| মঙ্গলবার, ০২ মে ২০১৭ | প্রিন্ট
বিশেষ প্রতিবেদক : পুলিশের সহায়তায় চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড এলাকায় জঙ্গল সলিমপুরে নির্বিচারে পাহাড় নিধন করছে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। শুধু পাহাড় নয় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান সর্বসাধারণ মালিকাধীন সম্পত্তি ও দখল করছে পাহাড় কাটার সুযোগে। এক্ষেত্রে তারা সরকারের নির্মাণাধীন একটি সড়ককে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
সরেজমিনে অনুসন্ধান ও বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে সীতাকুণ্ডের জঙ্গল সলিমপুর এলাকায় কালু শাহ মাঝার হইতে বায়েজিত বোস্তামী থানার বাংলাবাজার এলাকা পর্যন্ত নির্মাণাধীন ৬ কিলোমিটার রাস্তাকে ঘিরে এ পাহাড় উজাড়ের মহোৎসব চলছে। সরকারি নকশা অনুযায়ী রাস্তাটি ১২০ ফিটের। এই ১২০ ফিটের জন্য পাহাড় কাটার অনুমোদন থাকলেও ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটি ১৩/১৪ শত ফুটের মত পাহাড় উজাড় করে পুরো উজাড়কৃত সম্পত্তি ঘেরাও করে নিজেদের সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে রাখছে। সরেজমিনে দেখা গেছে, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান স্পেক্ট্রা ইঞ্জিনিয়ার্স লিঃ ঠিকাদারী পাওয়ার সুবাধে সরকারি পাহাড়ের পাশাপাশি ব্যক্তি মালিকাধীন পাহাড় দখল করছে।
একটি সূত্রে জানা গেছে, বিএস ৩৫৮ দাগে স্পেক্ট্রা ইঞ্জিনিয়ার্স লিঃ ৩৫কানি ৩৫ শতক সম্পত্তি কিনে এই সম্পত্তির আশপাশে বিভিন্ন মালিকের প্রায় ৮০ কানি সম্পত্তি দখলে নিয়ে যেতে চাইলে গত ২৬ এপ্রিল মালিক পক্ষ এবং এলাকাবাসীর সাথে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের ভাড়াটে সন্ত্রাসীদের সংঘর্ষ বাধে। এই সংঘর্ষে ৩ জন গুলিবিদ্ধ হয়। জানা গেছে, নির্বিচারে পাহাড় উজাড় এবং ব্যক্তি মালিকানাধীন সম্পত্তি দখলে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে সরাসরি সহায়তা দিয়ে আসছেন সীতাকুণ্ড থানার ওসি ইফতেখার হাসান। স্থানীয় সূত্র মতে ৪ বছরেরও অধিক সময় এ ওসি সীতাকুণ্ড থানায় কর্মরত। এই জঙ্গল সলিমপুর কেন্দ্রিক বিভিন্ন অনৈতিক কর্ম বন্ধে তিনি কোন কার্যকরি ভূমিকা রাখেন না। উল্টো নিরীহ ও প্রকৃত জমির মালিকদের হয়রানি করে বিভিন্ন মিথ্যা মামলায় জড়াচ্ছেন।
জানা গেছে ২৬ এপ্রিল ঘটনায় স্থানীয় দৈনিক আজাদীকে দেওয়া বক্তব্যে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের অফিসার নাসির উদ্দিন কামাল সবুজ লিটনের নেতৃত্বে হামলা হয়েছে বলে দাবি করলেও সে বাদী হয়ে সীতাকুণ্ড থানায় যে মামলা দায়ের করেছে তাতে প্রধান আসামী করা হয় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের দখলকৃত সম্পত্তির পাশের সম্পত্তির মালিক মোঃ নাসির উদ্দিনকে। এ নাসির উদ্দিনকে বিভিন্ন সময় ওসি থানায় আসতে বললে নাসির উদ্দিন তা পাত্তা দেননি। কোন কাজ না থাকায় তিনি থানাতে যাননি। এতে প্রতিশোধ পরায়ণ হয়ে ওসির পরামর্শে নাসির উদ্দিন, লিয়াকত আলীসহ একাধিক ভূমির মালিককে আসামী করে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান সূত্র মতে দীর্ঘদিন এ থানার সুবাধে ওসি ইফতেখার হাসান থানা এলাকায় একটি সিন্ডিকেট গড়ে তোলে রামরাজত্ব কায়েম করে যাচ্ছে। জানা গেছে, ওসি ইফতেখার হাসান স্থানীয় সংসদ সদস্যকে পাত্তা দেন না।
অভিযোগ উঠেছে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান সরকারি নীতিমালার বাহিরে ব্যক্তি মালিকানাধীন সম্পত্তি দখল করতে গেলে জমির মালিকরা বাধা দিতে পারেন না। বাধা দিতে গেলেই সীতাকুণ্ড পুলিশ তাৎক্ষণিক এসে নিরীহ মালিকদের হয়রানী করে। স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন ওসি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের ক্রীড়নক হয়ে সরকারি এবং ব্যক্তি মালিকানাধীন সম্পত্তি দখলে সহায়তা দিয়ে আসছেন। স্থানীয়রা অনতিবিলম্বে ওসি ইফতেখারকে প্রত্যাহার করে সরকারি ও ব্যক্তি মালিকানাধীন সম্পত্তি রক্ষার্থে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।
Posted ১৬:৫৪ | মঙ্গলবার, ০২ মে ২০১৭
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | admin