এসব কিছু তোয়াক্কা করে না সে। এ দিকে এ ঘটনায় আহত গৃহবধূর বড় ভাই শাহাদাত হোসেন বাদী হয়ে পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা বরাবরে লিখিত অভিযোগ দেওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছেন বলে জানান।
এ বিষয়ে জানতে পল্লী চিকিৎসক গৌতম কুমার চৌধুরীর সাথে যোগাযোগ করা হলে সে কোন ধরনের মন্তব্য করেননি। এ ব্যাপারে জানতে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (টিএইচ ইউ) ডা: মো.মহিউদ্দিন মাজেদ চৌধুরী বলেন, এ ধরনের একটি অভিযোগ শুনেছি শীঘ্রই এসব ভুয়া ডাক্তারের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করা হবে।
Like this:
Like Loading...
Related