শনিবার ২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নারায়ণগঞ্জে বিভিন্ন দলের অর্ধশতাধিক প্রার্থীর মনোনয়নপত্র দাখিল

  |   বৃহস্পতিবার, ২৯ নভেম্বর ২০১৮ | প্রিন্ট

নারায়ণগঞ্জে বিভিন্ন দলের অর্ধশতাধিক প্রার্থীর মনোনয়নপত্র দাখিল

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে নারায়ণগঞ্জে পাঁচটি আসনে আওয়ামী লীগ-বিএনপি-জাতীয় পার্টি, বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থীসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রার্থীরা উৎসবমুখর পরিবেশে নির্বাচনী আচরণবিধি মেনে শান্তিপূর্ণভাবে তাদের মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন।

মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার শেষ দিন ২৮ নভেম্বর বুধবার দুপুর বারোটা থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক রাব্বী মিয়া এবং বিভিন্ন বিভিন্ন উপজেলার সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা (ইউএন) তাদের কার্যালয়ে এসে মনোনয়নপত্র দাখিল করেন প্রার্থীরা। জেলার পাঁচটি সংসদীয় আসনে মধ্যে নারায়ণগঞ্জ ৩ সোনারগাঁ ও নারায়ণগঞ্জ ৪ (ফতুল্লা -সিদ্ধিরঞ্জের) আওয়ামী লীগ, বিএনপি-জাতীয় পার্টি, বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থীসহ অর্ধশতাধিক প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন।

নারায়ণগঞ্জ-১ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দেন (রূপগঞ্জ) আওয়ামীলীগ দলীয় প্রার্থী বর্তমান সাংসদ গোলাম দস্তগীর গাজী বীর প্রতীক, বিএনপি দলীয় প্রার্থী জেলা বিএনপির সভাপতি কাজী মনিরুজ্জামান মনির, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক সভাপতি তৈমুর আলম খন্দকার, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য মুস্তাফিজুর রহমান ভুইয়া দিপু, সিপিবি দলীয় প্রার্থী মঞ্জুরুল ইসলাম চন্দন, স্বতন্ত্র হিসেবে হাবিবুর রহমান ও রেহান আফজাল।

নারায়ণগঞ্জ-২(আড়াইহাজার) আসনে মনোনয়নপত্র জমা দেন আওয়ামীলীগ দলীয় প্রার্থী বর্তমান সাংসদ নজরুল ইসলাম বাবু, বিএনপি দলীয় প্রার্থী সাবেক সাংসদ আতাউর রহমান আঙ্গুর, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ আর্ন্তজাতিক বিষয়ক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদ, উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহমুদুর রহমান সুমন, সিপিবির জেলা কমিটির সভাপতি হাফিজুল ইসলাম, স্বতন্ত্র প্রার্থী একেএম আবু হানিফ হৃদয়, জাকের পার্টির মুরাদ হোসেন জামাল, ইসলামী আন্দোলনের নাসির উদ্দিন।

নারায়ণগঞ্জ-৩(সোনারগাঁ) আসনে মনোনয়নপত্র জমা দেন জাতীয়পার্টি দলীয় প্রার্থী সাংসদ লিয়াকত হোসেন খোকা, আওয়ামী লীগ নেতা ইঞ্জিনিয়ার শফিকুল ইসলাম মনোনয়নপত্র জমা দেন। বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আজহারুল ইসলাম মান্নান, স্বতন্ত্র সোনারগাঁও বিএনরি সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী নজরুল ইসলাম টিটু, বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের প্রার্থী মজিবুর রহমান মানিক, স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগ নেতা সাবেক সাংসদ আব্দুল্লাহ আল কায়সার, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও আওয়ামীলীগ নেতা মোশাররফ হোসেন, কেন্দ্রীয় কমিটি মহিলা পার্টির সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি অনন্যা হোসেইন মৌসুমী, সিপিবির আব্দুস সালাম বাবুল, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী মাওলানা সানাউল্লাহ নূরী, গণফ্রন্টের প্রার্থী সিরাজুল হক।

নারায়ণগঞ্জ-৪(ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ) আসনে মনোনয়নপত্র জমা দেন আওয়ামীলীগ দলীয় মনোনীত প্রার্থী বর্তমান সাংসদ শামীম ওসমান, ৭৪টি শ্রমিক ইউনিয়নের প্রধান সমন্বয়ক ও আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী স্বতন্ত্র জাতীয় শ্রমিকলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির শ্রমিক উন্নয়ন ও কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক ও ফতুল্লা আঞ্চলিক শ্রমিক লীগের সভাপতি কাউসার আহম্মেদ পলাশ, বিএনপি দলীয় প্রার্থী জেলা বিএনপির জৈষ্ঠ্য সহ-সভাপতি মোহাম্মদ শাহ্ আলম, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মামুন মাহমুদ, বিএনপির বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক সাংসদ মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন ও তার ছেলে গোলাম মুহাম্মদ কায়সার, জাতীয় পার্টির যুগ্ম মহাসচিব সালাউদ্দিন খোকা, বাসদের সেলিম মাহমুদ, সিপিবির ইকবাল হোসেন, জমিয়তে ইসলামীর দলীয় প্রার্থী মুফতি মনির হোসেন কাশেমী, কৃষক-শ্রমিক- জনতা লীগের শফিকুল ইসলাম দেলোয়ার, বিপ্লবী ওয়ার্কাস পার্টির মাহমুদ হোসেন, ইসলামী আন্দোলনের শফিকুল ইসলাম, বাংলাদেশ ওয়ার্কাস পার্টির হিমাংশু সাহা, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির মো: ওয়াজি উল্লাহ মাতব্বর অজু।

নারায়ণগঞ্জ-৫(শহর-বন্দর) আসনে জাতীয় পার্টি দলীয় প্রার্থী বর্তমান সাংসদ এ কেএম সেলিম ওসমান, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী নাগরিক ঐক্যের উপদেষ্টা সাবেক সাংসদ এসএম আকরাম, বিএনপি দলীয় প্রার্থী সাবেক সাংসদ মহানগর বিএনপির সভাপতি আবুল কালাম, মহানগর যুবদলেরর আহবায়ক ও সিটি করপোরেশনের ১৩ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ, সাম্যবাদী দলের কমরেড সাঈদ আহম্মেদ, বাসদের আবু নাঈম খান বিপ্লব, সিপিবির কেন্দ্রীয় নেতা মন্টু চন্দ্র ঘোষ, ইসলামী ফ্রন্ট বাংলাদেশের চেয়ারম্যান আল্লামা বাহাদুর শাহ্ মুজাদ্দেদী, জাকের পার্টির হাসান জামাল, কল্যান পার্টির মেজর(অব.) আফতাব, ইসলামী আন্দোলনের আবুল কালাম, খেলাফত মজলিশের হাফেজ মো: কবির হোসেন, মনোনয়নপত্র দাখিল করেন।

মনোনয়নপত্র দাখিল করার সময় সময় বিভিন্ন প্রার্থীদের সঙ্গে নেতাকর্মীরা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে ভীড় করেন।

উল্লেখ্য, মনোনয়ন প্রত্যাহার ৯ ডিসেম্বর, মনোনয়ন যাচাই বাচাই ২ ডিসেম্বর, প্রচার প্রচারনা ১০ ডিসেম্বর থেকে ২৯ ডিসেম্বর এবং নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ৩০ ডিসেম্বর।

জেলার পাঁচটি আসনে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টি থেকে তাদের প্রার্থী চূড়ান্ত হলেও বিএনপি থেকে প্রতিটি আসনে দুই বা তিনজন করে প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। তবে বিএনপির প্রার্থীরা মনে করছেন, শেষ পর্যন্ত দল যাকেই প্রার্থী হিসেবে মনোনীত করবে সবাই তৃণমূল পর্যায় থেকে সম্মিলিতভাবে তার পক্ষেই কাজ করবেন। এ ক্ষেত্রে কারো কোন দ্বিমত থাকবে না এবং নির্বাচনেও এর কোন প্রভাব পড়বে না। জেলার বিএনপির প্রার্থীরা এখনো লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড বা নির্বাচনের জন্য সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরী হয়নি বলেও অভিযোগ করেন।

নারায়ণগঞ্জ ১ রুপগঞ্জ আসনের প্রাথী বিএনপির প্রার্থী কাজী মনিরুজ্জামান মনির বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে কারামুক্ত করতে এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়াকে দেশে ফিরিয়ে আনতে আন্দোলনর অংশ হিসেবে তিনি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বলে জানান।

বিএনপির আরেক প্রার্থী মো: শাহ আলম বলেন, নির্বাচনের লেভল প্লেই ফিল্ড এখনা তৈরি হয়নি। তার পরও তারা নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। মানুষ যদি ভোট কেন্দ্রে যেতে পারে তবে , স্বাধীন ভাবে ভোট প্রদান করত পারে তবে বিএনপির বিজয় হবে।

আড়াই হাজারে বিএনপির প্রার্থী নজরুল ইসলাম আজাদ বলেন, আইনশৃংখলা বাহিনী এখনো সরকার দলীয় নেতা সাংসদের কমান্ডেই চলছে। নির্বাচন কমিশন যে কথা দিয়েছে তা বাস্তবে মিল নেই। বিরোধী দল বিএনপির নেতা কর্মীদের এখনো গ্রেফতার, হয়রানি চলছে। নির্বাচনের লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডের ব্যাপারে সরকার যা দাবী করছে বাস্তবে তা দেখা যাচ্ছে না। সেই পরিবেশ এখনো সৃষ্টি হয় নি। তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, নির্বাচন কমিশন অবশ্যই সুষ্ঠু পরিবেশ সৃষ্টি করেই নির্বাচন সম্পন্ন করবে। আর সুষ্ঠু নির্বাচন হলে জনগণ বিএনপিকেই বিপুল ভোটে বিজয়ী করবে বলে তিনি মনে করেন।

তবে নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রয়েছে দাবী করে নারায়ণগঞ্জ চার আসনের সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী এ কে এম শামীম ওসমান বলেন, বিএনপি আদৌ নির্বাচনে অংশ নিবে কিনা সে ব্যাপারে এখনো সন্দেহ রয়েছে। স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি জামায়াতকে সঙ্গে নিয়ে সুশীল সমাজের প্রতিনিধি ডক্টর কামলা হোসেনের নেতৃত্বে দুনীতিবাজ দল বিএনপি সাকে ঐক্য করে যেভাবে নির্বাচনে অংশ নিতে যাচ্ছেন তাতে জাতি আজ লজ্জিত বলে মনে করছেন ক্ষমতাসীন দলের নেতা এ কে এম শামীম ওসমান।

তিনি বলেন, আমার এক বন্ধু গত রাতে ফোন করে আমাকে বলেছে, স্বধীনতা যুদ্ধে তার মা ধর্ষিত হয়েছে, বাবা শহীদ হয়েছে। কিন্তু এই নির্বাচনে স্বাধীনতা বিরোধীদের সাথে নিয়ে যে ঐকৗ হয়েছে তাতে করে আমার বাবা ও মায়ের রক্তের কোন দাম রইলনো। আগামী নির্বাচনে শেখ হাসিনার নের্তৃত্বে আওয়ামী লীগ আবারো বিজয় লাভ করবে বলে তিনি শতভাগ আশাবাদ প্রকাশ করেন।

নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য ও জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী এ কে এম সেলিম ওসমান বলেন, বর্তমানে নির্বাচনের খুব সুন্দর পরিবেশ বজায় রয়েছে। বিএনপি ও বাম জোট দলগুলোর প্রার্থীরা স্বত:স্ফুর্তভাবে যেভাবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন, তাতেউ প্রমান হয় যে নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ রয়েছে। তিনি াাগামী ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচন সুষ্ঠু শান্তিপূর্ণভাবেই সম্পন্ন হবে বলে আশা প্রকাশ করেন।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ১৭:৩৪ | বৃহস্পতিবার, ২৯ নভেম্বর ২০১৮

Swadhindesh -স্বাধীনদেশ |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement
Advisory Editor
Professor Abdul Quadir Saleh
Editor
Advocate Md Obaydul Kabir
যোগাযোগ

Bangladesh : Moghbazar, Ramna, Dhaka -1217

ফোন : Europe Office: 560 Coventry Road, Small Heath, Birmingham, B10 0UN,

E-mail: news@swadhindesh.com, swadhindesh24@gmail.com