| মঙ্গলবার, ২৫ মে ২০২১ | প্রিন্ট
কূটনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী পাকিস্তানকে ক্ষমা করার বিষয়ে যে বক্তব্য দিয়েছেন তার সমালোচনা করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বলেছেন, জাফরুল্লাহ চৌধুরীর এ ধরনের বক্তব্য কোনোভাবে কাম্য নয়। এই পুরো বক্তব্য বিএনপি অন্তর্গত।
মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবে বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট আয়োজিত বীর মুক্তিযোদ্ধা দেশবরেণ্য সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব সারাহ বেগম কবরী স্মরণে আয়োজিত আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
গতকাল ঢাকায় এক আলোচনা সভায় প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেছিলেন, ‘আপনি যদি ইতিহাসের অন্তর্ভুক্ত হতে চান, তবে সবচেয়ে কঠিন যে কাজটি করতে হবে তা হলো কূটনৈতিক তৎপরতা। কূটনৈতিক তৎপরতা চালাতে হলে আমাদের ছোটখাটো সব ভুল-ভ্রান্তি ভুলে যেতে হবে। পাকিস্তানিরা আমাদের ওপর যে অন্যায় করেছিল তার জন্য তাদেরকে ক্ষমা করে দিয়ে তাদেরসহ তুরস্ক, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া সবাইকে নিয়ে কূটনৈতিক তৎপরতা চালাতে হবে। আর আমাদের এখান থেকে ১০ হাজার সামরিক জনবল ফিলিস্তিনিতে পাঠাতে হবে।’
১৯৭১ সালে নিরীহ বাঙালির উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে পাকিস্তান যেভাবে বাঙালিকে হত্যা করেছে সেজন্য বাংলাদেশের কাছে পাকিস্তানের ক্ষমা চাওয়া উচিত মন্তব্য করে আওয়ামী লীগ নেতা হাছান মাহমুদ বলেছেন, আমরা ক্ষমা চাইতে বলছি। কিন্তু গতকাল ড. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেছেন পাকিস্তানকে ক্ষমা করে দিতে। এ ধরনের বক্তব্য কোনোভাবে কাম্য নয়। এই পুরো বক্তব্য বিএনপি অন্তর্গত।
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা এবং ট্রাস্টি জাফরুল্লাহ চৌধুরীর সমালোচনা করে হাছান মাহমুদ বলেন, আমরা দাবি জানাচ্ছি পাকিস্তান বাংলাদেশের কাছে ক্ষমা চাইবে। কিন্তু জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলছেন পাকিস্তানকে ক্ষমা করে দিতে। এই পুরো বক্তব্যটা বিএনপি অন্তর্গত। এ ধরনের বক্তব্যের তীব্র নিন্দা জানাই। আমরা আশা করি পাকিস্তান বাংলাদেশের কাছে ক্ষমা চাইবে। ১৯৭১ সালে বাঙালি জাতির সঙ্গে পাকিস্তান যে অন্যায় করেছে সে অন্যায়ের জন্য পাকিস্তানের ক্ষমা চাওয়া উচিত।
আওয়ামী লীগের এই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমাদের সংস্কৃতির ওপর বিভিন্নভাবে আঘাত আসছে। আমরা যেন আমাদের জাতীয় সংস্কৃতিতে গা ভাসিয়ে না দেই। আমাদের সংস্কৃতি লালন করি এবং ঊর্ধ্বে তুলে ধরি। অনেক সময় দেখা যায় রবীন্দ্র সংগীত ব্যান্ডের গানের তালে বাজানো হয়। এই মিশ্র সংস্কৃতি থেকে আমাদের বাঙালির সংস্কৃতিকে উদ্ধার করতে হবে, লালন করতে হবে। বাঙালিরা ধনী না হতে পারে, তবে সংস্কৃতির দিক দিয়ে বিশ্বের মধ্যে একটি ধনী জাতি।
করোনায় স্বাস্থ্যবিধি মানার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করে হাছান মাহমুদ বলেন, করোনার ভয়াবহ রুপকে মোকাবিলা করতে হবে। তাই করোনার মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি মানায় উদাসীন হওয়া যাবে না। এতে বিপদ বাড়তে পারে। যেভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা দরকার তা অনেকেই মানছেন না।
সারাহ বেগম কবরীকে স্মরণ করে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, আজীবন বঙ্গবন্ধুর চেতনাকে বুকে ধারণ করেছেন কবরী। আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পেয়ে এমপি হয়েছেন। এতো স্বল্প সময় চলে যাবেন ভাবতে পারিনি। তিনি একজন কর্মঠ ব্যক্তি ছিলেন। কবরী শুধু একজন অভিনয় শিল্পী ছিলেন না, আওয়ামী লীগের একজন দক্ষ কর্মীও ছিলেন। সারাজীবন মুক্তিযদ্ধের চেতনাকে ধারণ করেছেন।
বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের সিনিয়র সহ-সভাপতি রফিকুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন-তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান এমপি, আওয়ামী লীগের উপপ্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন ও ঢাকা দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ প্রমুখ।
Posted ২২:১১ | মঙ্গলবার, ২৫ মে ২০২১
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | Athar Hossain